পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ক্ষুধা আর ডায়রিয়ার কাছে পরাজিত হয়ে সোমালিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ১১০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে মৃত্যুর মিছিলে শামিল হয়েছেন তারা। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সোমালিয়ার অর্ধেক মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। তীব্র খরার কারণে এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করা হয়। সোমালিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাসান আলী খাইরি-র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৃষক ও তাদের পোষা প্রাণীদের জন্য এটা একটা কঠিন পরিস্থিতি। অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ৪৮ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও ডায়রিয়ায় পীড়িত হয়ে ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা বিষয়ক কমিটির বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সাধ্যমতো সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাইকে পরস্পরের সাহায্য এবং মৃত্যুর মুখে থাকা সোমালীয়দের বাঁচাতে এগিয়ে আসার আহŸান জানাই। আঞ্চলিক মানবিক সাহায্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষের প্রধান আবদুল্লাহি ওমর রোবল বলেন, মৃতদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। বাইদু শহর সংলগ্ন গ্রামগুলোতে ক্ষুধা ও ডায়রিয়ার প্রকোপে লোকজন মারা যাচ্ছেন। সব রোগীর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে মেডিসিনও ছিল না। তীব্র খরায় ডায়রিয়া, কলেরা এবং হামের মতো রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। পানিবাহিত রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন ৫৫ লাখ মানুষ।
স্থানীয় একজন কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার কলেরা আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৭০ জনেরও বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন পানির অভাবে কলেরা এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে লোকজনের প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘের ধারণা, পুরো মাত্রার একটি দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় থাকা সোমালিয়ায় ৫০ লাখ মানুষের সাহায্য প্রয়োজন। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর কাছ থেকে খাদ্য সহায়তার আশায় অনেকে রাজধানী মোগাদিসুর দিকে ছুটছেন। খাবারের খোঁজে একটি ফিডিং সেন্টারে জড়ো হয়েছেন বাস্তুচ্যুত হওয়া সাত হাজারেরও বেশি মানুষ। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিশুদের অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। সংস্থাটির ফেমিন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমস নেটওয়ার্ক বলছে, সোমালিয়ায় ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে প্রায় তিন লাখ ৬৩ হাজার শিশু। এর মধ্যে মারাত্মক পর্যায়ে রয়েছে ৭১ হাজার। এই শিশুদের দ্রুত চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। সোমালিয়া সরকার বলছে, ব্যাপক ক্ষুধার কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সন্ত্রাসী তৎপরতার মতো ঘটনা ঘটছে। গত ফেব্রুয়ারিতে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় চার দেশের জন্য ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তা চেয়েছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এ দেশগুলোর মধ্যে সোমালিয়ার নাম ছিল। ওই তালিকায় থাকা বাকি দেশগুলো হচ্ছে- নাইজেরিয়া, সাউথ সুদান এবং ইয়েমেন। আল জাজিরা, ইন্ডিপেনডেন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।