গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় ও রফতানিমুখী জাহাজ নির্মাণ শিল্পখাতে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে গতকাল (শনিবার) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট রফতানিমুখী জাহাজ নির্মাণ শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ খাতের দক্ষতা বাড়াতে ২৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় করবে। ৩ বছর মেয়াদি এ কর্মসূচির আওতায় এই শিল্পে কর্মরত এবং নবীন দশ হাজার জনকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। শিল্পোদ্যোক্তা ও অর্থমন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, দক্ষতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জাহাজ নির্মাণ শিল্প আরও বিকশিত হবে। জাহাজ নির্মাণ ও রফতানি শিল্প বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।
চট্টগ্রামে উক্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং ‘স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামে’র ন্যাশনাল প্রজেক্ট ডাইরেক্টর জালাল আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, ‘স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামে’র এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর আব্দুর রউফ চৌধুরী। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি সালাহউদ্দীন কাসেম খান। অনুষ্ঠানে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন এসোসিয়েশন অব এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড শীপবিল্ডিং ইন্ডাষ্ট্রিজ অব বাংলাদেশের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জালাল আহমেদ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেষ্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় সেক্টরের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এডিবি’র একটি প্রকল্প। এই প্রথমবারের মতো ‘স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেষ্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ এসোসিয়েশন অব এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড শীপবিল্ডিং ইন্ডাষ্ট্রিজ অব বাংলাদেশের মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তহবিল প্রদান করলো। জাহাজ নির্মাতারা এই ত্রিবার্ষিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পর্কে অত্যন্ত আশাবাদী এবং তারা প্রত্যাশা করেন এর ফলে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের নৈপূণ্য আরও উৎকর্ষতা লাভ করবে। এর ফলে উৎপাদনশীলতা বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক পরিমÐলে এদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
প্রধান অতিথি বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে জাহাজ রফতানি শিল্পের জনবল উন্নতমানের কারিগরি প্রশিক্ষণ লাভ করবে এবং শিল্পের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে। এসোসিয়েশন অব এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড শীপবিল্ডিং ইন্ডাষ্ট্রিজ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন এই প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির ফলে জাহাজ নির্মাণ শিল্প বিশ্ববাজার থেকে আরও অর্ডার লাভে সমর্থ হবে মর্মে গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জানা গেছে, ৩ বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ১ম বছর ২ হাজার জন এবং ২য় ও ৩য় বছর যথাক্রমে ৫,৫০০ জন ও ২,৫০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। ‘স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেষ্টমেন্ট প্রোগ্রামে’ যে সব ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে সেগুলো হচ্ছে ওয়েল্ডিং এবং ফেবরিকেশন, মেশিনারি প্রতিস্থাপন, মেশিন টুলস্ অপারেশন, পাইপিং, ইলেট্রিক্যাল ও নেভিগেশন, ইকুইপম্যান্ট প্রতিস্থাপন, টেকনোলজি, পেইন্টিং, সিএনসি অপারেশন, কোয়ালিটি কন্ট্রোল।
রফতানি ক্ষেত্রে এদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভাবনাময় বিবেচনায় সরকার ইতিমধ্যে জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে থার্ষ্ট সেক্টর হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ একটি দ্রæত বিকাশমান শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। বিগত ৫ বছরে এ দেশ থেকে জার্মানি, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ইকুয়োডর, নিউজিল্যান্ড, তানজানিয়া, উগান্ডা, মোজাম্বিক এবং পাকিস্তানে জাহাজ রফতানি করা হয়েছে। বর্তমানে কেনিয়া, গাম্বিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ভারতের জন্য জাহাজ নির্মাণাধীন রয়েছে। অদ্যাবধি এই শিল্পখাতে জাহাজ রফতানির মাধ্যমে ১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।