Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ওবামার আঙুলে কালেমা লেখা আংটি

প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিরাব ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে নিয়ে আবারও প্রচারণায় নেমেছে যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল খ্রিস্টান গণমাধ্যম ‘ডব্লিওএনডি ডট কম’। গণমাধ্যমটির নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওবামা গত ৩০ বছর ধরে তার হাতে যে আংটিটি পরে আসছেন তাতে মুসলিমদের ধর্মবিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত কালেমা খোদাই করা নকশা রয়েছে। এর আগেও ওবামাকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে ওয়েবসাইটটি। ২০০৮ সালে মার্কিন নির্বাচনের সময় ওবামাকে মার্কিন নাগরিক নয় বলে আখ্যায়িত করেছিল গণমাধ্যমটি। এছাড়া ২০০৯ সালে মিশরের কায়রোতে দেয়া বক্তব্যের কারণে তাকে মুসলিমভাবাপন্ন বলেও মন্তব্য করে ডব্লিওএনডি। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের রক্ষণশীল গণমাধ্যম ডব্লিওএনডি ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক জোসেফ ফারাহ নিজেও একজন রক্ষণশীল খ্রিস্টান। তার স্ত্রী এলিজাবেথ ফারাহ রক্ষণশীল প্রোটেস্টেন্ট খ্রিস্টানদের সংগঠন এভানজেলিক্যাল ক্রিশ্চিয়ানে’র একজন নেত্রী। এখন বারাক ওবামার হাতের আংটিকে কেন্দ্র করে তাকে মুসলিম হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওবামা পড়াশুনা করেছেন দেশটির হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। ছাত্রজীবন থেকেই একটি আংটি তিনি তার হাতে পরতেন।
১৯৯২ সালে তিনি যখন বিয়ে করেন, তখনও তার হাতে একই রকম একটি আংটি পরিয়ে দেন তার স্ত্রী মিশেল ওবামা (তখন তার নাম ছিল মিশেল রবিনসন)। গণমাধ্যমটির দাবি, ওবামার ৩০ বছর ধরে পরে আসা আংটিটির নকশা আরবি ভাষায় লিখিত। একজন আরবি ভাষাবিদের সাক্ষাৎকার নিয়ে বলা হয়েছে, তার আংটিতে খোদাই করা নকশাটি ‘কালেমা শাহাদাত’। যার অর্থ আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। এই কথাটির মাধ্যমেই মুসলিমরা তাদের ধর্মবিশ্বাসের স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। ইসলামের পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের মধ্যে এটিই প্রথম। এর মাধ্যমে আল্লাহকে একক এবং মুহাম্মদ (স.) কে তার প্রেরিত পুরুষ বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়। একজন মুসলমানের জন্য কালেমা শাহাদাত স্বীকার করা বাধ্যতামূলক।
ওবামার আংটির ছবি দেখে মিশরের আরবি ভাষা বিশেষজ্ঞ ড. মার্ক এ গ্যাব্রিয়েল একে কালেমা শাহাদাত হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি একে কালেমার প্রথমাংশ বলে জানান। অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। ওবামার ১৯৮১, ১৯৮৩ এবং ১৯৮৮ সালের বেশ কয়েকটি ছবিতেও তাকে এই আংটি পরা অবস্থায় দেখা যায়। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পুরো সময়টা জুড়ে তার হাতে ছিল এই আংটি। আরবি ক্যালিগ্রাফিতে এ ধরনের নকশা সচরাচর দেখা যায়। বিশেষ করে কোরানের কোনো বার্তা-সংবলিত নকশায় বেশি দেখা যায় বলে মন্তব্য করেন গ্যাব্রিয়েল। ২০০৮ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের কলামিস্ট নিকোলাস ক্রিস্টোফকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হয় ডব্লিওএনডি’র প্রতিবেদনে। তাতে বলা হয়েছে, ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় থাকার সময়ে বারাক ওবামাকে প্রতিদিন আজান দিতে হতো। যার অর্থ, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই।
ওবামার হাতের আংটির একটি নকশা নিয়ে এ ধরনের অপপ্রচারে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার কারণে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাকে মেনে নিতে পারেনি রক্ষণশীলরা। তখন থেকেই ওবামাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচারে নেমেছে তারা। আর ডব্লিওএনডি অনেকটা ঘোষণা দিয়েই এ ধরনের প্রচারণা শুরু করেছিল। ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবামার আঙুলে কালেমা লেখা আংটি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ