পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আহমদ আতিক : চীন থেকে সংগৃহীত মিং ক্লাসের দুটি সাবমেরিন আজ রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হচ্ছে নৌবাহিনীতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের প্রায় এক মাস আগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে দু’টি চাইনিজ সাবমেরিন যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক যুগে যাত্রা শুরু হবে।
এর ফলে সমুদ্রসীমানায় শত্রুবাহিনীর ওপর নজরদারি বাড়ানো ছাড়াও আঘাত করার সক্ষমতা অর্জন করবে সশস্ত্র বাহিনী। চট্টগ্রামস্থ সাবমেরিন জেটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবমেরিন বানৌজা ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ এর কমিশনিং অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
গত বছর আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছিল, চীনে তৈরি দুটি কনভেনশনাল সাবমেরিন নৌবাহিনীর নৌবহরে বানৌজা ‘নবযাত্রা’ ও বানৌজা ‘জয়যাত্রা’ নামে যুক্ত হবে। এগুলো ৭৬ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের। ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিনগুলো টর্পেডো ও মাইন দ্বারা সুসজ্জিত, যা শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ করতে সক্ষম।
চীন থেকে সাবমেরিন দুটি গ্রহণ করে বাংলাদেশের নৌবাহিনী প্রধান নিজামউদ্দিন বলেছিলেন, বর্তমান সরকার নৌবাহিনীকে আধুনিক, ত্রিমাত্রিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সাবমেরিন পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসেবে যাত্রা শুরু করলো। নৌবাহিনীর উন্নয়নে এসব যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবর মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের পরে ভারতের মিডিয়াতে চীন থেকে সাবমেরিন কেনার বিষয়টি ফলাও করে প্রচার হয়। এরপরই অক্টোবরের শেষে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর ভারতীয় তিন বাহিনীর ডেপুটি প্রধানদের এবং কোস্ট গার্ডের প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা সফর করেন এবং বাংলাদেশের কাছে সামরিক চুক্তির প্রস্তাব করেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চুক্তি না করে সমঝোতা স্মারক করার পাল্টা প্রস্তাব দেয়া হয়। পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সঙ্গেও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শংকর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে বাংলাদেশ চীন থেকে সাবমেরিন সংগ্রহের পর ভারত তার দূরতম দ্বীপাঞ্চল আন্দামান ও নিকোবরের সামরিক স্থাপনায় নজরদারির যুদ্ধবিমান ও গোয়েন্দা ড্রোন পাঠাচ্ছে বলে জানা গেছে। ভারতের সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে গত জানুয়ারি মাসে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, দুই সপ্তাহের মধ্যে নেভাল পোসাইডন-৮১ বিমান ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপাঞ্চলে পাঠানো হবে। এই বিমান সাবমেরিন অনুসন্ধানে বেশ কার্যকর। এছাড়া অস্থায়ী ভিত্তিতে সেখানে সার্চার-টু নামক ড্রোন পাঠাচ্ছে ভারতীয় নৌ ও বিমানবাহিনী। এই বিমান ও ড্রোন চীনা সাবমেরিনের বিচরণ পর্যবেক্ষণ করবে বলেও জানায় সংবাদ মাধ্যমটি।
জানা গেছে, ভারত আটটি পি-৮১ যুদ্ধবিমান আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপাঞ্চলে পাঠাচ্ছে। ২০০৯ সালে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারে ওই বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিমান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে কেনা হয়। এরপর থেকেই সেগুলো তামিলনাডুর বিমান ঘাঁটিতে রাখা হয়েছিল। রাডারসমৃদ্ধ বিমানগুলো ঘণ্টায় ৯০৭ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে এবং একবার জ্বালানি নিয়ে এক হাজার ২০০ নটিক্যাল মাইল উড়তে পারে। এই বিমানে আছে পানিতে নিক্ষেপযোগ্য টর্পেডো ও ক্ষেপণাস্ত্র। জানা গেছে, ভারত আরো চারটি পি-৮১ যুদ্ধবিমান কিনছে।
ভারতের আন্দামান ও নিকোবরের সামরিক ঘাঁটিতে তিন হাজার সেনা, ২০টি ছোট যুদ্ধজাহাজ ও পেট্রল জাহাজ, কয়েকটি এমআই-৮ হেলিকপ্টার এবং কয়েকটি ডোর্নিয়ার-২২৮ পেট্রল বিমান অবস্থান করছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক সাবমেরিন কিলার রয়েছে। সেগুলোকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি নৌসেনা ও বিমানবাহিনী ইসরাইলি সার্চার-টু এরিয়াল ভেহিকলও ব্যবহার করবে।
এছাড়া ২০১৩ সালের ৩ ডিসেম্বর কলকাতাভিত্তিক দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের ছাপা সংস্করণ ও অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় যে, বাংলাদেশ-ভারতের সুন্দরবন ও সমুদ্র সংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় নজরদারি করার জন্য চালকবিহীন ড্রোন বিমান ব্যবহার করবে ভারত। এছাড়াও সীমান্ত এলাকায় মিসাইল (কোস্টাল ব্যাটারি) স্থাপন করবে দেশটির নৌবাহিনী। দৈনিকটির ছাপা সংস্করণে ‘বাংলাদেশ সীমান্তে বিপজ্জনক ফাঁক- নিরাপত্তায় সাগর দ্বীপে বসানো হচ্ছে ‘মিসাইল’ শিরোনামে প্রথম পৃষ্ঠায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। ভারতের নৌবাহিনী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি এ সংবাদ প্রকাশ করে বলে জানায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।