পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা নতুন ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’র তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দুই দেশ সোমালিয়া ও সুদান। এই নিষেধাজ্ঞাকে দেশ দু’টি ‘অযৌক্তিক’ বলেও উল্লেখ করেছে। জাতিসংঘও সমালোচনা করেছে এই নিষেধাজ্ঞার। গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিয়েছে। খবরে বলা হয়, সাত মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর স্থগিত হয়ে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার (৬ মার্চ) নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আগের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্য থেকে ইরাককে বাদ দিয়ে নতুন নিষেধাজ্ঞায় বাকি ছয়টি দেশকেই রাখা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের যেসব নাগরিকদের বৈধ ভিসা নেই, তারা আগামী ৯০ দিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞায় ১২০ দিনের জন্য সব ধরনের মার্কিন শরণার্থী কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তায় সন্ত্রাসীদের হুমকির মোকাবিলার তৎপরতাকে জোরদার করার কারণ দেখিয়ে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের নতুন এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনও নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সবগুলো দেশ প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এর আগের নিষেধাজ্ঞাকে ইরান ‘বেআইনি, অযৌক্তিক ও আন্তর্জাতিক নীতির পরিপন্থী’ বলে আখ্যায়িত করেছিল। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানেও মার্কিনিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা বলেছিল দেশটি। এর মধ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির পর ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ‘অযৌক্তিক’ বলে আখ্যায়িত করেছে সুদান ও সোমালিয়া। মঙ্গলবার সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট, মার্কিন-সোমালি দ্বৈত নাগরিক মোহাম্মদ আবদুল্লাহি মোহাম্মদ নতুন এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড় লাখ সোমালি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত রয়েছেন। তারা বিভিন্নভাবে মার্কিন অর্থনীতি ও সামাজিক ব্যবস্থায় অবদান রেখে চলেছেন। কিছু ব্যক্তি হয়তো সমস্যার কারণ হতে পারেন। কিন্তু তাদের কথা বাদ দিয়ে আমাদের সোমালি জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর অংশের কথা বলতে হবে।’ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে সোমালি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে সোমালিয়া ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আল-শাবাবের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে, সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন এই নিষেধাজ্ঞার প্রতি তীব্র ‘দ্বিমত’ পোষণ করেছে। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সুদানের নাগরিকরা কখনও যুক্তরাষ্ট্রে কোনও ধরনের অপরাধ বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল না।’ উল্লেখ্য, ট্রাম্পের নতুন এই নিষেধাজ্ঞায় জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রমও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যানডি বলেন, ‘বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা পক্ষে এবং একইসঙ্গে মানবতাবাদি কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই উদাহরণ তৈরি করে এসেছে। শরণার্থীদের সুরক্ষায় এটি শক্তিশালী একটি মডেল। বর্তমান সময়ে যখন উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের সংখ্যা যখন রেকর্ড ছাড়িয়েছে, তখন আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় মানবিক নেতৃত্ব প্রয়োজন।’ ট্রাম্পের কাছেও শরণার্থী পরিস্থিতি মোকাবিলায় একই ধরনের সহায়তা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি। বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।