নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : সুইজারল্যান্ডের ভ্যালাইসে বিশ্ব ফুটবলের দুই কর্তা ব্যক্তির বাস। দুই বাড়ির মধ্যবর্তী দুরত্বও বেশি না, ছয় মাইলেরও কম। তাঁদের একজন হলেন ফিফার বহিষ্কৃত সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার, অপরজন উয়েফার সেক্রেটারি জেনারেল জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। ইনফান্তিনো অবশ্য জন্মসূত্রে একজন ইতালিয়ান। কর্মসূত্রে এখন সুইস অধিবাসী। তিনি একজন আইনজিবীও। তবে নামের পাশের পদবীটা এখন বড় হয়েছে আরো। ব্ল্যাটারের ফাঁকা চেয়ারের নতুন মালিক এখন ইনফান্তিনো। অর্থাৎ ফিফার নতুন সভাপতি তিনি। ব্ল্যাটার অবশ্য নিজের রেখে যাওয়া চেয়ারে ইনফান্তিনোকে দেখে খুশি। ফিফার নতুন শীর্ষ কর্তাকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন ৭৯ বছর বয়সী। তাঁকে নিজের যোগ্য উত্তরসুরি বলেও মনে করেন ১৮ বছর ফিফা কর্তার আসনে থাকা ব্ল্যাটার।
শুক্রবার জুরিখে সভাপতি নির্বাচনের হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ সালমান বিন ইব্রাহিম আল-খালিফাকে হারিয়ে আগামী ৪ বছরের জন্য ফিফার কর্তা ব্যক্তি নির্বাচিত হন ইনফান্তিনো। নির্বাচিত হওয়ার পর ফিফাকে নতুনভাবে সাজিয়ে পুরোনো সুনাম ফিরিয়ে আনার ঘোষনা দেন তিনি। একইসাথে নির্বাচনে ফটবলের উন্নয়নে পরস্পরের সাথে দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ থেকে কাজ করে যাওয়ার ঘোষণা দেন ৪৫ বছর বয়সী। ইনফান্তিনো বলেনÑ ‘আজ এটা ছিল একটা নির্বাচন, যুদ্ধ নয়। এটা ছিল একটা প্রতিযোগিতা, লড়াই নয়। এটা একটা খেলার প্রতিযোগিতার মত। আপনি জিতবেন অথবা হারবেন, এরপর জীবন তার মত চলে যাবে।’ সুইসম্যান আরো যোগ করেনÑ ‘আমরা একসাথে কাজ শুরু করতে চাই এবং আমি পুরো বিশ্বকে দেখাতে চাই আমি শুধু ইউরোপের প্রার্থী নই, আমি ফুটবলের একজন প্রার্থী- আর ফুটবল বিশ্বজনীন। ফিফা কাজ করবে ফুটবলের উন্নয়নে; রাজনীতি বা এর বিভাজনের জন্য নয়।’ এজন্য সবাইকে নিয়ে একত্রে কাজ করার ঘোষণা দেন তিনি। একই সাথে ফিফার হারানো মর্জাদা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করবেন বলেও জানান এই সুইস-ইতালিয়ান।
অর্থ কেলেঙ্কারীতে জড়িত থাকার দ্বায়ে গত গ্রীষ্মে ফিফার সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কৃত হন ব্ল্যাটার। তদন্তে অভীযোগ প্রমাণীত হওয়ায় গত ডিসেম্বরে ফুটবল সংক্রান্ত সব ধরনের কার্যকালাপ থেকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় তাঁকে। একই অপরাধে সমান শাস্তি ঘোষণা করা হয় উয়েফা বস মিশেল প্লাতিনির বিরুদ্ধেও। আপিলের পর সেটাকে কমিয়ে করা হয় ৬ বছর। সাথে জরিমানা করা হয় ২০ লাখ ডলার। দু’জনেই অবশ্য সব সময়ই তাঁদের প্রতি আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
তা সত্ত্বেও ব্ল্যাটার নতুন সভাপতিকে অভিন্দন জানাতে ভোলেননিÑ ‘আমি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে ফিফার নব-নির্বাচিত সভাপতিকে অভিন্দন জানাচ্ছি।’ একই সাথে ইনফান্তিনো তাঁর কাজে সফল হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে ব্ল্যাটার বলেনÑ ‘ইনফান্তিনোর অভিজ্ঞতা, কূটনৈতিক সক্ষমতা, কাজের কৌশল ইত্যাদি বিবেচনায় আমার মনে হয়েছে আমার রেখে যাওয়া কাজগুলো তিনি এগিয়ে নিতে পারবেন। ফিফায় স্থিতিবস্থাও ফিরিয়ে আনতে পারবেন তিনি। আমি তাঁর সাফল্য কামনা করছি।’
শুক্রবারের নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটে কোন প্রার্থী এককভাবে সংখ্যা গরিষ্ঠ না পাওয়ায় পুনঃভোটে সালমানের চেয়ে ২৭ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন ইনফান্তিনো। মোট ২০৭ ভোটের মধ্যো ১১৫ ভোট পান ইনফান্তিনো। প্রথম দফার ভোটে ৮৮-৮৫ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু একক সংখ্যা গরিষ্ঠ পেতে ৫০ শতাংশের বেশি অর্থাৎ নূন্যতম পেতে হয় ১০৪টি ভোট। এখন থেকে একজন ব্যক্তি ১২ বছরের বেশি ফিফার সভাপতি পদে অসীন থাকতে পারবেন না বালে সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা।
এক নজরে ফিফা সভাপতি যাঁরা
১৯০৪-০৬ : রবার্ট গুইরিন (ফ্রান্স)
১৯০৬-১৮ : ড্যানিয়েল উলফল (ইংল্যান্ড)
১৯১৮-২১ : উলফলের মৃত্যুর পর ৪ বছর এই পদ শূন্য ছিলো
১০২১-৫৪ : জুলেস রিমেট (ফ্রান্স)
১৯৫৪-৫৫ : রুডলফ শেলড্রায়ার (বেলজিয়াম)
১৯৫৫-৬১ : অর্থার ড্রিউরি (ইংল্যান্ড)
১৯৬১-৭৪ : স্যার স্ট্যানলি রাউস (ইংল্যান্ড)
১৯৭৪-৯৮ : জোয়াও হ্যাভেলেঞ্জ (ব্রাজিল)
১৯৯৮-২০১৫ : সেপ ব্ল্যাটার (সুইজারল্যান্ড)
২০১৬- : জিয়ান্নি ইনফান্তিনো (সুইজারল্যান্ড)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।