নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : বুকের পাটায় বল আছে, এমন একজনকেই তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ের জন্য চেয়েছিলেন হাতুরুসিংহে। হাতটা উঠিয়েছিলেন সাব্বির রহমান রুম্মান। জোরে মারতে পারেন শট, তারপরও কেন ৫ এবং ৬ নম্বরে টি-২০তে ঘুরে-ফিরে ব্যাটিং করবেন? নিজ থেকেই তাই ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশনের দাবিটা ছিল রুম্মানের। ৩ নম্বরে ব্যাটিং অর্ডার নির্ধারিত হওয়ায় দলের দাবিটা মেটাচ্ছেন রুম্মান। সর্বশেষ টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে নেপালের বিপক্ষে তিন নম্বরের প্রথম পরীক্ষায় ২১ রানের ইনিংসটা আহামরি মনে না হলেও ওই ইনিংসটাই কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের চূড়ান্ত পর্বের পথটা করেছে সুগম। কিন্তু জার্গেনসেন সেখানেই থেমেছেন। গতবছর পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ম্যাচ উইনিং ৫১ রানের ইনিংসের পর আরো উপরে ব্যাটিংয়ের দাবিটা তুলেছেন রুম্মান। বিপিএল ‘থ্রি’ তে কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশাল বুলস’কে ৭৯ রানের ম্যাচ উইনিং ইনিংস উপহার দেয়ার পর হাতুরুসিংহেকে আর দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকতে হয়নি, আন্তর্জাতিক টি-২০তে জায়গাটা হয়ে গেছে তার পাকা। সেই থেকে টানা ৭ ইনিংসে তিন নম্বর নির্ধারিত হয়ে গেছে রুম্মানের। এই ৭ ম্যাচে ২ ফিফটি, ৪০’র ঘরে ইনিংস ৩টি! টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান বাংলাদেশে তিনিই একমাত্র।
অভিষেকে ৬ নম্বরে ব্যাটিং, ওই পজিশনে ২ ম্যাচে রান মাত্র ২৩ (গড় ১৩.৫০)। ৫ নম্বরে ৪ ইনিংসে সেখানে গড় ২৪.৩৩ (৭৩ রান)Ñসেখানে ৩ নম্বরে ১০ ইনিংসে রানের সমস্টি তার ৩১১ (৩৮.৮৭)!
গতকাল শ্রীলংকার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে শুরুটা ছিল বিপর্যস্ত চেহারা। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ম্যাথুউজকে ফ্রন্ট ফুটে ডিফেন্স করতে যেয়ে মিঠুন এলবিডাব্লু। পরের ওভারে কুলাসাকেরার বলে মিড অনে খেলতে যেয়ে মিড অফে দিয়ে এলেন সৌম্য ক্যাচ! পরিবর্তিত চেহারার উইকেটে হতশ্রী চেহারায় ২ ওপেনারকে ফিরে আসতে দেখে নিজ থেকেই চেপেছিল জিদ রুম্মানের। লংকান পেসার কুলাসাকেরার দ্বিতীয় ওভারে ৪, ৬, ৪, ৪=১৮ রানে মাতিয়েছেন শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম। তিসারা পেরেরাকে প্রথম ওভারে শিক্ষা দিতে মেরেছেন তিন তিনটি বাউন্ডারি। সিহান জয়সুরিয়া নামের অফ স্পিনারকে একটু বেশিই বাগে পেয়েছিলেন। তার প্রথম বলে স্বাগত ছক্কায় ৩৮বলে টি-২০ ক্যারিয়ারে তৃতীয় ফিফটি উদাপনে বীরকে দাঁড়িয়ে জানিয়েছে অভিনন্দন দর্শক। ভাগ্যটা আসলেই বীরদের সহায়ক হয়, ওই ছক্কার শটটি ডিপ মিড উইকেটে বাউন্ডারি রোপের বড়জোর এক গজ সামনে দাঁড়িয়ে ক্যাচে পরিণত করতে চেষ্টা করে বিফল কাপুগেদারা। ভাগ্য খুলে যাওয়া রুম্মান পরের ২ বলকে পরিণত করেছেন বাউন্ডারিতে। স্কোর শিটে ২ রান উঠতে ২ উইকেট হারানোর পর ৩য় জুটিতে সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে ৮২ রানের পার্টনারশিপে দিয়েছেন নেতৃত্ব রুম্মানই। যে পার্টনারশিপে বাংলাদেশের সবচেয়ে টি-২০ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিবের অবদান যেখানে ২২, সেখানে রুম্মানের ৫৮। এমন দিনে সেঞ্চুরিটি তার প্রাপ্য ছিল। নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস ছাড়িয়ে যেভাবে এগুচ্ছিলেন, তাতে ৪ বছর আগে এই মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তামীমের হার না মানা ৮৮ টপকে টি-২০তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসের দিকে চোখ রাখাই ছিল স্বাভাবিক রুম্মানের। তবে চামিরাকে স্কয়ার লেগের উপর দিয়ে ছক্কায় মাতিয়ে, পরের বলেও একই শটে হয়েছেন প্রলুদ্ধ। ডেলিভারিটি ছিল শ্লোয়ার, মিস টাইম হয়ে ডিপ মিড উইকেটে পড়েছেন ধরা। ৫৪ বলে ১০ চার ৩ ছক্কায় ৮০ রানের ইনিংস শেষে পেয়েছেন বাহাবা। তবে এই ইনিংসে তৃপ্ত হতে পারেননি রুম্মান। উইকেটে সিনিয়র ব্যাটসম্যান সাকিববে দিচ্ছেন প্রেরণা, দলের বড় পুঁজিতে তার টিকে থাকাটাই ছিল জরুরি।
রুম্মানের আউটে পার্টনার হারিয়ে সাকিবও ফিনিশ করে আসতে পারেননি। লংকান পেসার চামিরার বাউন্সারে উইকেটের পেছনে দিয়ে এসেছেন ক্যাচ (৩৪ বলে ৩২)। তবে শ্লগের আগ্রাসী রূপটা এই ম্যাচেও দেখিয়েছেন মাহামুদুল্লাহ। তার ১২ বলে ২৩ রানের নট আউট ইনিংসে বাংলাদেশ ইনিংস টেনে নিয়েছে ১৪৭/৭ পর্যন্ত। ১২১, ১৩৩’র পর ১৪৭-এশিয়া কাপে ব্যাটিংয়ের ক্রম উন্নতির দৃষ্টান্ত এটাই। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে টিমমেট ব্যাটসম্যানদের হয়ে দিয়েছিলেন কথা, রেখেছেন সে কথা রুম্মান। ২০১০ সালে গুয়াংজু এশিয়াডে বাংলাদেশের স্বর্ণপদক জয়ে ছিপছিপে ছেলেটির ব্যাটিং দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে সাবেক বোর্ড প্রেসিডেন্ট আ.হ.ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) প্রশ্ন করেছিলেন-‘এই শরীর নিয়ে কীভাবে এতো বড় ছক্কা মার।’ ওই প্রশ্নে লাজুক রুম্মান পেয়েছিলেন লজ্জা, তবে বড় শট নেয়াটা যে তার স্বভাবজাত, তা কিন্তু জানিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
ভাভরিঙ্কার দুবাই জয়
স্পোর্টস ডেস্ক : দুবাই টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে নিয়েছেন র্যাঙ্কিংয়ের চার নম্বরে থাকা স্ট্যানিলাস ভাভরিঙ্কা। গেলপরশুর ফাইনালে মার্কোস বাগদাতিসকে ৬-৪, ৭-৬, (১৫/১৩) সেটে হারিয়ে ক্যারিয়ারের ১৩তম শিরোপা জয় করেন সুইস তারকা। ম্যাচটি প্রায় দুই ঘণ্টা সময় ধরে চলে। বাগদাতিসের বিপক্ষে জয় পেতে বেশ ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাকে। অবশেষে শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারের পরে জয়টা তার ঝুলিতেই উঠেছে। গত আট বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দুবাই টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছেন ভাভরিঙ্কা। সেমি ফাইনালে নিক কিরজিওস পিঠের ইনজুরিতে ম্যাচ থেকে সরে দাঁড়ান। সেই সসময় ৬-৪, ৩-০ সেটে এগিয়ে ছিলেন ফেদেরারের উত্তরসূরী। চলতি মৌসুমে এই নিয়ে ওয়ারিঙ্কার দ্বিতীয় শিরোপা জয় করা হলো। বছরের শুরুটা তিনি চেন্নাই ওপেন জয় দিয়ে শুরু করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।