Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাটিং ছন্দ ফিরে পেতে প্রত্যয়ী বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : এশিয়া কাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১২ ম্যাচে জয় মাত্র একটি, তা ২০১২ সালে মিরপুরে। বৃষ্টি বিঘিœত ম্যাচে সমীকরণ মিলিয়ে সেই জয়ে কিন্তু অসাধ্য সাধনের গল্পও রচনা করেছে বাংলাদেশ সেবার। ওই জয়ে প্রথমবারের মতো বড় আসরের ফাইনালিস্ট বাংলাদেশ। কিন্তু ফরমেটটা যেহেতু টুয়েন্টি-২০, সেখানে যোজন যোজন দূরে বাংলাদেশ। টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এই ফরমেটের ক্রিকেটে এখনো যে অধরা জয় বাংলাদেশের। ৪টি মুখোমুখি লড়াইয়ের চারটিতেই হার। তবে ২০০৭ বিশ্বকাপে জোহানেসবার্গে ৬৪ রানের হারটি বাদ দিলে সর্বশেষ তিনটি লড়াইয়ে কিন্তু শ্রীলংকাকে ছেড়ে কথা বলেনি বাংলাদেশ দল। ২০১৩ সালে পাল্লেকেলেতে ১৯৮ চেজ করে ১৭ রানে হারই বলুন কিংবা ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে ২ রান এবং৩ উইকেটে হারÑম্যাচ দু’টির উত্তাপ যে শেষ বল পর্যন্ত ছিল জিইয়ে।
টি-২০ সিরিজে বাংলাদেশ ধাক্কা সামলে ঢাকা থেকে এশিয়া কাপ এবং টি-২০ বিশ্বকাপের ট্রফি জিতে নিয়েছে শ্রীলংকা। তবে ২ বছর আগে হোমে যে বাংলাদেশ দলকে দেখেছে শ্রীলংকা, গত বছর মেলবোর্নে যে দলটিকে পেয়েছেÑ বর্তমান দলটিকে সেই দলের ছাঁয়া ভাবলে বড্ড ভুল করবে মালিঙ্গারা। কারণ, এক বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ  ক্রিকেট দল হোমে দূর্বার। পাকিস্তান, ভারত, দ.আফ্রিকার মতো ওয়ানডের জায়ান্টদের পিলে চমকে দিতে পেরেছে যে দলটি, নুতন সেই বাংলাদেশ দলকেই পাচ্ছে আজ শ্রীলংকা। তাছাড়া  বার বার বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ বের করে নেয়া সাঙ্গাকারা, মাহেলাকে যে পাচ্ছে না শ্রীলংকা।
এশিয়া কাপে ভারতের কাছে প্রথম ম্যাচ ৪৫ রানে হেরে আরব আমিরাতকে হারিয়ে দারুনভাবে টুর্নামেন্টে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বোলিং অ্যাটাকের বিপক্ষে যেখানে ১২৯ এ আটকে গেছে শ্রীলংকা, সেখানে তার চেয়ে ৪ রান বেশি করেছে বাংলাদেশ একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। শুধু তাই নয়, আরব আমিরাতের বিপক্ষে শ্রীলংকার জয় যেখানে ১৪ রানের, সেখানে বাংলাদেশের জয় ৫১ রানের। আমিরাতের বিপক্ষে ওই বড় জয়টিই আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশ দলের। ২ বছর আগে শ্রীলংকার বিপক্ষে টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া সাব্বির রহমান রুম্মান দলের ফিরে পাওয়া আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে শ্রীলংকার বিপক্ষে দারুন কিছুর স্বপ্ন দেখছেনÑ ‘প্রথম ম্যাচ হারের পর আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটা কমে গিয়েছিল। আমিরাতের সঙ্গে ম্যাচটি জিতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। আমরা খুব ভালোভাবে জিতেছি বলে আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেছে। সামনের ম্যাচের জন্যে এটা অনেক ভালো হবে।’
টি-২০ র‌্যাংকিংয়ে শ্রীলংকা যেখানে ৪ নম্বর র‌্যাংকিংধারী দল, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ নম্বরে। তবে র‌্যাংকিংয়ের এই ব্যবধান ভাবচ্ছে না সাব্বির রহমান রুম্মানকে। বরং শ্রীলংকার বিপক্ষে জয়ের ছকই আকঁছে বাংলাদেশ, সেটাই জানিয়েছেন এই টি-২০ স্পেশালিস্টÑ ‘টি-টোয়েন্টিতে ছোট-বড় দল বলতে কিছু নেই। এটা ১৯-২০ খেলা।  শুধু শ্রীলঙ্কা নয়,  যেকোনো দলের বিপক্ষে সেরা খেলাটা খেলার চেষ্টা করব।  ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগে যে ভালো সামর্থ্য দিয়ে খেলবে তারাই ম্যাচ জিতবে।’
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ১২১, দ্বিতীয় ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৩৩Ñব্যাটিংটাই যে ক্লিক করছে না বাংলাদেশের। বোলারদের সমন্বিত পারফরমেন্স থেকে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথাই ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। টীমমেটদের হয়ে সে সংকল্পের বার্তাই দিয়েছেন সাব্বির রহমান রুম্মানÑ ‘কেউ হয়তোবা ক্লিক করতে পারছে না, কেউবা ক্লিক করছে। টিম জেতাটা সবচেয়ে বড় বিষয়। যেহেতু বোলিং বিভাগ ভালো করছে আমরাও চেষ্টা করছি নিজেদের সেরাটা দিতে। আমরা কিভাবে ব্যাটিংয়ের এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারি, সে চিন্তাই করছি।  আমরা চাচ্ছি স্কোর ১৭০-১৯০  করতে।  তাহলে বোলাররা রিল্যাক্সড হয়ে বোলিং করতে পারবে। এটাই আমাদের ফোকাস থাকবে।’
প্রথম ম্যাচে পয়েন্টে দাঁড়িয়ে সাকিবের ক্যাচ ড্রপ নিয়ে এখনো চলছে কাঁটাছেড়া। দ্বিতীয় ম্যাচের দলের গুরুত্বপূর্ন ফিল্ডার সৌম্য সরকার স্লিপে করেছেন ক্যাচ মিস। তবে ক্যাচ মিসকে ম্যাচেরই অংশ মনে করছেন রুম্মানÑ‘  ক্যাচ মিস মানে যে ওখানে ফিল্ডিং করতে পারবে না এমনটা না। আমরা সব সময় চিন্তা করি যে কে কিভাবে ক্যাচ ধরতে পারবে ও তাড়াতাড়ি রান আউট করতে পারবে। তাতেই   আমাদের আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।’
টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন শ্রীলংকার পেস বোলার লাসিথ মালিঙ্গা। সাড়ে তিন মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ম্যাচে তার ভয়ংকর বোলিংয়ে (৪/২৬) সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়েছে শ্রীলংকা। বাংলাদেশের বিপক্ষেও সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে মালিঙ্গা ভয়ংকর। চট্টগ্রামে ২ বছর আগে যে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ দল ৩ উইকেটে, সেই ম্যাচে দু’দলের মধ্যে ব্যবধান রচিত করেছেন মালিঙ্গাই (৩/২০)। ডেথ বলে ভয়ংকর এই পেস বোলারকে নিয়ে অবশ্য দূর্ভাবনার কিছুই দেখছে না বাংলাদেশ। সেটাই জানিয়ে দিয়েছেন রুম্মানÑ‘ তাকে নিয়ে আমাদের বিশেষ কোনো ভাবনা  নেই। বল টু বল খেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। কোন বোলার বল করছে সেটা আমাদের কাছে  মুখ্য নয়।’  
শ্রীলংকার বিপক্ষে আজ জিতলে ফাইনালের পথে এক পা এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ দল। ২০১২’র এশিয়া কাপে শ্রীলংকাকে হারানোর সেই সুখস্মৃতি থেকে টনিক নিতে পারে মাশরাফিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাটিং ছন্দ ফিরে পেতে প্রত্যয়ী বাংলাদেশ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ