পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অত্যাধুনিক অ্যাটাক হেলিকপ্টারের জন্য মস্কো যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসবে ৮টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানও
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : রাশিয়া থেকে এবার পাঁচটি অত্যাধুনিক এমআই-১৭ হেলিকপ্টার কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। হেলিকপ্টার কিনতে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে ঢাকা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আর এই বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আগামী মাসে রাশিয়া যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি সেখানে ১১ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি সফরে থাকবেন। ওই সময়ে তিনি এই বিষয়ে আলোচনা করবেন। এর পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও আলোচনা করবেন। এছাড়াও তার সফরের সময়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। এগুলো হলো, টেলিকম ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক, সংবাদ সংস্থা বাসস এবং ইথার তাসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক এবং সংস্কৃতিক সহযোগিতা ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের আমন্ত্রণে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সফরে রাশিয়া যাচ্ছেন।
গূত্র জানায়, এ হেলিকপ্টারগুলো কেনার পর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কাজে লাগানো হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১১ থেকে ১৩ এপ্রিল দ্বিপাক্ষিক সফরে রাশিয়া যাবেন। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের বাংলাদেশ সফরের কথা চলছে। তখন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
এমআই ১৭ হেলিকপ্টার রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক এক সামরিক হেলিকপ্টার। এটি এম আই-৮ হেলিকপ্টারের এক্সপোর্ট ভার্সন। অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বৈরী পাহাড়ি পরিবেশে এই হেলিকপ্টার নির্বিঘেœ ওঠানামা করতে সক্ষম। রাশিয়ার কাজান ও উদেতে দুটি কারখানায় এই সামরিক হেলিকপ্টার নির্মাণ করা হয়। বিশ শতকের আশির দশকে আফগান যুদ্ধে অত্যন্ত বৈরী পার্বত্য পরিবেশে এই হেলিকপ্টার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। হেলিকপ্টার গানশিপ হিসেবে যেমন তেমনি মালামাল ও সৈন্য পরিবহনের কাজেও এই হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হয়। ভারত, আলজেরিয়া, মরক্কো, চীন, আফগানিস্তান ও ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সশস্ত্র বাহিনী এই সামরিক হেলিকপ্টারের ক্রেতা।
সম্প্রতি রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা স্পুতনিক জানিয়েছে, তারও আগে রাশিয়ার কাছ থেকে আটটি যুদ্ধবিমান কিনবে বাংলাদেশ। সে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইউএসি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই আটটি যুদ্ধবিমান সরবরাহ করবে। আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান গত ৬ মার্চ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, যুদ্ধবিমান কেনার জন্য সম্প্রতি একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন। রাশিয়া থেকে বড় ধরনের সামরিক সরঞ্জাম কেনার ঘটনা নতুন নয়।
১৯৯৯ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে আটটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান কেনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ওই সময় থেকে চুক্তির মাধ্যমে প্রতিটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ১ কোটি ১০ লাখ ডলারে কেনা হয়। সাজসরঞ্জামসহ প্রশিক্ষণ, পরিবহনসহ আটটি বিমানের জন্য মোট ১২ কোটি ৪ লাখ ডলার ব্যয় হয়, যা বাংলাদেশী টাকায় ছিল ৫৭৫ কোটি। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে বিমানগুলো বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেগুলো আর বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার দেয়া ঋণে প্রায় আট হাজার কোটি টাকার (১০০ কোটি ডলার) সমরাস্ত্র কিনেছিল। মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শীর্ষ বৈঠকের পর এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর জন্য ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের সমরাস্ত্র কেনা হয়।
এর আগে ২০০৯-১০ অর্থবছরে বিমানবাহিনীর জন্য চীন থেকে কেনা হয় স্বল্প পাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা পদ্ধতি (এসএইচওআরএডি)। এ সময় এফ-৭ বিমানের জন্য চীন থেকে এবং মিগ-২৯ বিমানের জন্য রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র কেনা হয়। ২০১০-১১ অর্থবছরে চতুর্থ প্রজন্মের ১৬টি যুদ্ধবিমান এফ-৭ বিজি ১ এবং রাশিয়ার তৈরি সামরিক হেলিকপ্টার কেনা হয়।
প্রসঙ্গত, বর্তমান ভূরাজনীতি, বিশ্বমঞ্চে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান প্রভাব, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্রসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর কারণে ঢাকা-মস্কোর রাজনৈতিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হতে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, ভূরাজনীতির ফসল হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে কসোভো নতুন রাষ্ট্র হিসাবে উদ্ভূত হয়েছে। রাশিয়া সবসময় এ রাষ্ট্রের বিরোধিতা করেছে। শুধু তাই নয়, কসোভো’র প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রাশিয়া বাংলাদেশকে সবসময় অনুরোধ করেছে; আমরা যেন দেশটিকে স্বীকৃতি না দেই। কসোভো’কে স্বীকৃতি দেয়ার পরই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশের পাশাপাশি রাশিয়ারও আগ্রহ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।