Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফ্রান্সে শরণার্থীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ, তাঁবুতে অগ্নিসংযোগ, আটক ৪

প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ফ্রান্সের ক্যালে বন্দরে শরণার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। শরণার্থীদের উচ্ছেদকালে পুলিশের সাথে এই সংঘর্ষে তাঁবুতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পুলিশ অন্তত ৪জন অভিবাসীকে আটক করেছে। অভিবাসীরা ব্রিটেনে যাবার চেষ্টায় ওই শিবিরে তাঁবু গেড়ে অবস্থান করছিল। সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, ক্যালে বন্দরে দ্য জাঙ্গল নামে পরিচিত অভিবাসীদের অস্থায়ী শিবিরের তাঁবু পুলিশ উচ্ছেদ করতে গেলে এই সংঘর্ষ বাঁধে। ক্যালেতে অবস্থানরত অভিবাসীরা ব্রিটেনে যাওয়ার চেষ্টায় দীর্ঘদিন যাবত এসব তাঁবুতে অবস্থান করছিল। গত সোমবার সারাদিনে জাঙ্গল শিবিরের প্রায় ১০০টি ঘরে ভেঙে দেয়া হয়েছে। অভিবাসীদের অন্তত ১২টি অস্থায়ী ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থল থেকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক নো বর্ডারস গ্রুপ-এর আন্দোলনকারীসহ অন্ততপক্ষে চারজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। খবরে বলা হয়, ফরাসি কর্তৃপক্ষ শিবিরগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করলে, যেসব গাড়ি সেদিকে যাচ্ছিল অভিবাসীরা সেসব গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মারতে শুরু করে। জবাবে ফরাসি দাঙ্গা পুলিশও তাদের দিকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। সৃষ্টি হয় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির। তবে জাঙ্গল শিবিরের যে কয়েকশত শরণার্থীকে উচ্ছেদ করা হয়েছে তারা এখন কোথায় আছে তা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যায়নি। তারা আশঙ্কা করছে, উচ্ছেদের পর তাদের আঙুলের ছাপ নিয়ে তাদের ফ্রান্সে আশ্রয় নিতে বাধ্য করা হতে পারে, এতে তাদের যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। ফরাসী কর্তৃপক্ষ চাইছে, অভিবাসীদের সেখান থেকে সরিয়ে কিছু অভিবাসন কেন্দ্রে স্থানান্তর করতে। তবে শরণার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার প্রধান লেনার্দ ডয়েল বলেছেন, জাতিসংঘের চুক্তি অনুযায়ী বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা রয়েছে, মানবিক দায়বদ্ধতাও রয়েছে। অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের ভুললে আমাদের চলবে না। তারা শরণার্থী হতে পারে কিন্তু তারা না পারতেই আরেকটি দেশের আশ্রয়প্রার্থী। আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইরাক থেকে আসা এসব শরণার্থীদের দেখাশোনা করা আমাদের কর্তব্য, তাদের ওপর পানিকামান ছোড়ার বদলে তাদের সাহায্য করা উচিত- বলেন ডয়েল।
উচ্ছেদ পরিকল্পনার কারণে প্রায় এক হাজার শরণার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ত্রাণ সংস্থাগুলো জাঙ্গল শিবিরে আরো বেশি মানুষ বসবাস করছে বলে দাবি করেছে। হালকা গাছপালা ঘেরা শিবির এলাকা থেকে বের হয়ে শরণার্থীরা ক্যালে বন্দরের দিকে যাওয়া সড়কে জড়ো হয়েছিল। ফরাসি গণমাধ্যমগুলো জানায়, প্রায় দেড়শ’র মতো মানুষ গাড়ি আটকানোর উদ্দেশ্যে ক্যালেমুখি সড়কে উঠে পড়ে। এদের অনেকের হাতেই লোহার ডা-া ছিল। দাঙ্গা পুলিশ এদের শিবিরে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। শরণার্থীদের সাথে বিরূপ আচরণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলবে বলে উল্লেখ করেন অভিবাসন সংস্থার প্রধান। ক্যালে বন্দরের ওই সংঘর্ষের ঘটনায় অনেক শরণার্থীই বিচ্ছিন্ন হয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। ফরাসি কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই শরণার্থীদের তারা ভিন্ন একটি স্থানে কিছু রূপান্তরিত শিপিং কন্টেইনারে থাকার ব্যবস্থা করেছেন, কিন্তু অধিকাংশ শরণার্থীই এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা মনে করছে, এমনটা করলে তাদের ব্রিটেনে যাবার আশা ফুরিয়ে যাবে এবং ফ্রান্সেই তাদের আশ্রয় চাইতে হবে। বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্রান্সে শরণার্থীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ