গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
আবু হেনা মুক্তি : বহু আন্দোলন সংগ্রামের ফসল খুলনাঞ্চলে গ্যাস প্রকল্প অবশেষে ভন্ডুল হয়েছে। আর সেই ঘা শুকাতে না শুকাতে বেড়েছে গ্যাসের দাম। আবার মৌসুমের শুরুতেই লোডশেডিং বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিদ্যুতের মূল্য। এর সাথে যোগ হয়েছে ওয়াসার দুর্গন্ধ ও ময়লা পানি। এছাড়া অনেক স্থানেই গভীর নলকূপে এখন পানি ঠিকমত উঠছে না। সব মিলিয়ে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ এর তীব্র সংকটে নাকাল ও জর্জরিত দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প ও বন্দরনগরী খুলনা এবং খুলনাঞ্চলের মানুষ।
অবহেলিত খুলনাঞ্চলের আমজনতার দীর্ঘদিনের দাবি পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ বাস্তবায়িত না হওয়ায় শিল্প সেক্টর বিকাশে এখন দারুণ অন্তরায়। নতুন নতুন শিল্প-কলকারখানা তো গড়ে উঠছে না বরং যা আছে তা পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। আর যা এখনও টিকে আছে তা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ সেক্টরে চলছে চরম নৈরাজ্য। খুলনায় ৬০ ও ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখনও অচল। এ দু’টি কখনো স্বল্প সময়ের জন্য সচল হলেও দ্রæত তা বিকল হয়ে যায়। টিপ্পনী কেটে তাই এ অঞ্চলের মানুষ বলে কেন্দ্র দু’টিতে “জ্বীনের আছর হয়েছে”। আসন্ন গ্রীষ্মের তাপাদাহে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করবে।
দায়িত্বশীল সূত্র মতে স্বাধীনতার আগে ও পরে খুলনাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কলকারখানাগুলো গত দু’দশকে গ্যাসের অভাবে এবং তৎকালীন সরকারগুলোর উদাসীনতা ও কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালী পানার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যায়। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সমন্বয় সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে দলমত নির্বিশেষে গ্যাস প্রকল্প স্থাপনের দাবিতে দীর্ঘ আন্দোলন শেষে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতায় অবশেষে ৫৩১ কোটি টাকার প্রকল্পের ৩৭১ কোটি ব্যয় হওয়ার পরও তা বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে দফায় দফায় খুলনাঞ্চলের জ্বালানি কাজে ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম ১০৫০ টাকা। এর ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের মধ্য বিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা।
সূত্রমতে, নির্বাচন আসলেই জাতীয় নেতৃবৃন্দ এই গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়ার হাতিয়ার বানায়। বেগম খালেদা জিয়া তার এই প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন করেনি। তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলেও প্রকল্পটি লাল ফিতায় বন্দী হয়ে থাকে। তৎকালীন জ্বালানি উপদেষ্টাও আশার বাণী শোনায় কিন্তু সবই এখন মিথ্যা হয়ে গেছে।
বর্তমানে দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে পারিবারিক জীবন থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প সেক্টরে চরম নৈরাজ্যকর অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রীষ্মের পূর্বেই লোড শেডিংয়ের কারণে খুলনার মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাসহ বিভিন্ন মিল-কলকারখানায় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা গচ্ছা দিতে হচ্ছে। এরই মধ্যে আরেক দফা বিদ্যুৎ বিলের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপকূলীয়া অঞ্চলের মানুষ। আর খুলনায় ওয়াসার পানির তেলসমতি কারবারে অতিষ্ঠ নাগরিক জীবন। পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধের কারণে তা ব্যবহারের অনুপযোগী বলে মনে করেন অধিকাংশরাই। ওয়াসা সৃষ্টির ৮ বছরে পানি সাপ্লাই বাড়েনি আশানুরূপভাবে। আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির হাহাকার পড়ে যাবে গত বছরের মত।
খুলনা সচেতন নাগরিক সংঘের আহ্বায়ক শেখ আব্দুল হাকিম, বিশিষ্ট নাগরিক নেতা অ্যাড. সাইদুর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার সোসাইটির খুলনা বিভাগীয় মহাসচিব মো: আজগর হোসেন, মানবাধিকার জোটের সভাপতি অধ্যাপক এনায়েত আলী বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল হামিদ পৃথক পৃথকভাবে ইনকিলাবকে অভিন্ন সুরে জানান, গ্যাস প্রকল্প দ্রæত বাস্তবায়ন করতে হবে এবং প্রকল্প বাতিল কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শিগগিরি কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।