বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পটিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা, এসকেএম নুর হোসেন : পানি নেই, টয়লেট নেই, সংস্কারবিহীন স্কুল ভবন, পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় পাঠদানে সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও এমআই (মোজাহেরুল ইসলাম) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
হাইদগাঁও সাতগাছিয়া দরবার শরীফে অবস্থিত উক্ত বিদ্যালয়টি ১৯৩৪ সালে বিশিষ্ট দানবীর মোজাহেরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। বাঁশের বেড়ায় নির্মিত বিদ্যালয়ে এক সময় শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করত। দরবারের লোকজন বিদ্যালয়টি দেখাশুনা করেন। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার বিদ্যালয়ের জন্য একটি তিন রুম বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করে দেন। এরপর থেকে বিদ্যালয়ের আর কোন সংস্কার হয়নি। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩১৫ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। সংস্কারবিহীন বিদ্যালয়ে বর্ষার সময় পানি চুপসে পড়ে পাঠদান ব্যাহত হয়। বিদ্যালয়ে টিউবওয়েল না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত। টয়লেট না থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
একজন মহিলা শিক্ষক জানান, বাড়ী থেকে তিনি টয়লেট সেরে আসেন। বিদ্যালয়ে টয়লেট সারতে হলে পাশর্^বর্তী মাদ্রাসায় যেতে হয়। প্রাক প্রাথমিক শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য মাদ্রাসার স্টোর রুম থেকে ধার করা রুমে অস্বস্তিকর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পড়াতে হয়। বিদ্যালয়ে দৈনন্দিন শিক্ষার্থীর বৃদ্ধির কথা চিন্তা করে সাতগাছিয়া দরবার শরীফের পীর আবু মো: মোস্তাক বিল্লাহ্ সুলতানপুরী ১৮ শতক ও মরহুম আরেফ বিল্লাহ্ সুলতানপুরী ১৪ শতক জায়গা ১৯৯২ সালে স্কুলের জন্য দানপত্র কবলা দেন। এ জায়গা এখনো বুঝে না পাওয়ায় বর্তমানে সরকারী নয়া ভবন বরাদ্দ পাচ্ছে না। ফলে তিনটি রুমে ঠাসাঠাসি করে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করতে হয়। এতে তিন দফায় ক্লাস নিতে হয়।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা উম্মে হানি বিলকিছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিদ্যালয়ের জায়গা বুঝে না পাওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের জন্য দু-তলাবিশিষ্ট ভবন ও ওয়াস বøক বরাদ্দ দিচ্ছে না। এছাড়াও অনেক সরকারী সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। জায়গা পেলে ভবন নির্মাণ, টিউবওয়েল স্থাপন, টয়লেট নির্মাণ, খেলা মাঠসহ ফুল বাগান সৃষ্টি করে বিদ্যালয়টি দৃষ্টি নন্দন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা যাবে। তিনি বলেন, পটিয়ার সংসদ সদস্য আলহাজ সামশুল হক চৌধুরীর প্রচেষ্টায় পটিয়া উপজেলায় ৯৫ ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নয়া ভবন নির্মিত হয়েছে। কিন্তু এ বিদ্যালয়টি জায়গার অভাবে এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত আছে। তিনি আরো জানান, দুই পীর সাহেবের দেয়া জায়গা পরিমাপ করে নির্ধারণ করা হলেও পীরের ওয়ারিশের একপক্ষ ছাড় দিলেও আরেকপক্ষ ছাড় দিচ্ছে না। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের এ সময়ে বিদ্যালয়টির নয়া ভবন না হলে ভবিষ্যতে আর সুযোগ পাওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে কয়েকজন অভিভাবক জানায়, পীর সাহেবদের অঢেল সম্পদ রয়েছে। বিদ্যালয়ের স্বার্থে দানপত্র জায়গা ছাড় দিয়ে ওয়ারিশদের আন্তরিক হতে হবে। এ ব্যাপারে আবু মো: মোস্তাক বিল্লাহ্র শাহজাদা মোতাছিম বিল্লাহ্ (সম্পদ) জানান, বড় শাহজাদা ফরমান উল্লাহ্ সাহেব জায়গা বুঝিয়ে দিলে তিনিও দেবেন। এ বিষয়ে দরবারের সাজ্জাদানশীন ফরমান উল্লাহ্ সুলতানপুরী থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ যে সময় জায়গা বুঝিয়ে নিতে চায়, তিনি জায়গা বুঝিয়ে দিতে প্রস্তুত। এ নিয়ে কোন প্রকার রাজনীতি করা উচিত নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।