Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জঙ্গিবাদকে রোখা না গেলে সকল রাজনৈতিক দল অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে : আমির খসরু

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা

| প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম



স্টাফ রিপোর্টার : জঙ্গিবাদকে রুখা না গেলে সকল রাজনৈতিক দল অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল সোমবার বিকালে এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এই আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, জঙ্গি সকলের শত্রæ এবং বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করা হয়েছে, গণতান্ত্রিক যে ঘাটতি সৃষ্টি করা হয়েছে, মানবাধিকারের যে ঘাটতি সৃষ্টি করা হয়েছে, আইনের শাসনের যে ঘাটতি সৃষ্টি করা হয়েছেÑ এই ঘাটতিটা পূরণ করবে জঙ্গিরা। এটাই নিয়ম। আমরা মনে করি, জঙ্গিকে যদি দমন করতে হয়, এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে গণতান্ত্রিক অধিকারের মাধ্যমে, মানবাধিকারের মাধ্যমে, আইনের শাসনের মাধ্যমে। আর যদি সেটা না করা হয়, যখন এই উত্থান হবে আমরা তখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবো। বিএনপি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে, আওয়ামী লীগ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে, ওই সাংবাদিক ভাইয়েরা যারা আছেন উনারাও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে।  
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারের প্রতি আহবান রেখে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা কেউ জঙ্গি শক্তির উত্থান চাই না। আমার অনুরোধ- বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রবর্তন করুন। একটি নির্বাচিত সংসদ ও সরকার থাকুক। যাদের জনগণের ওপর আস্থা থাকবে। এর বাইরে আর কোনো সমাধান নাই। এর বাইরে সমাধান করতে চাইলে বাংলাদেশকে আগুনের মুখে ঠেলে দেয়া হবে।  
জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও জিয়াউর রহমান শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এখন আবার জঙ্গির কথা আসছে। কারণ তাকে তো টিকে থাকতে হবে, জনগণের প্রতি যার আস্থা নাই, তাকে টিকে থাকতে হবে জঙ্গির দোহাই দিয়ে, তাকে টিকে থাকতে হবে উন্নয়নের দোহাই দিয়ে, তাকে টিকে থাকতে হবে পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে। ভারত আমাদের থেকে ট্রানজিট নিয়েছে, করিডোর নিয়েছে। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৭ এপ্রিল ভারত যাচ্ছেন। তাড়াহুড়ো করে প্রতিরক্ষা চুক্তি। এর কোনোটাই বাংলাদেশের আইনগতভাবে ভারতকে দেয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।  
আন্তর্জাতিক নদীর পানি বন্টন আইনের আওতায় বাংলাদেশ তিস্তার পানিসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ন্যায্য হিস্সা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিএনপির করেছে দাবি করে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সৃজনশীলতা ও সম্ভাবনাময়কে মুক্ত করে দিয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করে দিয়ে সব মেজর অর্থনৈতিক সংস্কার করেছেন।
পরবর্তীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই সংস্কারগুলো অব্যাহত রেখেছেন। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলব, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ অবধি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো মেজর সংস্কার করতে পারে নাই বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য।  
তিনি বলেন, যতগুলো বড় বড় সংস্কার হয়েছে অর্থনীতির জন্য, যে কারণে বাংলাদেশ আজকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে এরকম দুঃশাসনের মধ্যেও সেটা একমাত্র বিএনপির অর্থনৈতিক সংস্কারের কারণেই।  
প্রেসিডেন্ট জিয়ার আমলে রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্প কল-কারখানা ব্যক্তি মালিকানায় ছেড়ে দেয়া, বেসরকারি খাতের সংস্কার, ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা চালু, রাজস্ব আদায়ে ভ্যাট (ভিএটি) প্রথা চালু, গ্রামীণ অর্থনীতি ও স্বনির্ভর জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সেচ প্রকল্প চালু, বাংলাদেশ ব্যাংকের সংস্কারসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্কারেরর কথা তুলে ধরেন আমীর খসরু।
আজকে যে ভ্যাট (ভিআইটি) এটা বিএনপি করেছে। এটা করার সময়ে আওয়ামী লীগ কীভাবে বিরোধিতা করেছিলো। আজকে কিন্তু রাজস্ব আয়ের মূল আয় আসছে এই ভিআইটি থেকে। আজকে সরকার গণতন্ত্রের চেয়ে উন্নয়নকে বড় করে দেখছে। প্রত্যেকটি স্বৈরাচারের চরিত্রে এটা পাবেন। আইয়ুব খানের সময় দেখেন নাই, সে আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, সে উন্নয়নের ধোঁকা দিয়ে দেশ পরিচালনার চেষ্টা করেছে। যার ফল হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ।  
সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের  মধ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান জেড এ তাহমিদা বেগম, বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক গাজী আব্দুল হক, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের  চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, ডা. হারুনুর রশীদ, কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুর রহমান ভুঁইয়া, সাব্বির  মোস্তফা খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জঙ্গি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ