পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য সুখবর। তাদের বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। অর্থ-বছরের শেষ অংশে টাকা পেল বঙ্গবন্ধু রেল সেতু প্রকল্প। বরাদ্দ পেয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সঙ্গে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ প্রকল্প। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রেলওয়ের উন্নয়নকে আরও গতিশীল করে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মন জয় করতে চায় সরকার। এ কারণেই চলতি অর্থ-বছরের মূল বাজেটে এই দুই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ দেয়া না হলেও শেষাংশে এসে সরকার রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রকল্পে বরাদ্দ দিয়েছে। আগামী ২০১৭-১৮ অর্থ-বছরে এই দুটি প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান হবে। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলকে গণমানুষের বাহন করতে বদ্ধপরিকর। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এলেই রেলওয়ের উন্নয়ন হয়। এখন যত উন্নয়ন হচ্ছে সবকিছু তাঁরই অবদান। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী দুই বছরের মধ্যে রেলওয়ের উন্নয়ন আরও দৃশ্যমান হবে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে রেল লাইন সংযোগ হবে চীনের অর্থায়নে। আর বঙ্গবন্ধু প্যারালাল রেল সেতু হবে জাইকার অর্থায়নে। খুব শিগগিরই পদ্মা সেতুর রেল লাইনের জন্য চীনের সাথে ঋণচুক্তি হবে। আর বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ হয়ে গেছে। অতি তাড়াতাড়ি মূল সেতুর কাজের জন্য টেন্ডার আহŸান করা হবে। মুজিবুল হক এমপি বলেন, উদ্বোধনের দিন থেকেই পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলবেÑ এমন টার্গেট নিয়ে আমরা এগুচ্ছি। আর বঙ্গবন্ধু রেল সেতু পুরোপুরি শেষ করতে চার বছর সময় লাগবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ-বছরের শেষাংশে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪০৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য। অন্যদিকে, আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ প্রকল্পেও চলতি অর্থ-বছরের মূল বাজেটে কোনো বরাদ্দ ছিল না। সংশোধিত বাজেটে এ প্রকল্পে ৬৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ রেল সংযোগের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য ও সেবা আনা-নেয়া সহজ হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে সংশোধিত বাজেটে। এছাড়া বরাদ্দ কমানো হয়েছে তিনটি প্রকল্পে। সেগুলো হলো পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহু লেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্প।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু এবং ফরিদপুর-বরিশাল-পায়রা রেল সংযোগ প্রকল্পে প্রথমবারের মতো অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে চলতি ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরের সংশোধিত বাজেটে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪০৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বর্তমানে যমুনা নদীর ওপর থাকা বঙ্গবন্ধু সেতুর উত্তর পাশ দিয়ে ট্রেন চলাচল করে। সেতুর এক পাশ দিয়ে ট্রেনের মতো ভারী যান চলাচল করায় সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা থেকে এই নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে সরকার। তবে এত দিন এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো বরাদ্দ ছিল না। অপরদিকে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙা পর্যন্ত। ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করতে সরকার যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে তার নকশা প্রণয়ন, দরপত্র দলিল প্রস্তুতসহ রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সংশোধিত বাজেটে। গত ১ এপ্রিল এ দুটি প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী অর্থ-বছরে ওই দুটি প্রকল্পে বাড়তি অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে চায় সরকার। ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ হলে এখন পাটুরিয়া ঘাট ব্যবহার করে দক্ষিণাঞ্চলের যেসব মানুষ যাতায়াত করে, তারাও পাটুরিয়া থেকে রেলপথে যেতে পারবে। সে জন্য পাটুরিয়া-ফরিদপুর-ভাঙা রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ চলছে। চলতি অর্থ-বছরের মূল বাজেটে প্রকল্পটিতে ১৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল, তবে খরচ করতে না পারায় তা কমিয়ে ১০৮ কোটিতে নামানো হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতু সরকারের সবচেয়ে অগ্রাধিকার প্রকল্প। ২০১৮ সালের মধ্যেই সেতু চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। কোনো কারণে যাতে এই প্রকল্পের কাজ বিঘিœত না হয়, সে জন্য বাজেটে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। পুরোদমে কাজ চললেও পুরো অর্থ খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা কমানো হয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সরকারের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অংশিদার রেলওয়ে। এ কারণে রেলকে এখন আরও বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সরকার চাচ্ছে রেলওয়ের উন্নয়নকে আরও গতিশীল করে জনগণের সেবার মান বাড়ানো। সে লক্ষ্যে রেলওয়েতে নতুন করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী বাজেটে আরও বেশি বরাদ্দ দেয়া হবে রেলওয়েকে। এটা রেলমন্ত্রীর সফলতা কিনা জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, অবশ্যই মন্ত্রী হিসেবে তিনি সফল। তাঁর উপর সরকার প্রধানের আস্থা আছে বলেই বছরের শেষাংশে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এটা তো ঠিক যে, বর্তমান রেলমন্ত্রীর আমলেই রেলওয়ের দৃশ্যমান উন্নয়ন হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।