Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ধনাঢ্য ব্যবসায়ী চন্দন ও লুটু, মাধবদীর ওসি ইলিয়াছকে বেআইনী কাজে ব্যবহার করেছে

| প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : আদালতের আদেশ অমান্য করে পুলিশের সহযোগিতায় চন্দন কুমার সাহা ও লুটু সাহা নামে দুই ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর হাতে গরীব রিক্সাচালকের ভিটেমাটি দখলের খবরে সংশ্লিষ্ট মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ব্যাপক বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে। গতকাল বৃহস্পতিবার দৈনিক ইনকিলাবসহ জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় মাধবদী থানার ওসি’র বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের খবর প্রকাশিত হয়।
খবরে জনগণ তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, শুধু পুলিশের দোষ কেন, যারা পুলিশকে ব্যবহার করে গরীব রিক্সাচালকের ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেছে তারা হচ্ছে মাধবদীর দোর্দন্ড প্রতাপশালী দুই ব্যবসায়ী। দুইজন ধণাঢ্য ব্যবসায়ী হচ্ছেন চন্দন কুমার সাহা ও লুটু সাহা। যাদের রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। মাধবদীতে তার বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তার টাকা ও প্রতাপের কাছে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। একজন গরীব রিক্সাচালক উপায়ান্তর না দেখে আদালতে মামলা করতে বাধ্য হয়েছে। রিক্সাচালক আনোয়ার হোসেন ভূমিদস্যু চক্রের ষড়যন্ত্রের আচ পেয়েই প্রথম চন্দন কুমার সাহা ও লুটু সাহার বিরুদ্ধে মাধবদী পৌর মেয়র আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু এই অভিযোগে কোন কাজ হয়নি। আসামি চন্দন কুমার সাহা ও লুটু সাহা মেয়রের আদালতে হাজির হয়নি। পৌর আদালতে আসামিদেরকে হাজির করার জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর গৌতম ঘোষ ও মহিলা কাউন্সিলর শাহানা আক্তারকে সম্পৃক্ত করা হয়। কিন্তু তারা পৌর আদালতের পক্ষে কাজ করতে পারেনি। উপরন্তু ওয়ার্ড কাউন্সিলর গৌতম ঘোষ, ভিটি দখলকারী চন্দন কুমার সাহা ও লুটু সাহার সাথে যোগ দিয়ে তাদের স্বার্থে কাজ করেন। এই অবস্থা টের পেয়ে রিক্সাচালক আনোয়ার হোসেন আশ্রয় নেন নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের। বিজ্ঞ আদালত আনোয়ার হোসেনের ভিটেবাড়িতে স্থিতাবস্থা জারী করেন। পাশাপাশি এ ব্যাপারে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে নির্দেশ দেন। আদালতে মামলা দায়েরের পরই চন্দন সাহা ও লুটু সাহা মাধবদী থানার ওসি ইলিয়াছকে প্রভাবিত করে রিক্সাচালক আনোয়ার হোসেনের ভিটেবাড়ি দখল করে। পরে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়র মিল্টন রায় একটি লিখিত প্রতিবেদনে জানায় যে, ভূমির মালিক বাদী আনোয়ার হোসেনের পিতা মৃত আমির হোসেন। আনুমানিক দেড় মাস পূর্বে লুটু ও চন্দন কুমার সাহা মাটি ভরাট করে ভিটেবাড়ি তার দখলে নেয়। মামলা দায়েরের পর এখন রিক্সাচালক আনোয়ার হোসেনের অবস্থা চিড়ে চেপ্টা হবার দশা। একদিকে হচ্ছে থানার ওসি, আরেক দিকে হচ্ছে মাধবদী শহরের পৌর কাউন্সিলর। এরপর চন্দন কুমার সাহা ও লুটু সাহার মত দুই ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর চাপে আনোয়ার হোসেন এখন সার্বক্ষণিক উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। মামলা তুলে নেয়ার জন্য তাকে বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে ভূমিদস্যু চক্র। একদিকে পুলিশের ক্রয় ফায়ারের ভয়, আরেকদিকে কমিশনার ও ব্যবসায়ীদের চাপে সে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এই অবস্থায় তার পক্ষে এখন সাধারণ মানুষ।
তারা জানায়, আনোয়ার হোসেন প্রথমে থানায় মামলা করতে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে সে বাধ্য হয়ে পৈত্রিক ভিটেবাড়ির মায়ায় আদালতে মামলা করতে বাধ্য হয়েছে। এই মামলার মাধ্যমে প্রকারান্তরে মাধবদীর একটি শক্তিশালী ভূমিদস্যু চক্রের মুখোশ সামান্য হলেও উন্মোচিত হয়েছে। চন্দন কুমার সাহা ও লুটু সাহা নরসিংদী শহরেও কয়েকটি বির্তকিত জায়গা ক্রয় করেছেন। ঘাপলা থাকার কারণে বর্তমানে তারা এসব জায়গা দখলে নিতে পারছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ