Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার জোড়া সেঞ্চুরি, তবুও হার

প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : জয়ের জন্য ৭৬ বলে ভারতের দরকার আর ‘মাত্র’ ৭১ রান, হাতে ৯ উইকেট। ১২৬ রানে তখন ব্যাট করছেন শেখর ধাওয়ান, অপরপ্রান্তে আরেক সেঞ্চুরিয়ান- ১০৫ রানে অপরাজিত থাকা বিরাট কোহলি। এমন পরিস্থিতিতে ভারত সমর্থকরা হয়তো ভেবেছিল ‘যাক, এ যাত্রায় হার এড়ানো গেল।’ কিন্তু তা আর হল কই! দিন শেষে ঠিকই রচিত হল সফরকারীদের পরাজয়ের আরেক ‘বেদনা-কাব্য’।
হারটা ২৫ রানের! মিডল অর্ডার ব্যর্থতায় শেষ ৯ উইকেটে মাহেন্দ্র সিং ধোনির দল করতে পারল ৪৬ রান। ৫ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হন্তারকের ভূমিকায় দেখা দেন কেন রিচার্ডসন। অথচ অজিদের ছুড়ে দেয়া ৩৪৯ রানের লক্ষ্যটা কি দুর্দান্তভাবেই না শুরু করেছেল রোহিত-ধাওয়ান-কোহলিরা। এরপর ১ উইকেটে ২৭৭ থেকে নিমেষেই ৪ উইকেটে ২৭৮! খানিক পরে সেটা হয়ে গেল ৬ উইকেটে ২৯৪! মূল ধাক্কাটা লাগে মূলত ধাওয়ানের পর ২৭৭ রানেই দাঁড়িয়ে ধোনির ফিরে যাওয়ায়। ম্যাচ শেষে সেটা স্বীকারও করে নিলেন ভারত অধিনায়কÑ ‘আমরা দ্রুতই বেশ কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ফেলি। কিন্তু আমার বিবেচনায়, আমার উইকেটটিই ছিল টার্নিং পয়েন্ট। এমন পরিস্থিতিতে আমারই উচিত ছিল ম্যাচ শেষ করে আসা।’
এসময় বল হাতে রিচার্ডসনের সাথে যোগ দেন জন হেস্টিংস ও নাথান লায়ন। শুরুটা হেস্টিংসের বলে শেখর ধাওয়ানের জর্জ বেইলির হাতে ধরা পড়ে দিয়ে। এরপর একে একে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন ধোনি (০), কোহলি (১০৬), গুরকিরাত সিং (৫), রাহানে (২) ও ঋষি ধাওয়ানরা (৯)। দলীয় ৬৫ রানে সফরকারীদের প্রথম উইকেট পড়লেও ২৮ বলে ৪১ রানের এক কার্যকরী ইনিংস খেলে যান রোহিত। উজ্জ্বল কোহলিও। অজি সফরে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি তো পেলেনই, সাথে শচীন টেন্ডুলকারকে টপকে দ্রুততম ২৫ সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়লেন কোহলি। এই মাইলফলক ছুঁতে যেখানে টেন্ডুলকারের লেগেছে ২৩৪টি ইনিংস, সেখানে কোহলির লাগল মাত্র ১৬২টি। একই সাথে চার ম্যাচেই পঞ্চাশোর্ধো রানের ইনিংস খেলে ছুলেন অস্ট্রেলিয়া সফরে গাভাস্কারের করা টানা চার অর্ধশতকের রেকর্ডও। কোহলির এমন জ্বলজ্বলে দিনে সেঞ্চুরি দিয়ে ভারতের হয়ে দ্রুততম ৩০০০ রানের মাইলফক স্পর্শ করেন শেখর ধাওয়ান। তারপরও ধোনির দল ফিরিয়ে আনতে পারল না জয়পুর কিংবা নাগপুরের স্মৃতি। যেখানে অজিদের ছুড়ে দেয়া সাড়ে তিন’শ রান টপকে জিতেছিল ভারত।
আগের তিন ম্যাচের পরাজয়ের ময়না তদন্ত করলেও কিন্তু বেরিয়ে আসবে ভারতের মিডল অর্ডারদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। টপ অর্ডারদের দুর্দান্ত শুরুর পরও ইনিংসটা যে পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল সেটা করতে পারেনি তারা। আর সফরকারীদের যেন এই জিনিসটাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন দুই অজি মিডিল অর্ডার স্মিথ ও ম্যাক্সওয়েল। ২৯ বলে ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ৫১ করে থামেন স্টিভেন স্মিথ, আর ২০ বলে ৪১ আসে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে। এর আগে এমন ব্যাটিংয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যায় ২৯.৩ ওভারে ওয়ার্নারÑ ফিঞ্চের ১৮৭ রানের উদ্ভোদনী জুটি। সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে থামেন সদ্যই আরেক কন্যা সন্তানের বাবা হওয়া ডেভিড ওয়ার্নার। তবে ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে নেন ফিঞ্চ (১০৭)। অজি ইনিংটি ৪০০ পেরুনোও সম্ভব হত যদি না মিশের মার্শের (৩৩) ধীর ব্যাটিংয়ের সাথে অ্যারোন ফিঞ্চকে সেঞ্চুরির নেশায় না ধরত। ৩০ থেকে ৪০Ñ এই ১০ ওভারে আসে মাত্র ৪৯ রান। শেষ দিকে স্মিথ-ম্যাক্সওয়েলরা অবশ্য সেটা পুশিয়ে দেন ভালোমতই। ভারতের হয়ে ৭৭ রানের খরচায় ৪ উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা, ৬৭ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট উমেশ যাদবের।
অস্ট্রেলিয়া সফরে ওয়ানডেতে ভারতের ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ হতে বাকি রইল হোয়াইট ওয়াশ। ওদিকে অজিরা ঘরের মাঠে টানা ১৭ জয়ের রেকর্ডটা গড়েছিল মেলবোর্নে। ক্যানবেরোয় সেটা বেড়ে হল ১৮। ১৮ থেকে এবার কি ১৯? জানা যাবে আগামী পরশু।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এবার জোড়া সেঞ্চুরি

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ