বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দুইজন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর দুই হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের আনজুম সুলতানা সীমা ও বিএনপির মনিরুল হক সাক্কু মাঠ গোছাতে শুরু করেছেন। গতকাল আওয়ামী লীগ প্রার্থী সীমা পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামালের (লোটাস কামাল) সাথে দেখা করেছেন। অন্য দিকে, বিএনপি প্রার্থী সাক্কু ব্যবসায়ী ও দলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় করেছেন। প্রতীক বরাদ্দের আগ পর্যন্ত সীমা ও সাক্কু ভোটার ও সাধারণ মানুষের সাথে আপাতত কুশল বিনিময়ের পর্ব চালিয়ে যাবেন বলে দুই প্রার্থীর প্রেস সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে সীমার পক্ষে যেমন এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের একটি গ্রæপ নির্বাচনী কাজে নামেনি তেমনি সাক্কুর পক্ষেও বিএনপির অপর গ্রæপের নেতাকর্মীদের অনেকেই দূরে রয়েছেন। এ বিষয়ে দুই প্রার্থীর বক্তব্য প্রতীক বরাদ্দের পর নেতাকর্মী সমর্থক কেউই আর ঘরে বসে থাকবে না।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে অন্য যারাই প্রার্থী হয়েছেন, তাদের কম-বেশি পরিচিতি থাকলেও ভোটের মাঠে আলোচনায় আওয়ামী লীগের সীমা আর বিএনপির সাক্কু। প্রতীক বরাদ্দ না হলেও দলীয়ভাবে এই প্রথম কুমিল্লা সিটির দ্বিতীয়বারের নির্বাচন নৌকা-ধানের শীষের লড়াই নিয়ে নগরবাসীর মুখে প্রচারণার জায়গা করে নিয়েছে। প্রতীকের বাইরেও সীমা-সাক্কুর আলাদা ইমেজ রয়েছে কুমিল্লার মানুষের কাছে। রাজনৈতিক জীবনে সাক্কু বিভিন্ন সময় আলোচিত-সমালোচিত হলেও সীমা বরাবরই রাজনীতিতে তার ক্লিন ইমেজের জায়গাটি ধরে রেখেছেন। এবারের নির্বাচনে এ দুই প্রার্থী নিজেদের ইমেজকে যেমন কাজে লাগাবেন, তেমনি বাড়তি হিসেবে যোগ করবেন দলীয় প্রতীক। রাজনীতি নিয়ে যেসব মানুষ মাথা ঘামান না, তেমন সব ভোটারের দৃষ্টি থাকবে দুই প্রার্থীর ইমেজের দিকে।
মনোনয়ন জমা দেয়ার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনজুম সুলতানা সীমা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে প্রচার-প্রচারণাসহ মাঠ গোছানোর বিষয়টি উঠে আসে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সীমা বলেন, ‘মনোনয়ন জমা দেয়ার কাজ শেষ হয়েছে। দলের সিনিয়র কয়েকজন নেতা আলোচনা করেছেন নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা, ভোটের মাঠ গোছানো, নেতাকর্মীদের মধ্যে কাজ বণ্টনসহ প্রতিটি ধাপ কিভাবে সম্পন্ন করা হবে এসব বিষয় নিয়ে আমরা বসেছি। আসলে এটা সিরিয়াস কোনো বসা নয়, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে বসার পরই আমরা নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনে মাঠে নামব। বিশেষ করে প্রতীক বরাদ্দের পরই আসলে নির্বাচনী প্রচারণা জোরেশোরে শুরু হবে। এখন কেবল পরিচিতদের বাসায় যাচ্ছি, মুরুব্বিদের দোয়া চাইছি। প্রতীক বরাদ্দের আগ পর্যন্ত এরকমভাবেই এগুবো।’
এদিকে গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণের দুতিয়ারপাড় এলাকায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামালের সাথে দেখা করেছেন সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনজুম সুলতানা সীমা। মন্ত্রী লোটাস কামালের সঙ্গে দেখা প্রসঙ্গে সীমা বলেন, ‘কামাল চাচা বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লায় এসেছেন। শুক্রবার দুপুরের পরই চলে যাবেন। তাই চাচার সাথে দেখা করতে আসলাম। সালাম করলাম, দোয়া নিলাম। আর তিনি যেহেতু কুমিল্লা আওয়ামী লীগের সভাপতি, তাই দলের প্রার্থী হিসেবে অবশ্যই তার সাথে দেখা করাটা জরুরি এবং সৌজন্যবোধের অংশ।’
অন্য দিকে, মনোনয়ন জমা দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সারাদিনই কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। কেন্দ্রীয় নেতাদের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী ওই রাতে নানুয়াদিঘী এলাকায় নিজ বাসায় দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নির্বাচনের বিভিন্ন দিক নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। এখন পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যতবার মতবিনিময় হয়েছে, তার মধ্যে বিএনপির হাজী ইয়াছিন গ্রæপের উল্লেখযোগ্য নেতাকর্মীদের কেউই আসেননি নানুয়াদিঘীর ওই বাড়িতে। তবে মেয়র প্রার্থী সাক্কুর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, প্রতীক বরাদ্দের পর দলের সবাই একসঙ্গে মাঠে নেমে দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যক্রম এগিয়ে নেবে। গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে কুশল বিনিময় করেছেন মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। পরে তিনি নিজ বাসভবনে বেলা একটা পর্যন্ত দলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে নির্বাচনের বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সাক্কুর প্রেস সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় নেতারা মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন বৃহস্পতিবার এসেছেন। তারা দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করে কিভাবে এগুতে হবেÑ এসব বিষয়েও কথা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা মেয়র প্রার্থী সাক্কুর প্রচারণায় অংশ নেবেন বলেও জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।