পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পণ্য পরিবহনে ভারতের ওপর দিয়ে রেল সংযোগের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ও নেপাল, যা উঠে এসেছে মঙ্গলবার দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপেও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের জন্য রেল ট্রানজিটের আশ্বাস দিয়েছেন এবং ঢাকায় কর্মকর্তারা আশা করছেন খুব শিগগিরই ভারতের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের পর এর বাস্তবায়ন দেখা যাবে।
গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বেশ অগ্রগতি হয়েছে যার ফলে ইতোমধ্যেই নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আনার বিষয়ে একটি সরকারি সার্কুলার ভারত প্রকাশ করেছে। ‘তাই আশা করা যায় যে, পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার রেল সংযোগের বিষয়েও দ্রæতই ভারতীয় সার্কুলার হয়ে যাবে। আসলে বিষয়গুলো সবই এশিয়ান হাইওয়ে কিংবা ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ের অংশ হিসেবেই হচ্ছে, -বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের রেল যোগাযোগ আছে এবং নেপালেরও আছে। তারা হয়তো কিছুটা উন্নয়নের কাজ করছে। কিন্তু রুট প্রায় প্রস্তুতই আছে। তাই এখন চ’ড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে ভারতের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের পরই এবং সেটা পেলেই নেপাল থেকে পণ্য পরিবহন হতে পারে বাংলাদেশে।
দু প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপে রেল ট্রানজিট
নেপালের সঙ্গে প্রতিনিয়তই ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ছে বাংলাদেশের এবং একে আরও গতি দিতে দুই দেশই নানাভাবে চেষ্টা শুরু করছে যোগাযোগ বাড়ানোর। উভয় দেশের সরকারই গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছে ভারতকে নিয়ে একটি যোগাযোগ বলয় তৈরির জন্য। ঢাকায় কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের মংলা বন্দর ব্যবহার করতে বন্দর পর্যন্তই রেল সুবিধা চাইছে দেশটি, পাশাপাশি তাদের আগ্রহ আছে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার নিয়েও। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়েছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে টেলিফোনে কথোপকথনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালকে রেল ট্রানজিট দেয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।
রেল ট্রানজিট মানে কী বোঝানো হচ্ছে? কীভাবে হবে?
কর্মকর্তারা বলছেন বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তি হয়েছিলো ১৯৭৬ সালে যেখানে দু দেশের মধ্যে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ছয়টি রুটের কথা বলা হয়েছিলো। তবে সা¤প্রতিক কালে এর বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহনপুর রেলস্টেশনকে পণ্য পরিবহনর জন্য নতুন ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে চেয়ে আসছিল নেপাল। যেহেতু দু’দেশের মধ্যে ভারত, তাই ভারতের সম্মতির পর দশই আগস্ট ওই প্রস্তাবে সম্মতিও দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রস্তাবটির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন যে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহনপুর ও ভারতের সিঙ্গাবাদের মধ্যে যে রেলপথ আছে, তাতে যুক্ত হতে চায় নেপাল। অর্থাৎ আগের ট্রানজিট অ্যাগ্রিমেন্টের মধ্যেই রোহনপুর থেকে সিঙ্গাবাদ হয়ে নেপাল তার বীরগঞ্জ পর্যন্ত ট্রানজিট সুবিধা চেয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ওঠা এ প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ফলে এখন দুই দেশই রোহনপুর ও সিঙ্গাবাদের মাধ্যমে রেলপথে মালপত্র আনা-নেয়া করতে পারবে, বলছিলেন তিনি। যেহেতু ভারতের ওপর দিয়ে আসা-যাওয়া হবে তাই পুরো প্রক্রিয়ায় ভারতও জড়িত আছে বলে জানিয়েছিলেন মিস্টার ইসলাম।
কর্মকর্তারা বলছেন, ভারত হয়ে নেপালের বীরগঞ্জ পর্যন্ত এ রুট প্রায় ২১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। অথচ এখন বেনাপোল দিয়ে নেপালের বীরগঞ্জ পর্যন্ত পণ্য পরিবহনে প্রায় আটশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। আর বিরল-রাধিকাপুর দিয়ে এ দূরত্ব পাঁচশ কিলোমিটারেরও বেশি। নেপাল ইতোমধ্যেই ভারতীয় ভূখন্ডের ওপর তাদের রেলপথ ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, রোহানপুরের নতুন রুটে পরীক্ষামূলকভাবে পণ্য পরিবহন হয়ে গেছে ২০১৭ সালেই। তখন ৩৫ হাজার টন সারের চালান নেপালে নেয়া হয়েছিলো এই রুট দিয়ে। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান বলছেন, রোহনপুর পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশে রেললাইন প্রস্তুত আছে, এখন তাদের অংশে রেললাইন নিয়ে দ্রুততার সাথে কাজ করছে। ‘পণ্য পরিবহনের জন্য নেপাল অনেক দিন ধরেই এ সুবিধা চাইছিল। আমরা ধারণা করছি, তাদের দিক থেকে ২/৩ মাসের মধ্যে লাইন চ‚ড়ান্ত হয়ে যাবে ভারত সীমান্ত পর্যন্ত।
বাংলাদেশের কতটা লাভ?
গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, শুধু নেপালকে ভিত্তি করে চিন্তা করার সুযোগ নেই, বরং নেপাল ভারত বাংলাদেশ সব কিছু মিলে চিন্তা করতে হবে। ‘দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছাড়াও বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে নেপালের পণ্য তৃতীয় দেশে গেলে বা তৃতীয় দেশ থেকে আমদানি করলে তাতে বাংলাদেশ লাভবান হবে। পায়রা ও মংলা বন্দর মূলত নেপালকেই ব্যবহারের জন্যই দেয়া হবে। ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। রেলে পণ্য এনে বন্দরের মাধ্যমে অন্য দেশে গেলে বাংলাদেশেরই সুবিধা। আবার একই সাথে রেলপথেও রাজস্ব বাড়বে’।
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় পক্ষ থেকে নোটিফিকেশন জারির আগের ধাপ চলছে এখন। দু দেশের পণ্য পরিবহন থেকে ভারতও মাশুল পাবে। ‘সব মিলিয়ে এটুকু বলা যায় যে, আজ হোক কাল হোক বিলম্ব হলেও নেপালের জন্য ভারতের ওপর দিয়ে রেল ট্রানজিট বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ’, -বলছিলেন জনাব মোয়াজ্জেম। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।