পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : এগিয়ে চলছে ঈশ্বরদী-পাবনা রেললাইন নির্মাণ কাজ। খুব শিগগিরই ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত রেলপথ চালু হবে। তখন ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে পাবনা যাওয়া যাবে। ঈশ্বরদী-পাবনা রেলপথ চালু হলে পাবনা জেলার বাসিন্দাদের এক শ’ বছরের অপেক্ষার পালা শেষ হবে। ব্রিটিশ শাসনামলে পাকশীতে পদ্মা নদীর উপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের সময় একটি লিঙ্ক রেললাইন ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।
এক শ’ বছর আগেই সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে বর্তমান সরকারের আমলে। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রেলকে গুরুত্ব দিয়ে একাধারে উন্নয়ন করে চলেছে। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলকে গণমানুষের পরিবহনে রুপান্তর করতে চান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা একে একে সারাদেশকেই রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনব ইনশাআল্লাহ।
মন্ত্রী বলেন, ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত রেলপথ খুব শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে। আর পাবনা-ঢালারচর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ হতে আরো এক বছর সময় লাগবে। পাবনা-১ আসনের এমপি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শামসুল হক টুকু গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, এ রেলপথ চালু হলে তা হবে পাবনা এলাকার মানুষের জন্য একটি আশ্চর্যতম বিষয়। এই এলাকার মানুষের ৫০ বছরের দাবি ছিল এটি। পাবনাবাসীর স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রেলমন্ত্রী মুজিবুল হককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে প্রমাণীত হলো, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে শেখ হাসিনাই পারে, শেখ হাসিনাই পারবে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমাদের রেলপথমন্ত্রী খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঈশ্বরদী-পাবনা রেলপথ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এ জন্য রেলমন্ত্রীকে পাবনাবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯১৪ সালে পদ্মা নদীর ওপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালু হয়। সে সময় ব্রিটিশরা প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল, একটি লিঙ্ক রেললাইন ঈশ্বরদী হয়ে পাবনা পর্যন্ত যাবে। শেষ পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রæতি আর বাস্তবায়িত হয়নি। ঈশ্বরদী থেকে পাবনা-সাঁথিয়া-বেরা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত রেলপথের দাবিতে পাবনা জেলার বাসিন্দারা দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে আন্দোলন করছে। তাদের সেই দাবি অনুযায়ী বর্তমান সরকার ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের রেল যোগাযোগ উন্নয়নে অনেকগুলো প্রকল্পের মধ্যে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। সেই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের দুই ভাগে ঈশ্বরদীর মাজগ্রাম থেকে ঢালারচর পর্যন্ত রেললাইন ও রেল স্টেশন নির্মাণ কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯৮৩ কোটি টাকা। রেল সূত্র জানায় ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার রেললাইন ও স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত রেল স্টেশন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। গত কয়েকদিন ধরে পাবনা রেল স্টেশনে রেললাইন বসানোর কাজ চলছে। জানতে চাইলে রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আগামী মাসের শেষ দিকে লুপলাইনসহ সব ধরনের রেললাইন নির্মাণ কাজ শেষ হবে। স্টেশন, রেলসেতু, লেবেল ক্রসিং নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। রেল সূত্র জানায়, ৭৮ কিলোমটার দীর্ঘ এই রেলপথে নতুন রেল স্টেশন থাকছে ১১টি। স্টেশনগুলো হবে বি ও ডি ক্যাটাগরির। রেলপথে ছোট বড় মিলিয়ে সেতু আছে ১১৩টি। লেভেল ক্রসিং আছে অন্তত ৫০টি। এই রেলপথ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভ‚মি অধিগ্রহণ করা হয়েছে এক হাজার ১৪ দশমিক ২১ একর।
পাবনা এলাকার বাসিন্দারা মনে করেন, এই রেলপথ চালুর মাধ্যমে ঈশ্বরদী ও পাবনার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হবে। এলাকারও ব্যাপক উন্নয়ন হবে। পাবনা-১ আসনের এমপি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, এই রেলপথ চালু হলে পাবনাবাসীরা ট্রেনে চড়ে সরাসরি ঢাকায় যেতে পারবে। তিনি রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, রেলপথ চালু হওয়ার সাথে সাথেই যেনো পাবনা পর্যন্ত একটা সরাসরি ট্রেন দেয়া হয়। একই সাথে তিনি ঢাকা-টাঙ্গাইল-নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ পর্যন্ত রেল যোগাযোগ বাড়ানোরও দাবি জানান। এমপি শামসুল হক টুকু বলেন, পাবনার বাঘাবাড়ীঘাট নদীবন্দরটি এই অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। কখনো নদীর নাব্যতা কমে গেলে বাঘাবাড়িঘাট যাতে অচল হয়ে না যায়, সেজন্য এই বন্দরকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।