পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের সাথে কৌশলগত ঐক্যকে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ এবং বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির মূলে এক ধরনের কুঠারাঘাত। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বুদ্ধিজীবী, ছাত্র-জনতা, রাজনৈতিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক সংগ্রাম সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য জাতিকে কঠিন খেসারত দিতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এম.এল) আয়োজনে অনুষ্ঠিত পলিট ব্যুরোর এক সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। দলের প্রধান কমরেড দিলীপ বড়–য়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, পলিট ব্যুরোর সদস্য কমরেড লুৎফর রহমান, কমরেড ধীরেন সিংহ ও কমরেড সাইফুল ইসলাম মাস্টার প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, হেফাজত ইসলামের রাজনীতি মূলতঃ সাম্প্রদায়িক এবং পবিত্র ইসলাম ধর্মকে অপব্যাখ্যা করে আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক দক্ষিণপন্থী রাজনীতির আদর্শকে মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করে। সরকার জঙ্গীগোষ্ঠির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বললেও জঙ্গীবাদের রাজনৈতিক আদর্শের ভিত্তি ভূমি হচ্ছে হেফাজতে ইসলামের রাজনৈতিক দর্শন। ফলে যে রাজনৈতিক মতাদর্শিক বুননে জঙ্গীবাদের উৎপত্তি তার সাথে আপোষ করে জঙ্গীদের সমূলে উৎখাত করা সম্ভব নয়।
বক্তারা বলেন, জঙ্গী উৎপাদনের ভিত্তি ভূমিকে যারা লালন পালন করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মনোজগতে সক্রিয় উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগায় তাদের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বরং এর ফলে রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তানী ভাবাদর্শে পরিচালিত জামায়াত এবং বিএনপি লাভবান হবে।
বক্তরা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে দ্বিজাতিতত্তে¡র ধারক বাহকরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পুনর্বাসিত হয়ে আজকে মূল রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজত ইসলাম সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ভিত্তিতে একই বৃত্তে অবস্থান করছে। ২০১৩ সালে ৫ মে হেফাজত ইসলামের কর্মকাÐের জ্বলন্ত প্রমাণ।
পলিট ব্যুরোর সদস্যরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক আদর্শের বিরোধিতাকারীরা এখনও মানসিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে গ্রহণ করেনি। উপরন্তু সুযোগ পেলে মুক্তিযুদ্ধের মতাদর্শেও বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও বিভিন্ন অপকৌশল নিয়ে দেশে বিভাজিত রাজনীতির সৃষ্টি করেছে। এই বিভাজিত রাজনীতির ফলে রাষ্ট্র এবং ক্রমে সাম্প্রদায়িক ও দক্ষিণপন্থীদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।
বক্তারা বলেন, এই বাস্তবতায় ভোটের রাজনীতির জন্য সরকার ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু বিভাজনের রাজনীতির কৌশল গ্রহণ করে হেফাজত ইসলামের মত রাজনৈতিক দলগুলোকে কৌশলগত সুযোগ দিলেও এর কোন প্রভাব পড়বে না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী ব্যক্তি এবং গোষ্ঠির মনন জগতে মুক্তিযুদ্ধেও ভাবাদর্শের বিরোধী মনোভাব গড়ে উঠেছে বিধায় আসন্ন ভোটযুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ শক্তির পক্ষে ভোট দেবে না ববং বিরোধিতা করবে। ফলে ভোটযুদ্ধে সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় অপশক্তির সাথে কৌশলগত ঐক্যে আগামী নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের কোন লাভ হবে না। বরং এই কৌশলগত সমঝোতার খেসারত জাতিকে দিতে হবে।
বক্তারা বলেন, হেফাজত তথা সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোর একাংশের সাথে কৌশলগত সমঝোতার ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বুদ্ধিজীবী, ছাত্র জনতা, রাজনৈতিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। ফলে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক সংগ্রাম সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বক্তারা বলেন, কওমী মাদ্রাসার উচ্চতর শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকার জঙ্গীবাদের রাজনৈতিক আদর্শকে উৎসাহিত করেছে এবং সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের সিদ্ধান্তে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোকে অনুপ্রাণিত করবে। এর ভয়াবহ পরিণতিতে ভবিষ্যতে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য এবং বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকেও উৎখাতের দিকে পরিচালিত করবে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় তিস্তার চুক্তি না হওয়া একটি দুঃজনক ঘটনা বলে অভিহিত করা হয়। এছাড়া একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ হিসেবে আমাদের স্বার্থ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য সরকারকে সতর্ক থাকার আহŸান জানানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।