বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খুলনা ব্যুরো : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহা. রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেন, শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে সর্বোচ্চ আদালতের সামনে গ্রিক দেবীর মূর্তিস্থাপন করা হয়েছে। অথচ বিধর্মীদের দেশ আমেরিকার আদালতের সামনে লেখা রয়েছে সর্বকালের সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ আইন প্রণেতা হযরত মুহাম্মদ (সা.)। সর্বোচ্চ আদালতের সামনে মূর্তিস্থাপন করে দেশপ্রেমিক ইমানদার জনতার হৃদয়ে আঘাত দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে এই মূর্তি অপসরণ করা না হলে গোটা দেশে তীব্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে। আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছিল ক্ষমতায় গেলে ইসলামবিরোধী কোনো কাজ করবে না। অথচ বারবার তাদের ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে আমাদেরকে রাজপথে নামতে হয়, এটা দুঃখ জনক। প্রধানমন্ত্রী নিজেকে মুসলমান বলে পরিচয় দেন, কিন্তু মূর্তি নির্মাণ মুসলমানের কাজ নয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শিববাড়ী মোড় বাবরী চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলার উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণ, রেলওয়ে দক্ষিণ অঞ্চল সদর দফতর ও বিভাগীয় সদর দফতর খুলনায় স্থাপন, পাইপ লাইনে খুলনায় গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসের মূল্য কমানোর দাবিতে গুম হত্যা, সন্ত্রাস, দুর্নীতির প্রতিবাদে ও ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা জেলা শাখার সভাপতি ও জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাও: আব্দুল্লাহ ইমরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির হাফেজ মাও: অধ্যক্ষ আব্দুল আওয়াল, যুগ্ম-মহাসচিব মাও: গাজী আতাউর রহমান, খুলনা মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাও: মুজ্জাম্মিল হক কাসেমী। সভা পরিচালনা করেন নগর সহ-সভাপতি শেখ মুহা. নাসির উদ্দিন, জেলা সেক্রেটারি শেখ হাসান ওবায়দুল করীম ও মাও: ইমরান হুসাইন। জনসভায় পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, প্রধান বিচারপতি মূর্তিপূজা আর্চনায় বিশ্বাসী হতে পারেন, এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। সেই মূর্তি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের উপর তিনি চাপিয়ে দিতে পারেন না। তিনি মূর্তি নির্মাণের মাধ্যমে দেশের প্রধান বিচারপতি হওয়ার নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। তিনি প্রধান বিচারপতির পদকে কলঙ্কিত করেছেন। অবিলম্বে এই মূর্তি অপসারণ করতে হবে।
নায়েবে আমির অধ্যক্ষ আব্দুল আওয়াল বলেন দক্ষিণ অঞ্চলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান খুলনা। খুলনা শিল্প ও বন্দর নগরী এখানে সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় অফিস রয়েছে। ইতোমধ্যে ৯০ কোটি টাকা দিয়ে খুলনা রেলস্টেশনের আধুনিকায়ন ও বেনাপোল রেল স্টেশনের উন্নয়ন কাজ চলছে। খুলনা রেলস্টেশনের পাশে সড়ক ও নদী পথ থাকায় বিভাগীয় সদর খুলনার গুরুত্ব অনেক বেশি। অথচ রেলওয়ে দক্ষিণ অঞ্চলের সদর দফতর খুলনার পরিবর্তে ফরিদপুর এবং বিভাগীয় রাজবাড়ী করার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। যা খুলনাবাসীর জন্য অপ্রত্যাশিত। তিনি বলেন, খুলনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। একই সাথে খুলনাকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের কোনো সুযোগ দেয়া হবে না।
জনসভায় আরো বক্তৃতা করেন, জেলা শাখার প্রধান উপদেষ্টা মাও: গাজী নূর আহম্মদ, মো: মুসা লস্কর, মাও: মুজ্জাফ্ফর হোসাইন, মাও: আবু সাঈদ, শেখ নাসির উদ্দিন, মুফতি আমানুল্লাহ, মাও: ইমরান হুসাইন, মাও: ফয়সাল মাহমুদ, জিএম সজিব মোল্লা, ইঞ্জি: এজাজ মানসুর হোসেন, মো: আবু গালীব, মুহা. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
কেসিসি’র প্রার্থী ঘোষণা : সমাবেশ শেষে পীর সাহেব চরমোনাই আগামী খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। মেয়র প্রার্থী হিসাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের সভাপতি, অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক কাসেমী এবং কাউন্সিলর প্রার্থী হিসাবে ২নং ওয়ার্ডে মো: বজলুর রহমান, ৩নং ওয়ার্ডে আলহাজ মো: লুৎফর রহমান, ৪নং ওয়ার্ডে আলহাজ জাহাঙ্গীর মোড়ল, ৬নং ওয়ার্ডে মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম কাবির, ৭নং ওয়ার্ডে গাজী মুহা. মিজানুর রহমান, ৮নং ওয়ার্ডে হাফেজ শামছুল আলম, ১০নং ওয়ার্ডে মুহাম্মদ জামাল হোসেন, ১১নং ওয়ার্ডে মুহা. মতিয়ার রহমান, ১২নং ওয়ার্ড ডা. আজমল হোসেন, ১৫নং ওয়ার্ড মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কিবরিয়া, ১৬নং ওয়ার্ড মুহাম্মদ মারুফুর রহমান, ১৭নং ওয়ার্ড মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ, ১৮নং ওয়ার্ড মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জামাল, ২১নং ওয়ার্ড মুহা. শামিমুল আলম মান্দার, ২২নং ওয়ার্ড মুহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, ২৩নং ওয়ার্ড আলহাজ আবু তাহের, ২৫নং ওয়ার্ড মো: ইমরান হোসেন মিয়া, ২৬নং ওয়ার্ড মো: আকবার আলী পাঠান, ২৭নং ওয়ার্ড মো: মুজিবুর রহমান ছোটন, ২৮নং ওয়ার্ড মো: ফজলুল করীম, ৩০নং ওয়ার্ড মো: আলমগীর হোসেন, ৩১নং ওয়ার্ড মো: গোলাম মোস্তফা সজীব মোল্লার নাম ঘোষণা করেন। বাকিগুলোর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা পরে করা হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।