Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং ব্যাপক সামরিকায়ন করছে : ওয়াশিংটন

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডারসহ লাইট হাউস, ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার, হেলিপ্যাড এবং অন্যান্য যোগাযোগ স্থাপনা

প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : দক্ষিণ চীন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জে রাডারসহ অন্যান্য সামরিক স্থাপনা বসানোর মাধ্যমে এ অঞ্চলে সামরিকায়ন করছে বেইজিং। ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস) এ কথা জানিয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করেছে। সিএসআইএসের এক প্রতিবেদনে দক্ষিণ চীন সাগরের ওই অঞ্চলের স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, চীন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডারসহ লাইট হাউস, ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার, হেলিপ্যাড এবং অন্যান্য যোগাযোগ স্থাপনা তৈরি করছে। এই প্রতিবেদনের মাত্র এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছিলেন, চীন তার কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল মোতায়েন করেছে। এর ফলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই অঞ্চল নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তীব্র হয়েছে। সিএসআইএস বলছে, কার্টেন রিফে চীনের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডার স্থাপনের মাধ্যমে মালাক্কা প্রণালি এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য চ্যানেল থেকে উত্তরদিকে আসা ভূমি ও আকাশে যে কোনো তৎপরতা পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা চীনের তুলনামূলকভাবে বেড়ে যাবে। সংস্থাটি আরো বলছে, অন্যদের মধ্যে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য এইচকিউ-৯ মিসাইল মোতায়েনের বিষয়টি খুবই উল্লেখযোগ্য। তবে এর মাধ্যমে দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক ভারসাম্য নষ্ট হবে না। কিন্তু নতুন রাডার স্থাপনের মাধ্যমে ওই অঞ্চলের ভূচিত্রের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে পারে। চীন বারবার বলে আসছে যে, কোন আক্রমণাত্মক উদ্দেশ্যে দক্ষিণ চীন সাগরকে ব্যবহার করা হবে না। কিন্তু ওয়াশিংটন তা আমলে না নেয়ার কারণে দুদেশের মধ্যে মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। যেহেতু চীন কার্যত এ দ্বীপাঞ্চলের সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে। সম্পদ সমৃদ্ধ দক্ষিণ চীন সাগরের অংশীদার বলে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ফিলিপাইনও দাবি করছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ফক্স নিউজ গত মঙ্গলবার রিপোর্ট যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গত কয়েক দিন ধরে চীনা শেনইয়াং জে-১১ এবং জেএইচ-৭ যুদ্ধবিমানগুলো উডি দ্বীপের উপর দিয়ে উড়ে যায়। যা বিতর্কিত দ্বীপপুঞ্জ হলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও তাইওয়ান এবং ভিয়েতনাম দ্বীপটির মালিকানা দাবি করে আসছে।
খবরে বলা হয়, মিসাইল ও রাডার স্থাপন করে দক্ষিণ চীন সাগরে আসলে সামরিকীকরণের পথে হাঁটছে চীন। পূর্ব এশিয়ায় কর্তৃত্ব স্থাপন করার লক্ষ্যেই দেশটি এমন করছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস এ মন্তব্য করেছেন। ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র বৈঠকের আগ মুহূর্তে তিনি এ মন্তব্য করেন। হ্যারি হ্যারিস বলেছেন, দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং সামরিকীকরণের পথে হাঁটছে। এ সাগরে তারা ধীরে ধীরে তাদের মজুত বৃদ্ধি করছে। আমি মনে করি, চীন আসলে পূর্ব এশিয়ায় কর্তৃত্ব করতে চাইছে। সম্প্রতি মার্কিন একটি সংবাদমাধ্যম দক্ষিণ চীন সাগরের স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দাবি করা হয়, সাগরটির উডি আইল্যান্ডে হঠাৎ করেই ভূমি থেকে আকাশে ও ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইল মজুত করতে শুরু করেছে চীন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, চীন এশিয়ার বড় সামরিক শক্তি এবং দিন দিন তা এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তি ও স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিনিদের বিনা চ্যালেঞ্জে দাপিয়ে বেড়ানোর দিন শেষ হয়ে আসছে। সে কারণে যুক্তরাষ্ট্রও তৎপর হয়ে উঠছে। চীনকে মোকাবিলার জন্য বহুদিন আগে থেকে তাদের নানা পরিকল্পনা ও কর্ম-তৎপরতা ছিল। এখন নতুন করে চীনকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে।
চীনকে ঘিরে ফেলার পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ২০২০ সালের মধ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতি শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগে বাড়ানো। বর্তমানে সারা বিশ্বে ২৯০টি যুদ্ধজাহাজের মধ্যে ১০৪টি মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি রয়েছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০২০ সালের মধ্যে এ অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৬৭টি। এপি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং ব্যাপক সামরিকায়ন করছে : ওয়াশিংটন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ