পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম, দিনাজপুর থেকে ফিরে : পশ্চিশাঞ্চল রেলওয়ের দুয়ার খুলতে শুরু করেছে। এক যুগ পরে দিনাজপুর দিয়ে ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রেন এসেছে বাংলাদেশে। গত ৮ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যৌথভাবে দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাধিকাপুর স্টেশনে রেলওয়ের বাণিজ্যিক ওই রুট উদ্বোধন করেন। এ সময় ভারত থেকে ৪২টি ওয়াগন (তেলবাহী ট্রেন) নিয়ে একটি ট্রেন দিনাজপুরের বিরল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, এই রুট চালু হওয়ায় ভারত ছাড়াও সার্কভুক্ত নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের সঙ্গে রেলপথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হলো। খুব তাড়াতাড়ি এই রেলপথে নিয়মিত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে বলে জানান রেলভবনের একজন কর্মকর্তা। তবে তাতে কতদিন সময় লাগবে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে তিনি কিছু বলতে পারেননি। একই সাথে খুলতে যাচ্ছে নীলফামারী সীমান্তের চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটটিও।
এই রুট চালু হলে ট্রেনে যাওয়া যাবে ভারতের দার্জিলিং। চিলাহাটি হয়ে রেললাইন যাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার হলদিবাড়ি স্টেশন পর্যন্ত। এই রুট চালু হলে প্রায় ৫২ বছর পর ঢাকা-দার্জিলিং রেল যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। এ লক্ষে দুই দেশেই পৃথক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভ‚মি দার্জিলিংসহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ, নেপাল ও ভ‚টান যাওয়া অনেক সহজ ও আরামদায়ক হবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে ছয় মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মনে করছেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। তখন ঢাকা থেকে ১০ ঘণ্টায় যাওয়া যাবে নিউ জলপাইগুঁড়ি অথবা শিলিগুঁড়ি। দিনাজপুরের বাসিন্দা রইচ উদ্দিন জোতদার বলেন, পণ্যবাহী ট্রেন চালু হয়েছে। কবে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হবে সে অপেক্ষায় আছি আমরা। তিনি বলেন, চিলাহাটি থেকে ভারতের দার্জিলিং এত কাছে তা অনেকেরই অজানা। এই রুটে ট্রেন চালু হলে এ দেশের বহু মানুষ দার্জিলিং বেড়াতে যাবে। তখন তারা বুঝবে দার্জিলিং কত কাছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারত ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথে নেপাল, ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে সীমিত সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করত। ২০০৬ সালে ভারত রাধিকাপুর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ স্থাপন করায় ওই রুটে রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। রেলওয়ে সূত্র জানায়, দু’দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশন পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ স¤প্রসারণ কাজ শেষ করা হয়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আমদানি ও রফতানির কাজ ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা স¤প্রসারণসহ বিরলসহ ১৩টি শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে রুপান্তরিত করা হয়েছে।
রেলভবনের একজন কর্মকর্তা জানান, পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুরের বিরল সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ উন্নত রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। যে রেললাইন দিয়ে দ্রæতগতিতে চলতে পারবে ট্রেন। পণ্য পরিবহনের জন্যই এই রুটটি ডুয়েল গেজে উন্নীত করা হয়েছে। ৮ এপ্রিল ভারতীয় একটি তেলবাহী ট্রেন বাংলাদেশে এসেছে। ৪২টি ওয়াগনের ওই পণ্যবাহী ট্রেনে মোট দুই হাজার ২০০ মেট্রিক টন জ্বালানি ছিল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নিমনগর তেল রিফাইনারি ডিপো থেকে যাত্রা করা ট্রেনটি দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের তেল ডিপোতে যায়। ওইদিন বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকাযুক্ত পণ্যবাহী ট্রেন দেখার জন্য শত শত মানুষ বিরল স্টেশনে ভিড় জমায়। ট্রেনটি বরণ করার জন্য সেখানে লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। রেলভবনের একজন কর্মকর্তা জানান, চাপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে তেলবাহী ট্রেন ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে। ওই রুটে দূরত্ব অনেক বেশি। অনেক ঘুরে ঘুরে আসতে হয়। এতে খরচ বেশি পড়ে। কিন্তু দিনাজপুর হয়ে বাংলাদেশের দূরত্ব অনেক কম। সে কারণে পণ্য পরিবহনে খরচও অনেক কম। এতে করে আমাদের জ্বালানির দাম অনেকটা কমে যাবে। ওই কর্মকর্তা বলেন, শুধু তেল নয়, আগামীতে অনুমোদিত সব ধরনের পণ্য ট্রেনে পরিবহন করা গেলে সুবিধা অনেক বাড়বে। এর আগে গত ৮ মার্চ ভারত থেকে ৪২টি ওয়াগনে দুই হাজার ৪৭২ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে একটি ট্রেন বাংলাদেশে এসেছিল।
জানা গেছে, ভারত থেকে নিয়মিত পণ্য পরিবহনের জন্য রেলওয়ের লোকোমাস্টার (চালক) ও গার্ডদের প্রফেশনাল পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়া হয়েছে। নিয়মিত ট্রেন চালু হলে শুধু পাসপোর্টধারীরাই ট্রেন নিয়ে ভারতে যেতে পারবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।