পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইনকিলাব ডেস্ক : দেশের পুঁজিবাজারে বইছে বিনিয়োগমুখী হাওয়া। গত বছরের মাঝের দিক থেকেই পুঁজিবাজার একটু একটু করে ইতিবাচক ধারার ফিরতে শুরু করে। যা আজও বিদ্যমান রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিনিয়ত পুঁজিবাজারে বাড়ছে বিদেশী বিনিয়োগ-এর সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশি বিনিয়োগকারীরাও। বাজার ও পরিশোধিত মূলধনের হিসাবে জানুয়ারি মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশি এবং দেশি ব্যক্তি-শ্রেণির বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক ও উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বিনিয়োগ কিছুটা কমেছে। পাশাপাশি পরিশোধিত মূলধনের হিসাবেও একই সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক, উদ্যোক্তা ও সরকারের অংশের শেয়ার কমেছে।
বেশিরভাগ শেয়ারের দরবৃদ্ধির সুবিধা নিতে অধিকাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং কিছু উদ্যোক্তা-পরিচালক শেয়ার বিক্রি করেন। প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমার কারণ ব্যাখ্যায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রিকে চিহ্নিত করেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। গত নভেম্বর থেকে শেয়ারদর বৃদ্ধির কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের বিনিয়োগ আইনি সীমার মধ্যে রাখতে শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে। তারা বলছেন, বছর শেষে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা নেবেন এটাই স্বাভাবিক। তারা একদিকে শেয়ার বিক্রি করেন, অন্যদিকে কেনেন। এ ক্ষেত্রে ভারসাম্য না রাখলে বাজারের সার্বিক ভারসাম্য ঠিক থাকে না। গত জানুয়ারি শেষে তেমনটি দেখা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বিদ্যুৎ পরিচালন কোম্পানি ডেসকোর শেয়ার বিক্রি করায় মূলধনের হিসাবে সরকারের সার্বিক শেয়ার ধারণ কমলেও অন্য সরকারি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজার মূলধনের হিসাবে সরকারের অংশ বেড়েছে। জানুয়ারি শেষে তালিকাভুক্ত ২৯৪ কোম্পানির মধ্যে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসই সূত্রে প্রাপ্ত ২৮৫টিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির শেয়ার ধারণের হিসাব পর্যালোচনায় এ তথ্য মিলেছে।
ডিসেম্বর মাস শেষে বাজার মূলধনের হিসাবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের অংশ ছিল মোট ১৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। জানুয়ারি শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৯২ শতাংশে। অর্থাৎ, এক মাসের ব্যবধানে শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ কমেছে। যদিও এ সময়ে ২৯৪ কোম্পানির বাজার মূলধন ২৪ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা বা সাড়ে ৭ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
অন্যদিকে, জানুয়ারি শেষে ২৯৪ কোম্পানিতে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল মোটের ৫৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। সরকারি অংশ ছিল ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ ও ব্যক্তি বিনিয়োগ ছিল ১৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এ সময়ে ২৯৪ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৫৪ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত পরিশোধিত মূলধন মাত্র ৮৫ কোটি টাকা কম ছিল। ওই সময় প্রাতিষ্ঠানিক অংশ ছিল মোটের ১৯ দশমিক ০৩ শতাংশ। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রকৃত শেয়ার ধারণ কমেছে শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ।
গত জানুয়ারি শেষে পরিশোধিত মূলধনের হিসাবে ২৯৪ কোম্পানিতে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের অংশ ছিল ৪১ দশমিক ০১ শতাংশ। সরকারি অংশ ছিল ৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩ দশমিক ০৯ শতাংশ ও ব্যক্তি বিনিয়োগ ছিল ৩২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত জানুয়ারি পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ২৯৪ কোম্পানির মধ্যে ২৮৬টিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল। গত ডিসেম্বরের তুলনায় ১১৯টিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ও বেড়েছে ১১৮টিতে। বাকি ৪৯টিতে অপরিবর্তিত রয়েছে।
তবে যেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ বেড়েছে, সে বৃদ্ধির তুলনায় অন্যগুলোতে বিনিয়োগ হ্রাসের হার ছিল অনেকটাই বেশি।
এক মাসের ব্যবধানে একক কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ সর্বাধিক ২৮ শতাংশ কমেছে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সে। ডিসেম্বর শেষে বীমা কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ছিল ৪০ দশমিক ৩১ শতাংশ। জানুয়ারি শেষে তা নেমেছে সোয়া ১২ শতাংশে। প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণ হ্রাসে এর পরের অবস্থানে ছিল বিআইএফসি (১২.৯৩ শতাংশ), সিএমসি কামাল (১২.৭৭), সেন্ট্রাল ফার্মা (১১.১৩), প্রগতি ইন্স্যুরেন্স (১০.৩৩), এসিআই (৯.৪৭), সিএনএ টেক্সটাইল (৮.২২), ইসলামিক ইন্স্যুরেন্স (৭.৫৩), সালভো কেমিক্যাল (৭.৪২), বিবিএস (৭.৩৩), বিডি থাই (৭.০১)। এ ছাড়া ৫ থেকে প্রায় ৭ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার ধারণ কমেছে তুংহাই, আরামিট সিমেন্ট, ওরিয়ন ইনফিউশন্স, হামিদ ফেব্রিক্স, ইনটেক অনলাইন, জেনারেশন নেক্সট, সায়হাম কটন, আর্গন ডেনিম এবং তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজে। Ñওয়েবসাইট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।