Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

টমেটো গ্রাম গাবতলীর আকন্দপাড়া

| প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আল আমিন মন্ডল, গাবতলী (বগুড়া) থেকে : বগুড়ার গাবতলীতে শীতকালীন হাইব্রিড টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। চলতি মৌসুমে টমেটো চাষে জমির পরিমাণ বেড়েছে তিনগুণ। ইতোমধ্যে আকন্দপাড়া টমেটো গ্রামে নারীদের কৃষিকাজে সহায়তার জন্য উদ্বোধন করা হয়েছে সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা কম্পোনেন্ট আইএফএমসি কৃষক সমবায় সমিতি লিমিটেডের কালেকশন পয়েন্ট। গাবতলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এবছরে উপজেলাতে ৩শ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেপালতলীতে ১৫০ হেক্টর ও কাগইলে ৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ করা হয়েছে। গত বছরে এ উপজেলায় টমেটোর চাষ হয়েছিল ২শ হেক্টর জমিতে। প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩শ মণ টমেটো ফলনের আশা করছেন কৃষি বিভাগ। বিশেষ করে নেপালতলী ও কাগইল এলাকায় শীতকালীন সবজি গ্রাম হওয়ায় এ দুটি এলাকায় প্রায় ৩ হাজার কৃষক টমেটো চাষ করে ইতোমধ্যে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ফলে এবছরে তাঁরা বিভিন্ন সবজিসহ টমেটো চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। তবে গত বছরে লাল তীর সীড লিমিটেডের হাইব্রিড টমেটো মিন্টু জাতের বীজের ফলন ভালো হওয়ায় এবছরে কৃষকরা হাইব্রিড টমেটো মিন্টু জাত বীজের চারা লাগিয়েছেন। নেপালতলী আকন্দপাড়া গ্রামের কৃষক সঞ্চয় মজুমদার জানান, হাইব্রিড মিন্টু টমেটোর বাম্পার ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় এবছরে এলাকার শত শত বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করা হয়েছে। ত্রিমোহনী গ্রামের টমেটো চাষি জয়নাল আবেদীন ও আকন্দপাড়া গ্রামের কৃষক গোবিন্দ, অভিজিৎ, শুশিল, জার্গত জানান, চলতি মৌসুমে তাদের গ্রামে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড মিন্টু টমেটোর চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আমরা প্রতি মণ টমেটো ৫শ ৮শত টাকায় বিক্রি করছি। এ ইউনিয়নে প্রায় কৃষকের এবছরে টমেটোর বাম্পার ফলন হওয়ায় ক্ষেতের টমেটো চুরির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন। এসব এলাকার কৃষকদের সবসময় মাঠে গিয়ে পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করতে গাবতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, লাল তীর সীড লিমিটেডের ডিভিশনাল ম্যানেজার সাদেকুর রহমান সাদিক, বগুড়া এরিয়া ম্যানেজার আনিছুর রহমান ও মাকেটিং অফিসার জাকির হোসেনকে দেখা গেছে। এছাড়াও টমেটো চাষে কৃষক যেন বেশি লাভবান হতে পারে সেজন্য ডিএই ডানিডা সহযোগিতায় গাবতলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণের উদ্যোগে আকন্দপাড়া আইসিএম কৃষক সমবায় সমিতি লিমিটেডের আইএফএমসি কৃষক মাঠ স্কুল কালেকশন পয়েন্ট চালু করা হয়েছে। এখানে প্রতিদিন প্রায় হাজারো নারী-পুরুষ কাজ করে থাকেন। কালেকশন পয়েন্টে কৃষকদের বাচাইকৃত টমেটো ট্রাক বোঝাই করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরাসরি বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে কৃষক সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন। কৃষকদের কালেকশন পয়েন্ট পরিদর্শন ও ভার্মি কম্পোস্ট সার (কেঁচো সার) উৎপাদন প্রযুক্তি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন আইএফএমসি প্রকল্প পরিচালক ড. আবু ওয়ালী রাগিব হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইএফএমসি উপ-প্রকল্প পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় রায়, এডিএই বগুড়া অঞ্চল হযরত আলী, ডিডিএই বগুড়া পুতুল চন্দ্র সরকার, রাজশাহী আঞ্চলিক আইএফএমসি কো-অর্ডিনেটর হাবিবুল হক, সিডিও আব্দুর রাজ্জাক, গাবতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার, রাকাব গাবতলী শাখা ব্যবস্থাপক মাহমুদুল আলম, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার, ইউপি চেয়ারম্যান লতিফুল বারী মিন্টু, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম। এ বিষয়ে গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার জানান, গত বছরের তুলনায় এবছরে গাবতলীতে টমেটোর চাষ প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরার্মশসহ মনিটরিং করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সোহরাব হোসেন জানান, নেপালতলী ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি জমিতে টমেটোর চাষ করা হয়েছে। বাম্পার ফলনে কৃষক লাভবান হবে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও জাহেদুর রহমান জাহিদ জানান, টমেটো চাষে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকেরা সবজি চাষের পাশাপাশি টমেটো চাষে ঝুঁকে পড়েছে। ফলে নেপালতলী ও কাগইল ইউনিয়নের প্রায় কৃষক এখন স্বাবলম্বী। রাকাব গাবতলী শাখা ব্যবস্থাপক মাহমুদুল আলম জানান, গ্রীন ব্যাকিং-এর আওতায় ভার্মি কম্পোস্ট সার (কেঁচো সার) উৎপাদন এবং অন্যান্য কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ