Inqilab Logo

শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

লাইসেন্স ফি অর্ধেক কমিয়ে ১০ কোটি টাকা

এমএনপি নীতিমালায় সংশোধন

| প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ফারুক হোসাইন : মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) সেবা চালুর জন্য এ্যাকুইজিশন ফি অর্ধেক কমিয়ে ১০ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। কমিশনের সর্বশেষ সভায় এমএনপি’র সংশোধিত নীতিমালায় লাইসেন্স এ্যাকুইজিশন ফি পূর্বের নির্ধারিত ২০ কোটি টাকার বদলে ১০ কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। একইসাথে নিলামের মাধ্যমে এমএনপি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের পরিবর্তে বিডিং (বিউটি কনটেস্ট) পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নির্বাচনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি হলো গ্রাহকের ব্যবহৃত নম্বরটি অপরিবর্তিত রেখে অন্য যে কোন অপারেটরের সুবিধা গ্রহণ করার সুযোগ।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, এমএনপি সেবা চালু করা এবং নিলাম অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য গতবছর নীতিমালা তৈরি এবং প্রস্তুতি গ্রহণ করে কমিশন। কিন্তু গতবছর ৪ ডিসেম্বর এমএনপি সেবার নীতিমালা সংশোধন ও নিলাম বাতিল করার জন্য বিটিআরসিকে চিঠি দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠির প্রেক্ষিতে নিলাম অনুষ্ঠান বাতিল ও নীতিমালায় ২৫টি ক্লজে (ধারায়) সংশোধনী আনা হয় এবং নতুন ৪টি ক্লজ সন্নিবেশিত (যুক্ত) করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারে সিদ্ধান্তে নিলাম প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে বিটিআরসি। শুধু নিলাম বাতিলই নয়, বরং নিলামের পরিবর্তে বিডিং (বিউটি কনটেস্ট) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমএনপি লাইসেন্স ইস্যু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে অনুযায়ী বিটিআরসি আগের নীতিমালার পরিবর্তে নতুন করে করে নীতিমালা তৈরী করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে গত বছর এমএনপি লাইসেন্স নিলামে অংশ নিতে যেসব প্রতিষ্ঠান বিড আর্নেস্ট মানি বা নিরাপত্তা জামানতের টাকাসহ অন্যান্য ফি জমা দিয়েছিল, তাও ফেরত দেয়া হয়। সংশোধিত নীতিমালায় এমএনপি লাইসেন্স এ্যাকুইজিশন ফি পূর্বের ২০ কোটি টাকার পরিবর্তে ১০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া বাৎসরিক লাইসেন্স ফি ২৫ লাখ টাকা, সেবা চালুর দ্বিতীয় বছর থেকে রাজস্ব ভাগাভাগি ১৫ শতাংশ, সিকিউরিটি মানি ১ কোটি টাকা, ব্যাংক গ্যারেন্টি ১০ কোটি টাকা, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে ১ শতাংশ অর্থ জমাদানের বিষয়টি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সংশোধিত নীতিমালাটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় অনুমোদনের জন্য অর্থ বিভাগে পাঠিয়েছে। অর্থ বিভাগের অনুমোদন পেলে সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে আবারও নতুন করে এমএনপি সেবা চালু করার জন্য দরপত্র আহŸান করবে বিটিআরসি। কমিশন ও মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নীতিমালা সংশোধনের বিষয়ে জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে নীতিমালায় সংশোধন আনা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, এমএনপির সংশোধিত নীতিমালাটি অর্থবিভাগে পাঠানো হয়েছে। অর্থবিভাগ থেকে অনুমোদনের পর তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। কারণ বর্তমান নীতিমালাটিও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন করা। এ ছাড়া এর সঙ্গে যেহেতু আর্থিক বিষয়াদি যোগ আছে সেহেতু অর্থ মন্ত্রণালয়েরও অনুমোদন প্রয়োজন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনের পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, গ্রাহকের সুবিধার্থে দ্রুত এই সেবা চালু করা হবে। অপারেটরগুলোও প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে। এতে সেবার গুণগতমান আরো বাড়বে। সার্বিকভাবে উপকৃত হবে গ্রাহকরা।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, এই প্রযুক্তি চালু করার ব্যাপারে প্রযুক্তিগতভাবে অনেক দূর এগিয়েছেন তারা। দ্রুতই এই সেবা চালু করা সম্ভব হবে। এর ফলে মোবাইল ফোনের গ্রাহকরা নম্বার অপরিবর্তিত রেখে যে কোন অপারেটরের সেবা গ্রহণ করতে পারবেন তারা। এর ফলে গ্রাহকদেরকে আর কোন একক অপারেটরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে না। তাদের কোন অপারেট সেবা পছন্দ না হলে অন্য অপারেটরে চলে যেতে পারবে। বর্তমানে একই নাম্বারে কোন গ্রাহক যে অপারেটেরের সেবা গ্রহণ করেন কোন কারণে সেই অপারেটরের পরিবর্তে অন্য অপারেটরের সেবা নেয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু গ্রাহকদের সুবিধার জন্য এই প্রযুক্তিটিই চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার।
সূত্র জানায়, এই পদ্ধতি চালু হলে গ্রাহককে শুধু একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠাতে হবে। এতে উল্লেখ করতে হবে কোন অপারেটরের কোন প্যাকেজটি গ্রাহক গ্রহণ করবে। এগুলো একটি কোডের মাধ্যমে জানাতে হবে। এখন এই কোডগুলো তৈরির কাজ চলছে। এগুলো পরিচালনা করবে এমএনপি অপারেটর হিসেবে লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠান। এই ধরেেনর অপারেটর পরিবর্তন করতে হলে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রাহককে ৩০ টাকা ফি দিতে হবে। একই সঙ্গে গ্রাহক যে অপারেটরে পরিবর্তিত হলো সেই সেবাটি কমপক্ষে ৪০ দিন নিতে হবে। গ্রাহক ইচ্ছে করলে এর পরে আবার একই প্রক্রিয়ায় অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবে।
বর্তমানে বিশ্বের ৭১টি দেশে এ সুবিধা চালু রয়েছে। প্রতিবেশি দেশ ভারতে ২০১১ সালে চালু করা হয়েছে এ  সেবা। পাকিস্তানে চালু আছে ২০০৭ সাল থেকে। অন্যান্য দেশগুলোতে বিভিন্ন সময়ে এই সেবা চালু হয়েছে।




 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ