পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : কুড়িগ্রামের বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ার ছড়ার বাসিন্দাদের অনেক স্বপ্নের মধ্যে একটি পূরণ হতে যাচ্ছে আগামী ৩ অক্টোবর। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর এইদিন হাতে পাচ্ছেন জাতীয় পরিচয়পত্র ‘স্মার্টকার্ড’। আগামী ২ অক্টোবর ওই কার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই দাশিয়া ছড়ার বাসিন্দাদের অনেকেই এসেছেন ভারত থেকে। অনেকেই সেখানে বসবাস করলেও বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ছিলো না। দুই দেশের স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী, দাশিয়ারছড়াসহ ভারতের ১১১টি ছিটমহল গতবছর ১ আগস্ট প্রথম প্রহর থেকে বাংলাদেশের ভূখ-ে যুক্ত হয়। একইভাবে ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতের অংশ হয়ে যায়। বিলুপ্ত ছিটগুলোর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধনের কাজ শেষে সাড়ে দশ হাজার নাগরিককে ভোটার করে ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ইসি।
স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু ৩ অক্টোবর ‘ঠিকানা বদলে’ অধিকারের স্বপ্ন ছিটমহলে বিলুপ্ত ছিটে সাড়ে ১০ হাজার ভোটার, প্রস্তুত করা হয়েছে। এক বছর আগেও ছিটমহলবাসীর হাতে পরিচয়পত্র বলতে ছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের দেয়া এমন একটি কার্ড নিয়ে চলাফেরা করতে ছিটমহলবাসীরা। তারা এখন বাংলাদেশের নাগরিকদের উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে পারছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ ছাড়াও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব ওই অনুষ্ঠানে থাকবেন।
নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, আগামী ২ অক্টোবর নাগরিকদের উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ির দাশিয়ার ছড়ায় স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু করবেন। এর পরে রাজধানীর অন্তত দু’টি ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার শহর থেকে তিন কিলোমিটার ভেতরে ফুলবাড়ি উপজেলা। এ উপজেলার ১ হাজার ৬৪৩ একর আয়তনের দাশিয়ারছড়া বাংলাদেশের ভেতরে সর্ববৃহৎ ভারতীয় ছিটমহল হয়েছিল ছয় দশকেরও বেশি সময়। দেশের ভিতরে আর এক দেশ সীমানার ভেতরে বলে এসব ছিটমহলে হাসপাতাল, বিদ্যুৎ, স্কুল-কলেজ বা বিচার-প্রশাসন ছিল না। মূল ভূখ-ে যাতায়াত করতে হলে তাদের দেখাতে হত এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানের দেওয়া পরিচয়পত্র।
আয়করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর প্রাপ্তি ও নবায়ন, পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও নবায়ন, চাকরির জন্য আবেদন, স্থাবর সম্পত্তি কেনা-বেচা, ব্যাংক হিসাব খোলা ও ঋণপ্রাপ্তি, সরকারি বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন, সরকারি ভর্তুকি, সাহায্য, সহায়তা প্রাপ্তি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিমানবন্দরে ই-গেইট-এর মাধ্যমে আগমন ও বহির্গমন সুবিধা, শেয়ার আবেদন ও বিও অ্যাকাউন্ট খোলা, ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংযোগ গ্রহণ, মোবাইল ও টেলিফোন সংযোগ গ্রহণ, বিভিন্ন ধরনের ই-টিকেটিং, সিকিউরড ওয়েব লগ ইন, ই-ফরম পূরণে নাগরিকের সঠিক ও নির্ভুল তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোজনের কাজে ১০ ডিজিটের এই স্মার্টকার্ড ব্যবহার করা যাবে। সেই দাশিয়ারছড়ার মানুষ এখন বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে এই স্মার্টকার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
যেমন হচ্ছে বাংলাদেশের স্মার্টকার্ড যেমন হচ্ছে বাংলাদেশের স্মার্টকার্ড আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটারদের হাতে এই কার্ড পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে ইসি। শুরুতে জটিলতা এড়াতে ঢাকা ও দাশিয়ারছড়ার কাজকে নেয়া হয়েছে ‘পাইলট প্রকল্প’ হিসাবে।
নির্বাচন কমিশন সচিব আরো বলেন, ঢাকা মহানগরীর সব জায়গায় একসঙ্গে স্মার্টকার্ড বিতরণ সম্ভব হবে না। তাই আগে পরীক্ষামূলকভাবে দু’টি এলাকায় বিতরণ শুরু করা হবে। সেই অভিজ্ঞতা পরে কাজে লাগানো হবে। স্মার্টকার্ড বিতরণ বিশাল কর্মযজ্ঞ। আমরা এখনো ব্যাপক প্রচারে যাইনি। কী কী চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে তা জেনে বড় স্কেলে কাজ শুরু করা হবে।
সচিব বলেন, ৩ অক্টোবর কার্ড বিতরণের জন্য ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি করে ওয়ার্ড বেছে নেয়া হবে। গুলশান, ধানমন্ডি বা বনানী এলাকায় এ কাজ শুরু হতে পারে। পরে মহানগরীর অন্যান্য ওয়ার্ডে বিতরণের সূচি জানিয়ে দেওয়া হবে।
কুড়িগ্রামের দাশিয়ারছড়ার পর ফুলবাড়ী উপজেলায় সব নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড দেয়া হবে বলে জানান সচিব। স্মার্টকার্ড বিতরণের সময় দশ আঙ্গুল ও আইরিশের প্রতিচ্ছবি সংগ্রহ করা হবে। ভোটারদের হাতে থাকা আগের লেমিনেটেড কার্ড জমা দিতে হবে সে সময়।
রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ৩ অক্টোবর কুড়িগ্রামে স্মার্টকার্ড বিতরণ কাজ শুরু করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দাশিয়ারছড়ায় ভোটারদের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেয়া হবে ওইদিন। তারা প্রথমবারের মতো ভোটার হয়েছেন। প্রথম সুযোগেই তারা পাবেন স্মার্টকার্ড। স্মার্টকার্ড নেয়ার সময় নাগরিকদের ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি দিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রায় ১০কোটি ভোটারের মধ্যে প্রায় ৯ কোটির হাতে লেমিনেটেড এনআইডি রয়েছে।
ইসি’র পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে ঢাকা সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলা, পৌরসভা ও সবশেষে ইউনিয়ন পর্যায়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সকল ভোটারের হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসি’র। ওই সময়ই বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।