পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের বন্ধুত্ব ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে
মহসিন মিলন, বেনাপোল থেকে : বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে ট্রানজিট চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া মোটরযান চুক্তি (বিবিআইএন) দেড় বছরেও আলোর মুখ দেখেনি।
যোগাযোগ ব্যবস্থায় এই চুক্তিকে ব্যবসায়ীরা সামনে আরেক এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিল তা অনেকটাই হোঁচট খেয়েছে। যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই চুক্তি বাস্তবায়নে যশোর-বেনাপোল সড়ক চার লেনে উন্নীতের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ট্রানজিটের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, চুক্তির আওতাভুক্ত চার দেশের মধ্যে একটি দেশ স্বাক্ষর না করায় কার্যক্রম থমকে রয়েছে। তবে তারা আশাবাদী, সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতায় এ চুক্তি একদিন বাস্তবায়ন হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সার্কভুক্ত পাশাপাশি চার দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপাল একে অপরের মধ্যে ব্যাপক বাণিজ্যিক চাহিদা রয়েছে। আছে নাগরিকদের ভ্রমণের আগ্রহও।
কিন্তু দেশ চারটির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ট্রানজিট সুবিধা না থাকায় বাণিজ্য সম্পাদনে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ লেগে যায়। বিষয়টি মাথায় রেখে চার দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরো উন্নয়নে সরকারপ্রধানরা ট্রানজিট চালুর সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৫ সালের ১৫ জুন এ লক্ষ্যে একটি খসড়া চুক্তি হয়। এরপর শুরু হয় চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া। ২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর চার দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সরেজমিন দেখতে সরকারি ও ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল ভারতের উড়িষ্যা প্রদেশ থেকে ২০টি মোটরকার নিয়ে র্যালি বের করে। সেখানে বাংলাদেশের ছয়জন, ভুটানের চার, নেপালের চার এবং ভারতের ৬৬ জন অংশগ্রহণ করেন। ১৮ দিনে চার হাজার ২২৩ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ শেষে কলকাতায় পৌঁছে ওই বছরের ২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যাত্রা শেষ হয়।
র্যালিতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্বে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নিরোধ চন্দ্র ম-ল, ভারতের চিফ কমিউনিকেশন অফিসার জগন্নাথিন সিজে, ভুটানের ফাইভ স্টার মেশিন গ্রিজের প্রধান নির্বাহী থিনলে ওয়াংচুক ও নেপালের নেতৃত্বে ছিলেন নেপাল অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান দাসারাথ রিসাল।
এছাড়া এ পথে বাণিজ্যিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর পরীক্ষামূলক ভারতের কলকাতা থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে একটি কার্গো ট্রাক (ডব্লিউ বি-১১বি-৯৫১৯) বেনাপোল বন্দর হয়ে আখাউড়া দিয়ে ভারতের আগরতলায় যায়। আগে কলকাতা থেকে পণ্যবাহী ট্রাকটি ভারত ভূখ-ের মধ্য দিয়ে আগরতলা পৌঁছতে এক হাজার ৫৫৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে তিন দিন সময় লাগত। কিন্তু বাংলাদেশ ভূখ- ব্যবহার করে ট্রাকটি আগরতলা পৌঁছতে ৫৫৯ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে মাত্র একদিন সময় লেগেছে। এতে করে সময়ের পাশাপাশি অর্থ ও সাশ্রয় হবে ব্যবসায়ীদের।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ল্যান্ডপোর্ট সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, ‘চার দেশের মধ্যে সড়কপথে পণ্যবাহী কার্গোর ট্রানজিট চুক্তি বাস্তবায়ন হলে তা বাণিজ্য সম্প্রসারণে বড় ভূমিকা রাখবে। এ নিয়ে আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সবকিছু প্রায় ঠিকঠাক থাকলেও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা অনেকটা হতাশার মধ্যে রয়েছি।’
বন্ধুত্ব ও বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে ট্রানজিট চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাই এগিয়ে আসবেন এমনটি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশ স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) ফয়জুর নাহার জানান, বুড়িমারি, তামাবিল, আখাউড়া ও বেনাপোল বন্দর দিয়ে ট্রানজিট চুক্তিতে চার দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনের সব প্রস্তুতি রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু চার দেশের মধ্যে কাগজ-কলমে কিছু আনুষ্ঠানিকতা অসম্পূর্ণ থাকায় গত দেড় বছরেও এ চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। শুধুমাত্র পরীক্ষামূলক একটি কার্গো ট্রাক ইতঃপূর্বে কলকাতা থেকে বেনাপোল বন্দর হয়ে ভারতের আগরতলা বন্দরে পণ্য পরিবহন করেছে বলে জানান তিনি।
যশোর সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল জানান, ‘চার দেশের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বেনাপোল সড়ক চার লেনে উন্নীত করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা সড়কটি চার লেনে করার প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠিয়েছি, যা শিগগিরই একনেকে পাস হবে বলে আমরা আশবাদী।’
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মালেক জানান, চুক্তি কার্যকর করতে হলে চার দেশের সম্মতি থাকতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল অনেক আগেই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে। কিন্তু ভুটানের পার্লামেন্টে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা এখন পর্যন্ত পাস না হওয়ায় কার্যক্রম থমকে আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।