নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
পাকিস্তান : ৮৩/১০ (১৭.৩ ওভারে)
ভারত : ৮৫/৫ (১৫.৩ ওভারে)
ফল : ভারত ৫ উইকেটে জয়ী
শামীম চৌধুরী : এটা কি শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম, না পার্থ? পীচের উপরে ঘাসের স্তর, আর তাতে পেসারদের ভয়ংকর হয়ে ওঠায় হতবাক ভারত মিডিয়া। এমন উইকেটে ভারত পেস ত্রয়ী নেহরা, পান্ডে, বুমরাহ ভয়ংকর রুপ ছড়ালে পাকিস্তানী পেসাররাও তো গর্জে উঠবে। পাকিস্তানকে ৮৩ রানে ইনিংস গুটিয়ে দিয়েও তাই ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে স্বস্তিতে থাকতে পারেনি ভারত। লো স্কোরিং ম্যাচে মাত্র ৮৪ চেজ করতে এসে টি-২০’র নাম্বার ওয়ান র্যাংকিংধারী দল ভারতকে জিততে হারাতে হয়েছে ৫ উইকেট। বাংলাদেশকে ৪৫ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপ মিশন শুরু করে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারালো ভারত ৫ উইকেটে। উপর্যুপরি ২ জয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে এক পা যে দিয়ে রেখেছে ভারত।
৫ মাস আগে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাঁ হাতি পেস বোলার আমির প্রত্যাবর্তনেই অতীত ফিরে পেয়েছেন, তা জেনে গেলেও আমিরের বোলিংয়ে টপ অর্ডারদের কতোটা দগ্ধ হতে হয়, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ভারত গতকাল। আমিরের এক একটি ভয়ংকর ডেলিভারি দেখে বিস্ময়ে হতবাক শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম উপচে পড়া দর্শক। প্রথম ওভারে রোহিত, রাহানেকে ফিরিয়ে দিয়ে, দ্বিতীয় ওভারে রায়নাকে শিকার করে লো স্কোরিং ম্যাচে কি উত্তাপই না দিয়েছিলেন এই পেসার! যার মধ্যে রাহানেকে এলবিডাব্লুতে ফিরিয়ে দেয়া ডেলিভারিটি ছিল ১৪৬.৫ কিলোমিটার গতিতে। স্কোরশিটে ৮ উঠতে নেই ভারতের ৩ উইকেট। এমন পরিস্থিতিতে পড়ে ভারত যখন ব্যাকফুটে, তখন ভুলটা করেছেন আফ্রিদি। টানা ৪ ওভারে ডেঞ্জারম্যান আমিরের স্পেল শেষ করায় (৪-০-১৮-৩) ম্যাচে ভারত পেরেছে ফিরতে। আমিরের শেষ ওভারে কোহলীর ২টি বাউন্ডারীতে ম্যাচে ফেরার উপায় খুঁজে পেয়েছে ভারত। ওয়াহাব রিয়াজের এক ওভারে তিন তিনটি বাউন্ডারি (যুবরাজ ১টি, কোহলী ২টি) এবং চতুর্থ জুটির ৬৯ বলে ৬৮ রানে টি-২০তে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের কথা জানিয়ে দিতে পেরেছে ভারত। উত্তেজনা ছড়ানো মোহাম্মদ সামীর এক ওভারে কোহলী (৪৯) এবং পান্ডে ফিরে গেলেও ভারতের জয় প্রতিহত করতে পারেনি পাকিস্তান। এশিয়া কাপের সর্বশেষ আসরে হারের বদলা নিয়েছে ভারত গতকাল ৫ উইকেটে জিতে। ওয়াহাব রিয়াজকে ধোনীর কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারির সঙ্গে সঙ্গে ২৭ বল হাতে রেখে এশিয়া কাপে টানা দ্বিতীয় জয়ে ফাইনালের পথটা সুগম করেছে ভারত।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের পীচ এতটা সবুজ দেখাবে, তা ঘূর্নাক্ষরেও আঁচ করতে পারেনি পাকিস্তান। দুবাইয়ে মরা পীচে পিএসএল খেলে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার সুযোগই পায়নি পাকিস্তান। পিএসএল শেষ করে দুবাই থেকে সরাসরি ঢাকায় এসে এমন পীচ নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছেড়েছে পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের। ইনিংসের চতুর্থ বলে উইকেটের পেছনে হাফিজের (৪) ক্যাচ দিয়ে আসা থেকে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু, চতুর্থ ওভারে আর এক পেস বোলার বুমরার বাউন্সে সিøপে দিয়ে এসেছেন ক্যাচ সারজিল (৭)। রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেটে হাত থেকে ব্যাট ছিটকে পড়ে ভাগ্যাহত খুররম রান আউট (১০)। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’র প্রথম ৬ ওভারের বিপর্যয় (৩২/৩) কাটিয়ে উঠতে পারেনি পাকিস্তান। প্রথম ওভারে পান্ডের ভয়ংকর রুপ ছড়ানো বোলিংয়ে শোয়েব মালিক কভারে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন ফিরে (৪)। প্রথম বলে ওমর আকমলকে (৩) বোল্ড আউটের শিকার করে, ওই ওভারের শেষ বলে ডাবলস নিতে যেয়ে জাদেজার থ্রো থেকে ধোনীর হাত হয়ে বুম বুম আফ্রিদির রান আউটে (২) ১০ম ওভার পাড়ি দিতে হারাতে হয়েছে ৬ উইকেট (৪৭/৬)। সেখান থেকে ম্যাচে আর ফেরা হয়নি পাকিস্তানের। পেস বোলার হারদিক পান্ডে ছড়িয়েছেন আরো বেশি আতঙ্ক। প্রথম স্পেলে শোয়েব মালিককে শিকার করা এই বোলার ৩ বলের শেষ স্পেলে সামী ও আমিরকে ফিরিয়ে দিয়ে পাকিস্তানকে করেছে হতভম্ব।
ভারতের বিপক্ষে টি-২০তে পাকিস্তানের ফল মোটেও ভাল নয়। ইতোপূর্বের ৬ ম্যাচে ৪-১ এ পিছিয়ে থাকা আফ্রিদির দল গতকাল টি-২০তে ভারতের বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোরের লজ্জা পেয়েছে (৮৩/১০)। এর চেয়েও কম স্কোরে ইনিংস গুটিয়ে ফেলার অতীত আছে পাকিস্তানের, ২০১২ সালে দুবাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৪ এবং শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সর্বশেষ টি-২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮২ রানে অল আউট পাকিস্তান। গতকাল ভারতের বিপক্ষে খেলেছে পাকিস্তান সর্বসাকূল্যে ১০৫টি বল। যার মধ্যে ডট বলের সংখ্যা ৬৮টি। পাল্লা দিয়ে ডট বল করেছেন নেহরা (১২), বুমরাহ (১৬), পান্ডে (১৪) এবং জাদেজা (১৪)। ২১ বলের ইনিংসে পান্ডের শিকার মাত্র ৮ রানে ৩ উইকেট (৩.৩-০-৮-৩) ! পাকিস্তান ইনিংসে স্কোরিং শট মাত্র ৩৭টি! টি-২০’র সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এমন দূর্গতিÑ ভাবুন তো। জানেন, টি-২০ যেখানে চার-ছক্কার খেলা, সেখানে গতকাল পাকিস্তানের ইনিংসে একটি ছক্কাও দেখেনি দর্শক! বাউন্ডারির সংখ্যা সর্বসাকূল্যে মাত্র ৮টি। পাকিস্তান ইনিংসে ডাবল ফিগারের নাগাল পেয়েছেন মাত্র ২ জন, বলার মতো ইনিংস কেবল সরফরাজের (২৪ বলে ২৫)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।