Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চাপে মিয়ানমার

| প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনী বর্বোরচিত হামলা ও হত্যাযজ্ঞ নিয়ে চাপে রয়েছে দেশটির সরকার। যদিও তারা বারবারই নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে আসছে। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের নিয়ে স্বাধীনভাবে জাতিসংঘ তদন্ত দল মিয়ানমারে গিয়ে কাজ করতে দেবে বলে প্রতিশ্রুত দিয়েছিলেন দেশীটর গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী হিসেবে পরিচিত অং সান সুচি। তবে জাতিসংঘ দলকে রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন সুচি। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ঘটনার তথ্য অনুসন্ধানে একটি তদন্ত দল পাঠিয়েছিল। তবে রাখাইন রাজ্যের আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে ঢুকতে দেয়নি মিয়ানমার।
ব্যাংকক পোস্টের খবরে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ (এইচআরসি) যে অনুসন্ধান মিশন পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল তা প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। গত শুক্রবার রাতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক তদন্ত মিশন গঠন বিষয়টির সমাধানের পরিবর্তে এটিকে আরও উস্কে দিবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এইচআরসির এ পদক্ষেপ ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি বিচার করে নেওয়া হয়নি এবং মিয়ানমার সরকার দেশটির জনগণের স্বার্থে মানবাধিকার রক্ষায় পূর্ণ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এর আগে গত শুক্রবার জেনেভায় অনুতি এইচআরসির ৩৪তম অধিবেশনে ভোটাভুটি ছাড়াই প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে অনুমোদিত হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়, দোষীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ওই তদন্ত শুরু হবে। সেপ্টেম্বরে তদন্তকারীরা মৌখিকভাবে তদন্তের তথ্য জানাবে আর আগামী বছরের একই সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবে। চীন, ভারত, কিউবাসহ কয়েকটি দেশ ওই প্রস্তাব থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বাহিনীর নির্যাতনের কারণে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে সেখানে তদন্ত দল পাঠানোর প্রস্তাবটি পাশ হওয়ার পর মিয়ানমার সরকার এর প্রতিবাদ জানায়্ তারা বলে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। রাখাইন রাজ্যে আসলে কী ঘটছে তা সরেজমিনে তদন্তের নিয়ে আন্তর্জাতিক চেষ্টায় মিয়ানমারের সরকার এখন পর্যন্ত সব চেষ্টায় বাধা দিয়ে এসেছে। তবে এবার যদি মিয়ানমারের সরকার একই কাজ করে তাহলে তাদেরকে জাতিসংঘের এই প্রস্তাবকে অমান্য করতে হবে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে এই প্রস্তাবের উত্থাপন করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সর্ব সম্মতিতে এটি পাসও হয়েছিল। তবে ভারত, চীন আর কিউবা এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। জাতিসংঘের এ প্রস্তাব অনুযায়ী, একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত দল গঠন করে রাখাইন রাজ্যে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখবে। রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে এ দল। তবে জাতিসংঘের এই তদন্ত দল রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ বিষয় অনেকখানি নির্ভর করছে সু চির ওপর। তিনি যদি আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে সেখানে প্রবেশের অনুমতি দনে তাহরে তাকে মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরাগভাজন হতে হবে। আর যদি অনুমতি না দেন দাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে পড়তে হবে। তিনি যখন গৃহবন্দি ছিলেন তখন এই বিশ্ব সম্প্রদাযর তার পাশে ছিল। কাজেই এ নিয়ে বেশ চাপে আছে সু চি। তবে মিয়ানমার শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘ দলকে সেখানে ঢুকতে বাধা দিতে পারে এমন সম্ভাবনাই প্রবল।
উল্লেখ্য, গত বছর অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি,এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। জাতিসংঘ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডেরও অভিযোগ তোলা হয় দুই দফায়। এবারের সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন বলে জানিয়েছে তারা। জাতিসংঘের হিসাব মতে,এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। ২০১২ সালে মিয়ানমার সরকারের মদদপুষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের তান্ডবে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হন। ঘর ছাড়তে বাধ্য হন ১ লাখেরও বেশি মানুষ। নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়েবসাইট।



 

Show all comments
  • এস, আনোয়ার ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:২৫ এএম says : 0
    বয়োজ্যেষ্ঠরা বলেন, কুত্তার লেজ নাকি জীবনভর সোজা চুংগায় ঢুকিয়ে রাখলেও তার মুত্যুর আগে বের করলে দেখা যাবে যে বাঁকা সে বাঁকাই। মুখে যে যতো বেশী গনতন্ত্রের বুলি আওড়ায় পার পেয়ে গেলে সে-ই ততোবেশী গনতন্ত্র হত্যা করে। অংসান সুচিই তার জ্বলন্ত প্রমান। এই ....... নারীর আমলেই সব চাইতে বেশী মুসলিম নিহত, নিগৃহীত ও লাঞ্চিত হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ