পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নাগরিকদের ভোগান্তি দূর করতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগকে অধিদপ্তরে রূপান্তর করার প্রস্তাব উঠছে। একই সাথে এই অণুবিভাগে জনবল কাঠামো বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে নির্বাচন কমিশন সচিবকে।
বর্তমানে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগে বিদ্ধমান পদের সংখ্যা ৭১টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ৩৬ জন। শূন্য পদ ৩৫টি। এছাড়া জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের অধীন প্রকল্পে ২০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছেন। সারা দেশে পরিচয়পত্র প্রদান করতে এ জনবল খুবই অপ্রতুল। এ বিভাগে প্রয়োজনীয়সংখ্যক জনবল বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে। এতে মহাপরিচালক পদ একটি, অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদ ৫টি, পরিচালক পদ ১০টি, উপ-পরিচালক পদ-২১টি, সহকারী পরিচালক ৪০টি এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেট পদ ১০৮টিসহ মোট ৪৮৯টি পদের প্রস্তাব দেয়া হবে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, আইডিইএ প্রকল্পের আওতায় আগামী জুনের মধ্যে সাড়ে নয় কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেয়ার কথা রয়েছে। তা কখনো সম্ভব হবে না। কারণ এ বিভাগে স্থায়ী জনবলের অভাব। ১৬ কোটি মানুষের জন্য মাত্র ৩৫ জন কর্মকর্তা বাকিরা সব প্রকল্পের। তিনি বলেন, দেশের নাগরিকদের ভোগান্তি দূর করতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগ থেকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অধিদপ্তরে করার জন্য একটি প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। যে কোনো সময় আমরা নির্বাচন কমিশন সচিবকে দিব।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের এক কর্তকর্তা বলেন, এক সময় জাতীয় পরিচয়পত্র মানুষ নিতে চাইতো না। এখন দেশের সকল নাগরিক এ কার্ড নিতে চায়। জনগণের চাহিদার তুলনায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগে জনবল নাই। পরিচয়পত্র নিতে এসে অনেক মানুষকে হয়রানি হতেই হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আগামীতে দেশের নাগরিকদের যাতে কোনো হয়রানি হতে না হয় সেজন্য অধিদপ্তর করার প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অুুবিভাগকে অধিদপ্তর করা হলে দেশের জনগণ সুযোগ-সুবিধা পারে এতে করে হয়রানি দূর হবে। এখন এটি প্রকল্প দিয়ে চলছে। প্রকল্প শেষ হলে আবার নতুন লোক আসে। আবার যখন বরাদ্দ হয় হয় তখন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের চেয়ে একটি স্থানীয় সমাধন করা ভালো।
নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এটি এখনো আমার কাছে আসে নাই। আসলে বলতে পারবো। অধিদপ্তর করা হবে কিনা তা বলতে পারছি না। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিগত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে সংবিধানের ৯৩(২) অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ ২০০৮ জারি করা হয়। নবম সংসদের প্রথম অধিবেশনে ২৫ জানুয়ারি অধ্যাদেশটি উপস্থাপন করা হয় এবং ৩০ দিন পর অধ্যাদেশটির কার্যকারিতা অবলুপ্ত হয়। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন, ২০০৯ সংসদে উপস্থাপন করা হয়। পরবতীতে বর্তমান সরকার অধ্যাদেশটিকে ২০১০ সালে জাতীয় পরিচপত্র নিবন্ধন আইন করা হয়। এর পরে ২০১১ সালে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগ কিছু জনবল নিয়োগ করে। ২০১৩ সালে আবারো আইনের কিছু ধারা সংশোধন করা হয়। সর্বশেষ ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রবিধানমালা, ২০১৪’-এর সংশোধন করে নির্বাচন কমিশন। ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ১৮ মাসের মধ্যে ৯০ মিলিয়ন (৯ কোটি) স্মার্টকার্ড তৈরি করে দেয়ার জন্য ফ্রান্সের অবার্থার টেকনলোজিস নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। ফলে ২০১৬ সালের ১১ ও ১২ মে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে রিভিউ মিটিংয়ে ২০১৭ সালের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়। বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দলও স্মার্টকার্ড প্রকল্প পরিদর্শনে বাংলাদেশে গত বছর। প্রতিনিধি এ বিষয়ে ইসির সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অণুবিভাগ থেকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কাছে পাঠানো প্রস্তাবনায় বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী ৯০ মিলিয়ন কার্ড পর্যায়ক্রমে অবার্থার টেকনোলজিসের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কার্ড প্রস্তুত ও বিতরণের জন্য নির্ধারিত সময়সূচি কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। যা সমন্বয়ের জন্য সরেজমিনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি ও আইডি কার্ড উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন করা প্রয়োজন। এনআইডি অণুবিভাগ সিইসিকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল গঠন করে তাতে সদস্য হিসেবে ইসি সচিব সাবেক সচিব ও স্মার্টকার্ড প্রকল্পের সাবেক পরিচালককে রাখার প্রস্তাব প্রকল্প পরিচালককে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে অনুমোদন দেয়া হয়। পরে ফ্রান্সে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। ইসি সূত্রে জানায়, ২০১৬ সালের জুনে নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড দেয়ার কথা ছিলো ইসির। কিন্তু সময়মতো না দিতে পারার আশঙ্কা ইসি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ব্যয় না বাড়ানোর শর্তে এ প্রকল্পে আঠার মাস সময় বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নেয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও জনগণের কাছে স্মার্টকার্ড বিতরণ শেষ করা নিয়ে দেখা দিয়েছে আশঙ্কা। এ নিয়ে স্মার্টকার্ড উৎপাদন ও বিতরণে জরুরিভাবে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য ইসিকে তাগাদা দিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। স¤প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ইসি সচিবকে এক চিঠিতে জানান, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে ‘ত্রিপক্ষীয় পর্যালোচনা বৈঠকে’ (ট্রাইপারটাইট পোর্টফোলিও রিভিও মিটিং) বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে ইসি সচিবালয়ের বাস্তবায়নাধীন ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিস’ (আইডিইএ) প্রকল্পের বিষয়েও আলোচনা হয়। বিশ্বব্যাংক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পটি ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ সালে সমাপ্ত হবে। কিন্তু প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম জনগণের কাছে এনআইডি কার্ড বিতরণ ইতোমধ্যে আরম্ভ করা সম্ভব হয়নি। আলোচনায় প্রকল্প পরিচালক উল্লেখ করেন, ত্রুটির কারণে চার মাস কার্ড উৎপাদন বন্ধ ছিল এবং এ কারণে কার্ড বিতরণ কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এতে সভায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্ড বিতরণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এ অবস্থায় প্রকল্পের বাকি সময়ের মধ্যে কার্ড উৎপাদন ও বিতরণ কার্যক্রম এবং সফলভাবে প্রকল্প সম্পন্ন করার বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিতে ইসি সচিবকে ইআরডির পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়। ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা কার্যক্রমের পর আঠারোর কম বয়সীদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র দেয়ার এবারই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। ১৮ বছরের কম বয়সীদেরও জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন’ হওয়ার পর তাদের নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে নিবন্ধিত হলেও ১৮ বছর পূর্ণ না হলে কেউ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে ইসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।