Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাইটেকের আলু বীজে পাকুন্দিয়ার কৃষকের সর্বনাশ

| প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : হাইটেক এগ্রো প্রডাক্ট লিমিটেডের আলু বীজ রোপণ করে পাকুন্দিয়া উপজেলার কৃষকদের বারোটা বেজে গেছে। এ বীজ রোপণ করে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। আলু বীজ থেকে চারা না গজানোর কারণে চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছে তারা। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার হাপানিয়া, বড়বাড়ি, সৈয়দগাঁও, চরপাকুন্দিয়া, বীরপাকুন্দিয়া, লাউতলী, আঙ্গিয়াদী, চরকাওনা, চরটেকী ও বিশ্বনাথপুরসহ অনেক গ্রামের অসংখ্য কৃষকের আলু ক্ষেতের করুণ অবস্থা। তাদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। কথা হয় পাকুন্দিয়া বড়বাড়ি গ্রামের কৃষক কাঞ্চন মিয়ার সাথে। তিনি এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। আশা ছিল ১১০ মণ আলু পাবেন। কিন্তু আলু বীজ থেকে চারা না গজানোর কারণে তিনি খুবই চিন্তিত ও ক্ষিপ্ত। একই অবস্থা হাপানিয়া গ্রামের ছিদ্দিক হোসেন, সৈয়দগাঁওয়ের মুক্তার হোসেন, হাশেম উদ্দিন, সিরাজ উদ্দিন ও আলম, বড়বাড়ি গ্রামের মাইন উদ্দিন, লাউতলী গ্রামের মুকুল মিয়া, আঙ্গিয়াদী গ্রামের জালাল উদ্দিন, বীরপাকুন্দিয়া গ্রামের বাদল মিয়া, বিশ্বনাথপুর গ্রামের কামাল উদ্দিন, চরকাওনা গ্রামের ছন্দু মিয়া ও চরটেকী গ্রামের হান্নান মিয়াসহ অসংখ্য কৃষকের। ওই সকল গ্রামে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে তারা জানান, নভেম্বর মাসের দিকে আলু চাষ শুরু হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে আলু তাদের ঘরে আসে। এক বিঘা জমি চাষ করতে তাদের ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর এক বিঘা জমিতে ১১০ মণ পর্যন্ত আলু পাওয়া যায়। যা ৪শ থেকে ৫শ টাকা মণ দরে বিক্রি করলে তাদের ৪৫ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকা আয় হয়। কৃষকরা জানান, এ বছর যারা হাইটেক এগ্রো প্রডাক্ট লিমিটেডের আলু বীজ রোপণ করেছেন তাদের প্রত্যেকেরই একই অবস্থা। লাউতলী গ্রামের কৃষক মুকুল মিয়া জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে হাইটেক এগ্রো প্রডাক্ট লিমিটেডের আলু বীজ চাষ করেছেন। কিন্তু সমস্ত ক্ষেতজুড়ে মাত্র ২০ থেকে ২৫টি আলু চারা গজিয়েছে। এই অবস্থা দেখে কয়েকদিন অপেক্ষা করে তিনি ছুটে যান ডিলার শামছুল আলমের কাছে। তিনি কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেছেন বলে জানিয়েছেন এবং কোম্পানি থেকে লোকজন এসে জমিগুলো পরিদর্শন করবেন বলেও জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে চরপাকুন্দিয়া গ্রামের কৃষক জয়নালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি দুই বিঘা জমিতে হাইটেক কোম্পানির আলু চাষ করে তার দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত সকল কৃষকের ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। তারাকান্দি বাজারের ডিলার শামছুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক হাইটেক কোম্পানির কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম ও সুমন সাহেবকে জানিয়েছি। তারা বলেছেন, সরেজমিন এসে জমিগুলো দেখবেন। কিন্তু এখনও তারা আসেননি। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহাগ মিয়া বলেন, জমিগুলো আমি সরেজমিন দেখেছি। হাইটেক কোম্পানির আলু বীজ রোপণকারী কোনো কৃষকের ক্ষেতেই ১৫ থেকে ২০ ভাগের বেশি চারা গজায়নি। সারা মাঠজুড়েই হাইটেক কোম্পানির বীজ রোপণকারী সকল কৃষকদের একই অবস্থা। হাইটেক কোম্পানির পাকুন্দিয়া এলাকার বিক্রয় প্রতিনিধি মো. সুমন মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানিয়ে বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি। তারাই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ