পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডি ডবিøউ : অনেকদিন ধরে ইরাকের দ্বিতীয় বৃহৎ নগরী মসুল দখলের লড়াই চলছে। এ লড়াইয়ে ইরাক সেনাবাহিনী ও কুর্দিদের সহায়তা দিচ্ছে মার্কিন সেনারা। মসুলের তিন-চতুর্থাংশই এখন ইসলামিক স্টেট (আইএস)মুক্ত। ইরাকের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এ শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভের জন্য ইরাকি বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। এখন দরকার রাজনৈতিক কৌশল। ড্রোনগুলো বিশেষ রকম বিপজ্জনক। ইরাকি সেনাবাহিনী বলছে, ইসলামিক স্টেট অধিক থেকে অধিকসংখ্যক মনুষ্যহীন ড্রোন আকাশে ওড়াচ্ছে। ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রিত এসব ড্রোন আকাশে চক্কর দিয়ে আইএস বিরোধীদের উপর ভয়ঙ্কর বিস্ফোরক নিক্ষেপ করছে।
ইরাকি সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে ড্রোন হামলার ব্যাপারে অভ্যস্ত হলেও ছোট ও দূর থেকে চিহ্নিত করা কঠিন ড্রোনগুলো এখনো অত্যন্ত মারাত্মক, বিশেষ করে রাস্তার লড়াইতে, যখন সৈন্যদের পক্ষে মাথার উপরে উড়তে থাকা জিনিসের দিকে নজর দেয়া সম্ভব হয় না।
একজন আমেরিকান অফিসার অনলাইন প্রতিরক্ষা সাময়িকী ব্রেকিং ডিফেন্সকে বলেন, মসুলের জন্য লড়াই হচ্ছে যুদ্ধের সবচেয়ে কঠিন ও সর্বাপেক্ষা নৃশংস অধ্যায়। তিনি বলেন, এটা সম্ভবত সর্বাপেক্ষা কঠিন ও সর্বাপেক্ষা কাছাকাছি অবস্থানে চলা নৃশংস লড়াই।
আত্মঘাতী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই
ইরাকি ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, আইএস আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা তাদের বিরোধীদের অভ্যন্তরে আঘাত হানার জন্য বহুবার বিস্ফোরক ভর্তি যান ব্যবহার করেছে।
ব্রেকিং ডিফেন্স বলে, ইরাকি সামরিক বাহিনী এ বিপদ মোকাবেলার জন্য নিজেদের ভালোভাবে তৈরি করেছে। দ্রুত অগ্রসরমান এ সব যান থামাতে সকল সৈন্যকে গ্রেনেড দেয়া হয়েছে।
সৈন্যরা যখন কোনো সড়ক দখল করে সাথে সাথে সেখানে মাটির প্রতিরোধক তৈরি করে যাতে আত্মঘাতী হামলাকারীরা হামলা চালানোর কোনো সুযোগ না পায়। কিন্তু এ ব্যবস্থা তাদের আইএসের রেখে যাওয়া বিস্ফোরক ফাঁদ থেকে রক্ষা করতে পারে না, যেমন পরিত্যক্ত মনে হওয়া ফিল্ড হাসপাতালগুলো।
এ ধরনের সমস্যাগুলো শুধু কৌশলগতই নয়, নৈতিক চ্যালেঞ্জও বটে। নৈতিক বিপর্যয় চিহ্নিত করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৭ মার্চ মার্কিন সৈন্যরা বিস্ফোরকবাহী একটি যান গুলি করে। বিস্ফোরণে একটি বাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে যায় যেখানে আইএস মানব ঢাল হিসেবে বেসামরিক লোকদের জড়ো করেছিল। এ বিস্ফোরণে ২০০ জনের মতো লোক নিহত হয়।
বেসামরিক লোকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া
আইএস বিরোধীরা মসুলের তিন চতুর্থাংশ পুনর্দখল করেছে। তা সত্তে¡ও তারা এক দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। আইএস যোদ্ধারা পুরনো শহরের মধ্যে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছে যেখানে প্রবেশ করা কঠিন। দু’বছর ধরে তারা ঐ অংশ সুরক্ষিত করেছে। সেখান থেকে তাদের সরাতে হলে ঘরে ঘরে লড়াই করতে হবে।
প্রচÐ লড়াইয়ের মধ্যে মসুলের প্রায় ৫ লাখ অধিবাসী পালিয়ে গেছে। বেসামরিক লোকদের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র্র অংশ মাত্র আইএসকে সমর্থন করে। ইরাকি সরকারের নীতিকে তারা আইএসের প্রতি তাদের সমর্থনের কারণ বলে যুক্তি প্রদর্শন করে। ইরাক সরকার শিয়াদের আনুকূল্য প্রদর্শন করে থাকে।
অন্যরা আইএসের সাথে যোগ দিয়েছে ইরাকি সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্রদের হাতে অসংখ্য সুন্নী নিহত হওয়ার কারণে। ব্রেকিং ডিফেন্স এক সুন্নী গোত্র নেতাকে উদ্ধৃত করে বলে, মসুলে হাজার হাজার না হলেও শত শত সুন্নী নিহত হয়েছে। শিয়া মিলিশিয়ারা মসুলের চারপাশের বহু সুন্নী গ্রাম দখল করেছে। তিনি বলেন, অত্যধিক শক্তি প্রয়োগে আরো হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত হবে, কষ্ট বৃদ্ধি পাবে যা শুধু পরবর্তী আইএস বা আরো খারাপ কিছুর আগমনের পথ তৈরি করবে।
রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অপরিহার্য
সাংবাদিক নেতৃত্বাধীন স্বচ্ছতা প্রকল্প এয়ারওয়ারস-এর মতে, ২০১৪ সালের আগস্টে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযান শুরুর পর ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত সাড়ে ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার ৬৩০ জন লোক আহত হয়েছে। এয়ারওয়ারস-এর মতে, এ সময়ে হামলার শিকার হয়ে ৩ হাজার ১শ’ থেকে ৪ হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।
এ পরিসংখ্যানের আলোকে মার্কিন সামরিক বাহিনী বলছে যে ইরাক ও সিরিয়ায় সুন্নীরা যাতে আইএসের সাথে জোট বন্ধনে আবদ্ধ না হয় সে জন্য যুদ্ধের সাথে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অবশ্য প্রয়োজন।
ইরাকের ভবিষ্যৎ
২০০৭-২০০৮-এ ইরাকে সুন্নী অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে লড়াই করা সাবেক মার্কিন জেনারেল ডেভিড পেট্রাউস বলেন, আইএসের বিরুদ্ধে সামরিক বিজয় শুধু একটি শুরু হতে পারে। এ বিদ্রোহকালে স্থানীয় জনগণ ও আল কায়দার মধ্যে মৈত্রী পরিলক্ষিত হয়েছিল।
পেট্রাউস এক ইমেইলে ব্রেকিং ডিফেন্সকে বলেন, আইএসের সামরিক বিজয় হচ্ছে প্রাথমিক পদক্ষেপ। অনেক বড় চ্যালেঞ্জিং পদক্ষেপ হচ্ছে একটি রাজনৈতিক সমাধান অর্জনে আমেরিকা ও তাদের সকল জোট শক্তির সাহায্য নেয়া যা পুনরায় উগ্রপন্থীদের জন্য উর্বর ক্ষেত্র সৃষ্টি পরিহার করবে ও এভাবে আইএস বা তাদের মত কারো পুনরুত্থান পরিহার করা যাবে।
মার্কিন সেনা কমান্ডার স্টিফেন টাউনসেন্ডের মতে, এর অর্থ হবে নিপীড়িত সুন্নীদের উন্নতির সুযোগ প্রদান। তাদের বোঝানো দরকার যে ইরাকে তাদের ভবিষ্যৎ আছে। তিনি বলেন, এটা যদি কাজ করে তাহলে ইরাকে একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি সম্ভব। যদি তা ব্যর্থ হয়, তাহলে সন্ত্রাস ও যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।