বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ আর মাত্র কয়েক মাস। দ্রæত চলছে স¤প্রসারিত সড়কের উন্নয়ন কাজ। দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে মীরসরাই-নারায়ণহাট তথা ফটিকছড়ি সংযোগ সড়কের। মীরসরাই পৌরসদরের উপর দিয়ে যাওয়া জনগুরুত্বপূর্ণ মীরসরাই-ফটিকছড়ি সংযোগ সড়কটি দীর্ঘ কয়েক যুগ জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে থাকলেও অবশেষে এই সড়কটি দুই উপজেলাবাসীর উন্নয়ন ও অগ্রগতির দ্বার উন্মোচন করে সম্ভাবনাময় আগামীদিনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা হয়ে উঠছে। তবে পাশাপাশি ধারণ ক্ষমতার বাইরে ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করে সড়কটি সুরক্ষার দাবীও জানায় এলাকাবাসী।
স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পার হতে যাচ্ছে, কিন্তু পাহাড়ী সর্পিল আঁকাবাঁকা প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ দুই উপজেলার এই গুরুত্ব বহনকারী মীরসরাই টু ফটিকছড়ির নারায়ণহাট সড়কটি ছিল অবহেলিত। অথচ এই সড়ককে কেন্দ্র করে দ্ইু উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলে গত এক যুগে গড়ে উঠেছে নানান বসতি, বেকার যুবকদের উদ্যোগে নানান ফলদ, বনজ ও মৎস্য খামার, নানা শ্রেণীর নতুন সমাজ, কয়েকটি হাট ও গ্রাম সৃজনও হয়েছে পাহাড়ী অঞ্চলে।
মীরসরাই সদর থেকে অন্ততঃ ৭ কিলোমিটার পূর্ব থেকে শুরু করে ১০ কিমি পর্যন্ত পাহাড়ী এই সব জনপদ যথাক্রমে গোলটিলা, ছয়বাইয়া, ঝরঝরি হাট, শেষছরা, বান্দেরপাগ নামক এলাকায় কেউ গড়ে তুলছে পর্যটন স্পট, কেউ বা ক্ষেত-খামার, কেউ ঘরবাড়ি, দোকানপাট। ইতিমধ্যে সোলার দ্বারাই আলো জ্বলছে গহীন পাহাড়ে। এখানকার মানুষের নেই বিদ্যুত, পানি, গ্যাস, মোবাইল নেটওয়ার্ক সুবিধা। নেই ভালো সড়ক যোগাযোগ। কিন্তু আছে অদম্য উদ্যোগ। তাই ওরা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবিরত সংগ্রাম। ৬০-এর দশকের পাকিস্তান আমলে সড়ক ও জনপথের সৃজন করা এই সড়কটি আজো পড়ে আছে অযতœ অবহেলায়। চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়া সত্তে¡ও বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা কবলিত হবার পর ও জীবন যুদ্ধের প্রয়োজনে কিছু গাড়ীও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতো এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু দুই উপজেলাবাসীর এখন সুখবর হলো আর ঝুঁকি নয়। এখন স্বাভাবিক ভাবেই চলাচল করতে পারতো মিরসরাই-নারায়ণহাট-ফটিকছড়ি রুটের হাজার হাজার পারাপার হওয়া জনগণ। চট্টগ্রামের সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে এই সড়কের জন্য ১১ কোটি টাকা বরাদ্ধ করে গত ১ বছর পূর্ব থেকেই সমগ্র সড়কের পুনর্নির্মাণ কাজ চলছিল। প্রকল্প মেয়াদের আর মাত্র ৫ মাস বাকি। ইতিমধ্যে কাজও এগিয়ে যাচ্ছে দ্রæতগতিতে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইতিমধ্যে নারায়ণহাট থেকে শেষ ছরা বাজার হয়ে ঝরঝরি এলাকা পেরিয়ে ছয়বাইয়া ও গোলটিলা এলাকায় কার্পেটিং-এর জন্য প্রায়ই প্রস্তুত। ঝরঝরি পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সুপ্রশস্ত কার্পেটিংও প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে। বাকি ৭ কিলোমিটারও আগামী ২ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করে ফেলার টার্গেট করেই কাজ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানালেন প্রকল্প এলাকায় কর্মরত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেলিম এন্ড ব্রাদার্স-এর সুপারভাইজার মংচাই মারমা। সড়ক ও জনপথের তদারকি প্রকৌশলী মোহাম্মদ ওহাব বলেন, আমরা কাজের মান নিয়ে যথেষ্ট সচেষ্ট। তবুও যথাসময়ের আগেই এই সড়কের কাজ শেষ করায় আশাবাদী।
এই বিষয়ে সদ্য যোগদানকারী চট্টগ্রামের সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বলেন, দীর্ঘদিন পর দুই উপজেলাবাসীর উন্নয়ন অগ্রগতিতে সহায়ক এই সড়কটির উন্নয়ন কাজ শীঘ্রই শেষ করতে পারবো দেখে আমিও আনন্দিত। তিনি বলেন, সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হবার পর সড়কটি দীর্ঘসময়ের জন্য টেকসই করতে ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কিছু স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এই বিষয়ে মীরসরাই পৌরসদরের মেয়র গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই সড়কটির উন্নয়ন আমাদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল। তিনি বর্তমান সরকারকে সড়কটির উন্নয়নের বিষয়ে এগিয়ে আসায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পাশাপাশি নারায়ণহাট ও ফটিকছড়িবাসীকে এখন থেকে মীরসরাই পৌর সদর হয়েই ঢাকা- চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগের সুবিধায় স্বাগত জানান। পাশাপাশি এই রুট হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার সেতুবন্ধন হওয়া এই সড়কটির সুরক্ষার বিষয়েও সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। তিনি আরো বলেন, মীরসরাই-নারায়হাট-এর এই সংযোগ সড়কটির একটি বাড়তি বৈশিষ্ট্য হলো প্রায় ১৮ কিলোমিটার পাহাড়ী এই রাস্তার পাহাড়ী অংশে নেই কোন ব্রিজ বা কালভার্ট। তাই এই সড়কটি অবলীলায় ২ লেন সড়কে রূপান্তরিত করলে পার্বত্য খাগড়াছড়ি রুটের সাথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ সহজতর রুট হতে পারে। যা সড়ক বিভাগের জন্য আগামীদিনের সুবিবেচনা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।