পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
এমন বার্তা সীমা লঙ্ঘনকারী যেকোনো দেশ গ্রহণ করতে পারে : টিলারসন
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া প্রতি বার্তা দেয়া হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। এই বার্তা যে কোনো দেশ গ্রহণ করতে পারে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, বার্তাটি হলো, যদি কেউ আন্তর্জাতিক নিয়ম, চুক্তি লঙ্ঘন করে এবং প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী কাজ না করে, অন্যের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেয়া তবে এক পর্যায়ে তার জবাব দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। গত রোববার মার্কিন চ্যানেল এবিসি’র ‘দিস উইকে’ এ সব কথা বলেন তিনি।উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমেরিকা কোরিয়া উপদ্বীপকে পরিষ্কারভাবে পরমাণু মুক্ত করতে চায়।
গত শুক্রবার সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় হোমস প্রদেশের আশ-শাইরাত বিমান ঘাঁটিতে এ হামলা চালানো হয়ে। মার্কিন নৌবাহিনীর ডেস্ট্রয়ার ইএসএস রোজ ও ইউএসএস পোর্টার থেকে এ ঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রায় ৬০টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এ হামলা হয়েছে।যখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ আগ্রাসনের বিরোধিতা হচ্ছে তখন ট্রাম্পের নির্দেশের সমর্থনে আমেরিকান সংবাদ মাধ্যমে উপস্থিত হলেন টিলারসন। জাতিসংঘ এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে উত্তর কোরিয়া পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অব্যাহত রেখেছে। গত বছর দু’টোসহ এ পর্যন্ত পাঁচ দফা পরমাণু বোমার পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। গত সপ্তাহে জাপান সাগরে সর্বশেষ দফা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া।
অপর এক খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিআইএ প্রধান মিচেল মোরেলের মতে সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসকে নির্মূল করা সম্ভব হবে না, যদি সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে নির্মূল করা না হয়। এ দুইয়ের মধ্যে সংযোগ রয়েছে। স্থানীয় সময় গত রোববার সিবিএস নিউজের ফেস দ্য নেশন অনুষ্ঠানে মোরেল বলেন, বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতায় রেখে আপনি চ‚ড়ান্তভাবে আইএসকে কখনোই পরাজিত করতে পারবেন না। আসাদ সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, নিজের দেশের বেশিরভাগ মানুষ অর্থাৎ সুন্নিদের কাছে তিনি বিশ্বাসযোগ্য নন। তাদের বিশ্বাস আসাদ কখনোই আর অর্জন করতে পারবেন না। এটা তার পক্ষে আর সম্ভব নয়। মরেলের মতে, আসাদের উপস্থিতি আসলে উগ্রবাদেরই জন্ম দেবে। তাই আসাদকে সরে যেতে হবে। আসাদ আর এইএস’র যোগসূত্রটা আসলে এখানেই। তাই সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার প্রতিশোধ হিসেবে মার্কিন মিসাইল হামলার প্রতি তার পূর্ণ মাত্রায় সমর্থন ব্যক্ত করেন। ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করা মোরেল জানান, সিরিয়ায় মিসাইল হামলার মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুটি লক্ষ্য অর্জন করেছেন। এরমধ্যে একটি হলো- রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে তিনি আসাদকে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন। অন্যটি হলো- প্রেসিডেন্ট তার প্রতিপক্ষদের জানিয়ে দিয়েছেন যে নিজ স্বার্থ দেখতে পিছপা নয় যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে, সিরিয়ায় আর কোনো ধরনের আগ্রাসন চালানো হলে তার সমুচিত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের মিত্ররা। সিরিয়ার বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দুই দিন পর রাশিয়া, ইরান ও লেবাননসহ দেশটির মিত্ররা এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সিরিয়াভিত্তিক যৌথ অভিযান পরিচালন কক্ষ থেকে গত রোববার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় আগ্রাসন সব ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করে গেছে। যেকোনো আগ্রাসন ও রেড লাইন অতিক্রম করলে তার বিরুদ্ধে আমরা সমুচিত জবাব দেব। সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্টতা রয়েছে এমন একটি পত্রিকা আল-ওয়ান্তা। এই পত্রিকায় গত রোববার বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, আমাদের জবাব দেওয়ার ক্ষমতা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র ভালোই জানে। আলজাজিরা অনলাইনের এক খবরে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, রাসায়নিক হামলার বিষয়ে কোনো তদন্ত ছাড়া এবং জাতিসংঘের অনুমোদন ছাড়াই সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে আরো বলা হয়, সিরিয়া মিত্র হিসেবে আমরা সিরিয়ার জন্য এবং দেশটির জনগণের জন্য বিভিন্নভাবে সমর্থন বাড়াচ্ছি। গত মঙ্গলবার সিরিয়ার বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত প্রদেশ ইদলিবের খান শেখুন শহরে বিষাক্ত গ্যাস হামলায় শতাধিক নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। নিহতের মধ্যে অনেক শিশু ও নারী রয়েছে। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, কয়েক লাখবার রেড লাইন অতিক্রম করেছে এই হামলা। এ হামলার জন্য তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে দায়ী করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভ‚মধ্যসাগর থেকে সিরিয়ার বিমানঘাঁটিতে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। আল-জাজিরা, দ্য হিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।