পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : বিস্ময়কর এক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে তুরস্কের হাল ধরেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। অতি অল্প সময়ের মধ্য দেশটি অর্থনৈতিকভাবে বেশ উন্নতি লাভ করেছে। দারিদ্র্য অবস্থা থেকে লাখ লাখ মানুষকে সচ্ছলার দিকে বের করে আনা হয়েছে। যদিও দেশটি ধারাবাহিকভাবে মারাত্মক সন্ত্রাসী হামলার শিকার হচ্ছে। এছাড়াও গত বছর একটি সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালানো হয়, কিন্তু এরদোগানের তড়িৎ তৎপরতায় তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এই কারণে নাগরিক স্বাধীনতার ওপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। এক দশক আগের অবস্থা কাটিয়ে উঠে ২০১৭ সালে পুরোপুরি ভিন্ন একটি দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয় তুরস্ক।
এরদোগানের বেশিরভাগ বিশ্বস্ত সমর্থক তুরস্কের ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির। এসব মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকদের জীবন দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ সালে এরদোগান যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখন ব্যক্তির গড় আয় ৩,৮০০ ডলারে বৃদ্ধি পায় এবং ২০০৭ সালে এটি দাঁড়ায় ১০ হাজার ডলারে। এর মানে হল ওই সময় দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ২৩ শতাংশ থেকে ২ শতাংশেরও নিচে নেমে আসে। কার্নেগী ইউরোপের একজন ভিজিটিং স্কলার মার্ক পিরিনি বলেন, ‘তুরস্কে এখন মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনধারা অনেকটাই বদলে গেছে। আপনি যদি দুই বাচ্চাসহ ৩০ বছর বয়সী একটি দম্পতিকে আজ থেকে ১০ বছর আগের অন্য একটি দম্পতির সঙ্গে তাদের তুলনা করেন তাহলে পার্থক্যটা পরিষ্কার বুঝা যাবে। আজ তারা একটি ভিন্নধারা জীবন-যাপন করছে। প্রসঙ্গত, এরদোগান মূলত গত ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে তুরস্ককে শাসন করেছেন। তিনি ২০০৩ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতায় আসেন এবং ২০১৪ সালে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকেন। গতকাল রোববার তুর্কি জনগণ একটি নতুন সংবিধানের জন্য গণভোটে অংশ নেয়। এই ভোট প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে অভূতপূর্ব ক্ষমতার অধিকারী করবে যা তার অবস্থানকে অনেক বছরের জন্য সংহত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে ‘হ্যাঁ’ ভোটের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি এবং তা হলে সংসদীয় প্রজাতন্ত্র থেকে দেশটি প্রেসিডেন্টশিয়াল শাসন ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত হবে। কিন্তু এই ভোট এরদোগান ও দেশটিতে তার পদচিহ্নের জন্য এক চরম অগ্নিপরীক্ষা। আর্টিকেল-১৮ সংশোধনীর সাংবিধানিক সংস্কার প্যাকেজ অনুয়ায়ী তিনটি বিধানিক সংস্থার কর্তৃত্ব কার্যকরভাবে একটি কার্যনির্বাহী শাখায় ন্যস্ত থাকবে এবং প্রেসিডেন্ট হবেন এই কার্যনির্বাহী শাখার প্রধান। বর্তমানে প্রেসিডেন্টের ভূমিকা মূলত আনুষ্ঠানিক বলে মনে করা হয় কিন্তু এরদোগান ইতোমধ্যেই এই ঐতিহ্য ভঙ্গ করেছেন এবং নিজেকে তুরস্কের নেতৃত্বের কাÐারি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্সের সমসাময়িক তুর্কি স্টাডিজের প্রধান এসরা ওজিউরেক বলছেন, তুরস্কের জনগণ যদি ‘হ্যাঁ’ ভোট দেয়, তাহলে দেশটি সমস্ত ‘চেক এবং ব্যালেন্স’ থেকে পরিত্রাণ পাবে; যা সরকারকে একটি লাইনে আটকে রেখেছে। তিনি বলেন, সংসদ সম্পূর্ণরপে অকার্যকর হবে। এতে কোন প্রধানমন্ত্রী থাকবে না। সকল ক্ষমতা এরদোগানের হাতে থাকবে। ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই একটি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে একটি বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটে, যা জনজীবনের প্রতিটি স্তরে পৌঁছায়। তুর্কি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মতে, ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় ২৪৯ জন নিহত হয়েছেন। যদিও অভ্যুত্থানের লক্ষ্য ছিল এরদোগান। বিবিসি, ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।