বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৩২ জন মুক্তিযোদ্ধার নামের চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে বাড়ি বরাদ্দের তালিকায় যেসব মুক্তিযোদ্ধার নামে রয়েছে তাঁদের বেশির ভাগই বিত্তবান, বিপুল সম্পদের মালিক । জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বাছাই কমিটির সদস্যদের আত্মীয় স্বজন এবং ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনাসহ অন্যত্র বাড়ী করে স্থায়ীভাবে বসবাসরত ব্যক্তিদের নাম রয়েছে প্রকাশিত তালিকায়।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সতের লাখ টাকা। মূল্যবেশি হওয়ায় বরাদ্দ পেতে অনেকই মরিয়া হয়ে উঠেছে, অনেকে নিজের নামের সম্পত্তি অন্য ওয়ারিশদের নামে রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে নিজেকে ভূমি হীন দাবী করেন ।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা যায়, মুজিব শত বর্ষ উপলক্ষে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি নির্মানের জন্য ইউএনও , সমাজ সেবা অফিসার, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডাররের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ২৫ অক্টোবর রাতে ৩২ জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার নামে বাড়ী বরাদ্দের চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। প্রকাশিত তালিকায় ৩২ জনের মধ্যে ২০জনই ধনাঢ্য । অনেকের সন্তান প্রবাসে রয়েছে এবং অনেকের সন্তান সরকারি চাকুরী করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চুড়ান্ত তালিকায় নাম থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আবুল হোসেন খান সুফি'র শাহরাস্তি উপজেলায় রাগৈ গ্রামে বাড়ী রয়েছে, তাঁর ছেলে সরকারি চাকুরী জীবি। আবদুর রশিদ পাটওয়ারীর এক ছেলে প্রবাসে রয়েছে এবং তিনি বাছাই কমিটির সদস্য সালেহ আহম্মেদের ভাই। নুরুল আমিন দীর্ঘ দিন প্রবাসে ছিলেন তিনি বাছাই কমিটির সদস্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই। সিরাজুল ইসলাম স্ব পরিবারে ঢাকায় থাকেন, ঢাকাস্থ ফলয়েল মার্কেটে দোকান রয়েছে এবং একমাত্র ছেলে প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই। সাখাওয়াত উল্যাহ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের পিতা। নুরুল ইসলামের ছেলেদের রামগঞ্জ বাজারে সেবা ফার্মিসীসহ ২টি ঔষধের দোকান রয়েছে। আবদুল জলিলের দুই মেয়ে আমেরিকা প্রবাসী একমাত্র ছেলের নামে পৌর শহরে সরকারী এক একর সম্পত্তিসহ মালিকিয় অনেক সম্পদ রয়েছে। ইদ্রিস মিয়া পাইনের এক ছেলে প্রবাসে থাকে। সিরাজুল হকের এক ছেলে সেনাবাহিনীতে এবং অপর ছেলে স্কুলে কর্মরত রয়েছে।আব্দুল মান্নানের এক ছেলে প্রবাসে রয়েছে।তাজুল ইসলামের দুই ছেলে প্রবাসে থাকে।
শেকান্তর ভূইয়া স্ব পরিবারে খুলনা থাকে, সেখানে তার বাড়ী রয়েছে।তোফাজ্জল হোসেনের প্রবাস ফেরত দুইছেলে ব্যবসা করে এবং এক ছেলে প্রবাসে রয়েছে। নূরুল ইসলাম লাতু পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে সদ্য অবসর গ্রহন করেন, স্ব পরিবারে মিরপুর থাকেন। আমিন উল্যার এক ছেলে ইটালি থাকেন অন্যছেলে প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত, তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে ঢাকায় থাকেন। তোফায়েল আলম মনুর এক মেয়ে সরকারি চাকুরী করে এবং তিনি পৌর সহরে অনেক সম্পদের মালিক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, বাছাই কমিটির দুই একজন সদস্য অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রবাদ্দ করা বাড়ি গুলো বিত্তবানদের নামে অন্যায় ভাবে বরাদ্দ দিয়েছেন । সরকারের উচিত বিষয়টিতে নজর দেওয়া।
বাছাই কমিটির সদস্য সমাজ সেবা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, তাদের কাছে অনেক তথ্য গোপন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাপ্তি চাকমা জানান, প্রায় সাড়ে পাঁচ শত ভাতা ভোগী মুক্তিযোদ্ধার মধ্য থেকে বত্রিশ জনকে খুঁজে বেরকরা কষ্টকর। কেউ চাইলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে আপিল করতে পারবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।