মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : গত শতাব্দীতে জাপানের জনসংখ্যা স্বাভাবিক গতিতে বাড়লেও বিগত কয়েক দশক ধরে দেশটিতে জনসংখ্যা দ্রুতগতিতে কমে আসছে। তাছাড়া আগামী কয়েক দশকে দেশটিতে দ্রুত কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা হ্রাস এবং বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। কারণ, গত আদমশুমারিতে দেখা গেছে জাপানের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পুরোপুরি থেমে গেছে। গত শুক্রবার প্রকাশিত আদমশুমারির তথ্যে প্রথমবারের মত জনসংখ্যার নিম্নহারের পরিসংখ্যান দেখা গেল। এক প্রতিবেদনে বিগত পাঁচ বছরে ১০ লক্ষাধিক মানুষ কমেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, ২০৬০ সাল নাগাদ জাপানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশের বয়স ৬৫ বা তার বেশি হবে। আর সাধারণ মানুষের সংখ্যা এখনকার চেয়েও এক-তৃতীয়াংশ কমবে। ১৯২০ সাল থেকে চলে আসা জাপানি আদিমশুমারী অনুযায়ী, বিয়ের প্রতি অনীহা ও অন্যান্য চাপের কারণে জনসংখ্যার হার নিম্নমুখী হচ্ছে। অপরদিকে, চাইল্ডকেয়ার ও ট্যাক্স ইনসেনটিভসহ আরও বেশ কিছু সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জাপানে জন্মহার বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দেশটিতে সন্তান জন্মের পর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত সরকার কিছুটা ভর-পোষণের দায়িত্ব নেয়। প্রতি মাসে সরকারের কোষাগার থেকে অর্থ যায় একাজে। তাছাড়া সরকার বিয়েতে উৎসাহ যোগাতে বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘোষণা অনুযায়ী, দেশটিতে শিশু জন্মহার ১ দশমিক ৪ থেকে ১ দশমিক ৮ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
খবরে বলা হয়, জাপানের জনসংখ্যা কিছুতেই বাড়ছে না। সরকার বেশ কিছু কার্যকর নীতি হাতে নেয়ার পরও গত ৫ বছরে দেশটিতে ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৩০৫ জন মানুষ কমেছে বলে দেশটির আদমশুমারির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আন্তঃসম্পর্ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা মন্ত্রণালয়ের এ শুমারিতে বর্তমান জনসংখ্যা ১২ কোটি ৭১ লাখ ১ হাজার ৪৭ জন। যা ২০১০ সালের আদমশুমারির চেয়ে শতকরা ৭ ভাগ কম। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আদমশুমারির তথ্য জানিয়ে বলেছেন, গত বছরের ১ অক্টোবর দেশব্যাপী জরিপ চালানো হয়। এতে দেখা যায়, বর্তমানে পুরুষের সংখ্যা ৬ কোটি ১৮ লাখ ২৯ হাজার ২৩৭ জন, আর নারীর সংখ্যা ৬ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৮১০ জন। দেশটির ৪৯টি প্রদেশের মধ্যে ৩৯টি প্রদেশে জনসংখ্যা হার নিম্নমুখী। তবে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা কমেছে সুনামি বিধ্বস্ত ফুকুশিমা প্রদেশে। ২০১১ সালের সুনামির পর ওই অঞ্চলে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এছাড়াও, ইয়াতে ও মিয়াগি প্রদেশেও উল্লেখযোগ্য হারে মানুষ কমেছে। তবে এবারের আদমশুমারির খবর অনুযায়ী, রাজধানী টোকিও, ওকিনাওয়া, আচিসহ আটটি প্রদেশে জনসংখ্যা বেড়েছে। জাপানে ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় ১ কোটি মানুষ বাস করে। এ দেশের জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশই বৃদ্ধ। বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ার কারণে দেশটিতে অর্থনৈতিক অচলাবস্থা এবং স্বাস্থ্যখাতে সরকারের ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এই বিপর্যয় সামাল দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন জাপানী প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে। এর আগে নারীপ্রতি সন্তান জন্মদানের হার ১ দশমিক ৪১ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ১ দশমিক ৮ ভাগে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয় ২০১২ সালে। ওই পরিকল্পনার অধীনে জাপানের জনসংখ্যা ১০০ মিলিয়নে ধরে রাখার জন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য জন্মহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা এই পরিকল্পনা তেমন কার্যকর নাও হতে পারে। ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞানের প্রফেসর মাইকেল কুচেক বলেন, এই পরিকল্পনা কাজ করবে না। কেননা, জনসংখ্যা ১০০ মিলিয়নে ধরে রাখতে হলে নারীপ্রতি সন্তানের হার ১ দশমিক ৮ হলে চলবে না, বরং ২ দশমিক ১ হতে হবে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২১০০ এর মধ্যে জাপানের জনসংখ্যা কমে যাবে আরো ৮৩ মিলিয়ন এবং ৩৫ শতাংশ নাগরিকেরই বয়স হবে কমপক্ষে ৬৫ বছর। এনএইচকে, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।