পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা : বাগেরহাটে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী কার্ডধারীদের মাঝে ভাতার টাকা বিতরণে অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়নের প্রতি কার্ডধারীর কাছ থেকে খরচের কথা বলে ২ থেকে ৩শ’ টাকা করে আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট কার্ডধারীরা। আর এই টাকা নিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সদস্যরা কার্ডধারীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফেরত দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে চেয়ারম্যান কার্ডধারীদের কাছ থেকে খরচের টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রশাসনও টাকা আদায়ের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।
রোববার চেয়ারম্যান শেখ শমসের আলীর নির্দেশে বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী কার্ডধারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। যার সত্যতা পেয়েছে প্রশাসন। ভিডিও ক্লিপটি সংরক্ষণ করা হয়েছে।
সমাজসেবার গোটাপাড়া ও বেমরতা ইউনিয়নের সমাজকর্মী মো: আবুল বাশার বলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী কার্ডধারীর সংখ্যা ৯৭৭ জন। বয়স্ক, বিধবাদের মাসিক পাঁচশ’ টাকা করে এবং প্রতিবন্ধীদের ছয়শ’ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। তাদের নামে বরাদ্দ হওয়া টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করার নিয়ম থাকলেও গোটাপাড়া ইউনিয়ন ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই কার্ডধারীদের পরিষদে ডেকে টাকা বিতরণ শুরু করেন।
বয়স্ক ভাতার কার্ডধারী গোপালকাঠি গ্রামের সেকেন্দার আলী বলেন, গত রোববার বয়স্ক ভাতার টাকা তুলতে ইউনিয়ন পরিষদে যাই। সেখানে গেলে চেয়ারম্যান শেখ শমসের আলী ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকা তুলতে খরচের জন্য মোট আড়াইশ’ করে টাকা লাগবে বলে টাকা দাবি করেন। আমরা সবাই তাদের দাবি করা টাকা দিয়ে ভাতার টাকা তুলে নেই।
তিনি আরো বলেন, সোমবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের (চেয়ারম্যানের) চৌকিদার বাড়িতে এসে আমাদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা ফেরত দিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে জানতে গোটাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ শমসের আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এসব কার্ডধারীর প্রত্যেকের নামে ব্যাংকে হিসাব খোলা রয়েছে। তারা ছাড়া অন্য কেউ টাকা উত্তোলনের সুযোগ নেই।
গোটাপাড়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সদস্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকরা বলেন, রোববার বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী কার্ডধারীদের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াইশ’ টাকা আদায় করা হয়। সোমবার সকালে কার্ডধারীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা চেয়ারম্যান স্যার আমাদের দেন। আমরা সেই টাকা স্ব-স্ব এলাকায় গিয়ে ফেরত দিয়ে দিয়েছি।
কার্ডধারীদের কাছ থেকে পঞ্চাশ টাকা করে আদায় করার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অগ্রণী ব্যাংকের দেপাড়া শাখা ব্যবস্থাপক শংকর কুমার দাস বলেন, আমি গত ১৪ মার্চ থেকে ছুটিতে আছি। বর্তমানে আমার সেকেন্ড অফিসার আবুল কালাম আজাদ ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি কেন তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন তা আমার জানা নেই।
টাকা বিতরণের নিয়ম জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই কার্ডধারীদের প্রত্যেকের নামে ব্যাংকে হিসাব খোলা রয়েছে। এদের ব্যাংকে বসেই টাকা বিতরণের নিয়ম রয়েছে। কার্ডধারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ওই কর্মকর্তা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে টাকা বিতরণ করেছেন তাই শুনেছি।
বাগেরহাট সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: নাজমুল হুদা বলেন, গোটাপাড়া ইউনিয়নের বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী কার্ডধারীদের কাছ থেকে দুই থেকে তিনশ’ টাকা অবৈধভাবে আদায় করেছেন চেয়ারম্যান। ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যাচ্ছে চেয়ারম্যান শেখ শমসের আলীর নির্দেশে তা আদায় করা হচ্ছে। আমি সরেজমিন গিয়ে ৫০ জন কার্ডধারীর সাক্ষ্য নিয়েছি তারা সবাই চেয়ারম্যানকে টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।