Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী অপহরণ বাগেরহাটে মুক্তিপণ আদায় চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার

| প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

খুলনা ব্যুরো : ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানির ছয়কর্মীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার মোট ১০ যুবক মালয়েশিয়ায় গিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি অপহরণের শিকার হন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানাধীন কাটাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে আন্তর্জাতিক অপহরণকারী ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের সক্রিয় সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬। গতকাল দুপুরে র‌্যাব-৬ কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৬ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-১ এর ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার লে. এ এম এম জাহিদুল কবীর।
তিনি জানান, ৮ ফেব্রুয়ারি কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর পৌঁছলে বিমানবন্দরের বাহিরে অপেক্ষমান কতিপয় বাংলাভাষী এগিয়ে এসে সদ্য আগত ১০ যুবকের সাথে পরিচিত হয়ে কুশলাদি জিজ্ঞেস করে। তারা কুয়ালালামপুর বাংলা মার্কেট যাবার ইচ্ছা পোষণ করে। জনপ্রতি ১০রিঙ্গিত ভাড়ার বিনিময়ে অভ্যর্থনাকারীরা কুয়ালালামপুরে নবাগতদের গাড়িতে করে বাংলা মার্কেট নিয়ে যাবার প্রস্তাব দিলে যাত্রীরা স্বদেশী দেখে স্বাচ্ছন্দে তাদের গাড়িতে উঠে বসে। পরে অভ্যর্থনাকারীরা ১০জনকে মাইক্রোবাসে নিয়ে কুয়ালালামপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে অজ্ঞাতস্থানে একটি ঘরে নিয়ে আটক করে রাখে। পরবর্তীতে অপহৃতদের কাছ থেকে বাংলাদেশে তাদের অভিভাবকদের ফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা দাবি করে। অভিভাবকরা দিশেহারা হয়ে ভিকটিমদের উদ্ধারে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপহরণকারী চত্রেুর অন্যান্য সহায়তাকারীদের সাথে যোগাযোগ করে। তারা বিকাশ ও রকেট (ডাচ বাংলা ব্যাংকের)একাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে মুক্তিপণের ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৫০০টাকা দিলে অপহৃত ৮জনকে মালয়েশিয়ায় আটকাবস্থা থেকে মুক্ত করে। পরবর্তীতে ভিকটিমদের পরিবার তাদের বিমান ভাড়া দিয়ে দেশে ফেরত আনেন। অন্যদিকে, মুক্তিপণের পুরো টাকা প্রদান না করায় অপহরণকারীরা বাকি দু’জনকে মালয়েশিয়ায় আটক করে রাখে। সেই থেকে আটক দুই ব্যক্তি এখনও নিখোঁজ রয়েছে। এদিকে, দেশে প্রত্যাবর্তনকারীরা এই চক্রের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সহায়তা কামনা করেন। পরে মালয়েশিয়ায় অপহৃত ইমরান সরদারের পিতা আজগর সরদার র‌্যাব সদর দফতর ঢাকায় অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৬ খুলনার একটি গোয়েন্দা দল অনুসন্ধানকালে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানাধীন বিকাশ এজেন্ট মো. ইমরুল ইসলাম টিটুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদকালে তার এজেন্ট নম্বরে অস্বাভাবিক অর্থ লেনদেনের বিষয়টি জানতে পারে র‌্যাব। তাকে জিজ্ঞাবাদে প্রাপ্ত তথ্যেরভিত্তিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপহরণকারী চক্রের অন্যান্য সহায়তাকারীদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া হয়। বিকাশ এজেন্ট মো. ইমরুল ইসলাম টিটু র‌্যাবের গোয়েন্দা দলের মুক্তিপনের টাকা অনুসন্ধানের বিষয়টি অপহরণকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের জানিয়ে দেয় এবং সেসহ মুক্তিপণ আদায় চক্রের অন্য সদস্যরা আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে অপহরণকারীদের মোবাইল ট্রাকিং ও গোয়েন্দা তথ্যেরভিত্তিতে ৩ এপ্রিল সকাল ৯টায় র‌্যাব-৬, সিপিসি-১ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানাধীন কাটাখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে অপহরণকারী ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের সক্রিয় সদস্য মো. আহসান হাবিব খানকে (৪৩) হাতেনাতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামি মো. আহসান হাবিব খানের তথ্যমতে ফকিরহাট থানাধীন নোয়াপাড়া তিন রাস্তার মোড় হতে আসামি মো. রুহুল আমিন খান (৪২) ও বিকাশ এজেন্ট মো. ইমরুল ইসলাম টিটুকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মালয়েশিয়া

৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ