পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিলেট অফিস : অবশেষে বদরুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন খাদিজা বেগম নার্গিস। অসুস্থতার জন্য দু’দফায় আদালতে হাজির না হওয়ার পর গতকাল (রোববার) আদালতে হাজির হন তিনি। সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। তার সাক্ষ্য প্রদানের মধ্য দিয়ে খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আদালত আগামী ১ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ ধার্য করেছেন।
গতকাল (রোববার) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বাবা, মা ও ভাইয়ের সাথে আদালতে আসেন খাদিজা। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে বদরুল আলমকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। পরে ১২টায় সাক্ষ্য প্রদান শুরু করেন খাদিজা। এসময় বদরুল আলম উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। উত্তেজিত বদরুল বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন, ‘আমি কিছু বলতে চাই। আমাকে একটা সুযোগ দিন। আমি সত্য কথা বলবো। আমি একজন শিক্ষক ছিলাম, আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক।’ এসময় বদরুলকে সতর্ক করে দেন আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো। বিচারক বলেন, ‘আদালত বক্তৃতা দেয়ার জায়গা নয়।’ বিচারকের কথার পর কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বদরুল।
এদিকে আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে খাদিজা বলেন, ‘গত বছরের ৩ অক্টোবর আনুমানিক বিকাল ৫টার সময় এমসি কলেজে পরীক্ষা দিয়ে এক বান্ধবীর সাথে বেরিয়ে আসার সময় বদরুল আমার পথরোধ করে। সে আমার উপর ধারালো চাপাতি দিয়ে হামলা চালায়। আমাকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে।’ সাক্ষ্য প্রদানের এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন খাদিজা। এসময় আইনজীবীরা তাকে সান্ত¦না প্রদান করেন।
এরপর খাদিজা বলেন, ‘বদরুল আমাকে অনেকটা প্রতিবন্ধী করে দিয়েছে। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’
আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান জানান, আদালতে খাদিজা বদরুল আলমের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। আদালত খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করে আগামী ১ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ধার্য করেছেন।
খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় মোট ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালত ৩৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে গতকাল আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন খাদিজা।
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অনিয়মিত ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম। ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীরা বদরুলকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। গত ৫ অক্টোবর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। এছাড়ার ঘটনার পর শাবি থেকে চিরতরে বহিষ্কার করা হয় বদরুলকে।
গত বছরের ৮ নভেম্বর খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট নগরীর শাহপরান থানার এসআই হারুনুর রশীদ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে ১৫ নভেম্বর আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেন। গত ২৯ নভেম্বর আদালত বদরুলের বিরুদ্ধে ৩২৪, ৩২৬ ও ৩০৭ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। গত ৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিন বদরুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে ১৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে ১১ ডিসেম্বর ১৫ জন এবং ১৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্য দেন আরো একজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।