পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আফজাল বারী : বিএনপির পরবর্তী লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় করা। দলটির মতে, এ প্রত্যাশা পূরণের অন্যতম পন্থা নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। সকল প্রস্তুতি একই লক্ষ্যে। রাজনৈতিক মিত্রদের চলার পথ ও গতি একই।
দেশের সুশীল সমাজ ও দাতাগোষ্ঠীর মতামতে প্রাধান্য দিয়ে এবং ইতিবাচক রাজনীতির ধারা অব্যাহত রেখেই দাবিটি আদায় করতে চায় সংসদের বাইরে থাকা বৃহত্তর রাজনৈতিক জোটটি। এর জন্য নানামুখী ছক কষছে। ইতোমধ্যে বিএনপি প্রধান দলের নীতি-নির্ধারক ও জোটের শরিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ও দীর্ঘ আলোচনা করেছেন।
বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের একাধিক নীতি-নির্ধারক জানান, সংবিধানে ‘সহায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বল সরকার দলীয়দের কোর্টেই দিতে চায়। কারণ সংসদ তাদের; আইন পরিবর্তন-পরিবর্ধন শুধু সিদ্ধান্তের ব্যাপার। বর্তমান সরকার চাইলে ইসি গঠনে ১৩ দফার মতো যথা সময়ে সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন বেগম খালেদা জিয়া। জোট ও জোটের বাইরে বোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম ‘ সহায়ক সরকার’ এর রূপরেখা প্রণয়নের কাজ করছেন।
এদিকে নতুন নির্বাচন কমিশনের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অতীত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বাকিদের বেলায় ইতিবাচক। নতুন ইসি চাইলে বোদ্ধা মহলের মাধ্যমে পর্দার আড়াল থেকে সহযোগিতা করার প্রাক-প্রস্তুতি আছে বিএনপির। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক গুচ্ছ প্রস্তাব প্রস্তুত রেখেছে। তার আগে ইসির গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার জোটের বৈঠকে সহায়ক সরকারের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। বৈঠক শেষে জোটের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একজন বিতর্কিত সাবেক সরকারি কর্মকর্তার (সিইসি-নূরুল হুদা) নেতৃত্বে গঠিত কোনো প্রতিষ্ঠান নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। কাজেই এই সিইসির নেতৃত্বে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে না। এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পর নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আমাদের প্রস্তাবের যৌক্তিকতা আরো দৃঢ় হয়েছে।
আলাপকালে জোট নেতারা ইনকিলাবকে জানান, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার ধরন। ক্ষমতাসীনরা তখনো রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলে; কমিশন যত নিরপেক্ষই হোক অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা ইসির পক্ষে সম্ভব হবে না। মন্ত্রী-এমপি, প্রশাসনে দলবাজ কর্তারা বহাল থাকবেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, প্রার্থীরা রাষ্ট্রীয় প্রটোকলসহ সব ধরনের সুবিধা নিয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকবেন সে পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করাটা কি সম্ভব? এমন প্রশ্ন রাখেন নেতারা। আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, আবারো সেই ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জ্বালাও-পোড়াও, রক্তারক্তি, লাশের মিছিল হবে। তাই খেলার মাঠ সমান করতে অবশ্যই ক্ষমতাসীনদের রাষ্ট্র ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
গত ১৮ নভেম্বরে নতুন ইসি গঠনে ১৩ দফা প্রস্তাব উত্থাপনের সময় ‘সহায়ক সরকার’ গঠনের প্রস্তাব বা পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
সহায়ক সরকারের যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ইসি গঠনই যথেষ্ট নয়। কমিশনকে সর্বাত্মক প্রশাসনিক ও লজিস্টিক সহযোগিতা প্রদান এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। দেশবাসীর প্রত্যাশিত নির্বাচন উপহার দিতে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রয়োজন বলে দাবি করেন বিএনপি প্রধান।
১৩ দফার আংশিক আমলে নিয়ে ইতোমধ্যে ইসি গঠন করা হয়েছে। সামনে সহায়ক সরকারের দাবি। এ দাবি আদায়ে সরকারের প্রতি চতুর্মুখী চাপ সৃষ্টি করতে সর্বাত্ম প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। সাথে-পাশে আছে মিত্র দলগুলোও। ইতোমধ্যে বিএনপি প্রধান দলের নীতি-নির্ধারক ও জোটের শরিকদের নিয়ে সিরিজ বৈঠক ও দীর্ঘ আলোচনা করেছেন।
২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ ইবরাহিম ইনকিলাবকে বলেন, নবগঠিত কমিশন সর্বাঙ্গীনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রশ্নবিদ্ধ। অতএব এই কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করা কষ্টকর অসাধ্য হতে পারে।
তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন করতেই হবে এবং গ্রহণযোগ্যও বাঞ্ছনীয়। তাই প্রশ্নবিদ্ধ কমিশনের সহায়ক শক্তি হিসেবে নির্বাচনকালীন নির্বাচনবান্ধক একটি সরকার অতীব জরুরি। কারণ দৈনন্দিন কার্যপরিচালনাকারী সরকার ও নির্বাচনকালীন সরকারের মধ্যে লক্ষ্যবস্তুগত এবং গুণগত পার্থক্য রয়েছে। এজন্যই ২০ দলীয় জোট নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’-এর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করছে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, সরকার সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছে। সর্বজন প্রসংশিত হলেও এই ব্যবস্থায় তারা ফিরবে না। সংবিধানের দোহাই দিচ্ছে। তাই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ২০ দলীয় জোট নেত্রী ‘সহায়ক সরকার’ ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছেন। যথাযথ সময়ে তিনি সহায়ক সরকারের রূপরেখা দিবেন। কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ইসি নিয়ে ১৩ দফা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ২০ দল ইতিবাচক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে তাই প্রস্তাবগুলো জাতির সামনে তুলে ধরছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।