Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সার্চ কমিটির কার্যক্রম গভীর পর্যবেক্ষণে বিএনপি

| প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কট্টর আ’লীগপন্থীদের দিয়ে ইসি হলে রাজপথে সরব হবে
আফজাল বারী : নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটির কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি। রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রস্তাবের আলোকে ইসি গঠন হলে তা মেনে নেবে। পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নতুন ইসিকে কিছু প্রস্তাবনা দেয়ার সিদ্ধান্ত দলটির। আর গতবারের মতো মেরুদ-হীন ও দলকানা ইসি গঠন করা হলে রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে সরব হবে বিএনপি। ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এমন আভাস দিয়েছেন।
২৫টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে পাওয়া যায় ১২৫টি নামের মধ্যে ২০ জনের শর্ট লিস্ট করেছে সার্চ কমিটি। ওই তালিকায় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবদুল করিম, শেখ ওয়াহিদ-উজ-জামান, মোল্লা ওয়াহিদউজ্জামান, সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ, শিক্ষাবিদ ড. তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক নির্বাচন কমিশন ও স্বাস্থ্য সচিব হুমায়ুন কবির, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শিক্ষাবিদ ড. সাদেকা হালিম, এলজিআরডি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মনজুর হোসেন, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ এমএ গফুর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) দানিয়েল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, এনবিআরের সাবেক সদস্য রাহেলা চৌধুরী, সাবেক গভর্নর খোরশেদ আলম, সাবেক সচিব ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী ও কমডোর (অব.) ওয়াহিদ চৌধুরী নাম রয়েছে বলে জানতে পেরেছে বিএনপি
এদের অধিকাংশের ব্যাপারে বিএনপির তেমন আপত্তি নেই। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে সবচেয়ে সুযোগ্যদের দিয়ে কমিটি করা হলে তাদের স্বাগত জানানোর পাশাপাশি নতুন ইসিকে সহযোগিতা করতে বিএনপি নানা উদ্যোগ নেবে।
বিএনপি সূত্র মতে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্দোলন করে দাবি আদায়ের বিষয়টি এখনই ভাবতে চায়না বিএনপি। কারণ  দুই দফা আন্দোলন করে বিএনপি সরকারকে নতুন নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে পারেনি বরং আন্দোলনে সহিংসতার কারণে সমালোচিত হয়েছে। সঙ্গত কারণে এখন সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে সমঝোতা ও আলোচনার বিষয়টি। তাই ঐ পথেই হাঁটছে। এছাড়া আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বিকল্পও নেই। সেজন্য যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ ইসি গঠনে ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন করার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে চাপ দিতে চাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এর কোনো কিছুই সম্ভব না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। তবে দলীয় অস্তিত্বের স্বার্থে কট্টর আয়ামীপন্থী ব্যক্তিদের দিয়ে ইসি গঠন করা হলে শান্তিপূর্ণ নিরীহ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি দলের পরবর্তী সব ধরনের কর্মসূচিতে নতুন ইসির বিরুদ্ধে বক্তব্য আসবে। আর ইসি’র নিরপেক্ষতা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও জানানো হবে। বিশেষ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা চাওয়া হবে।
অপর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন যেমন গঠন করা হোক না কেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নতুন ইসিকে কয়েকটি প্রস্তাব দিতে চায় বিএনপি। নির্বাচনের সময় প্রশাসনের নিরপেক্ষ অবস্থা, ইভিএম’র বিরোধিতা, দলবাজ কর্মকর্তাদের নির্বাচনী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না করা এমন কিছু প্রস্তাব দেয়া হবে, যাতে ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন করার ব্যাপারে চাপে থাকে। এরই মধ্যে দলের সিনিয়র কয়েকজন নেতা নতুন ইসিকে দেয়ার জন্য প্রস্তাবনার একটি খসড়া তৈরি করছেন। পাশাপাশি দলবাজ কর্মকর্তাদেরও একটি তালিকা করা হচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, সার্চ কমিটি বিএনপির মনঃপূত হয়নি। এরপরেও নিরপেক্ষ ইসি গঠনে আশা হারায়নি। কারণ, রাজনৈতিক দল এবং ও বিশিষ্ট নাগরিকরা যেসব প্রস্তাব দিয়েছে এর আলোকে ইসি গঠন হলে তা সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে। আর এখন পর্যন্ত সার্চ কমিটি যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তা ইতিবাচক। এখন দেখার বিষয় তারা আলোচনার আলোকে কাজ করে নাকি কারো ইশারায় কাজ করে।  
ইসি গঠন নিয়ে বিএনপির পরবর্তী ভাবনার বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সার্চ কমিটি নিয়ে শুরুতেই বিএনপি আপত্তি করেছে। এরপরেও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে নাম নেয়া এবং সমাজের সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনা করায় সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন হবে এমনটা আশা করা যায়। যদি এরপরেও বিতর্কিত কমিশন হয় কর্মসূচি দেয়া হবে।
স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে যে নাম নিয়েছে সেগুলো থেকেই ইসি গঠন হওয়া উচিত। নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করে বিতর্কিতদের ইসি গঠন করা হলে বিএনপি দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা ঠিক করবে।



 

Show all comments
  • PARVEZ PC CHOWDHURY ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৯:২০ এএম says : 0
    কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি । বিএনপি নেতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেই চলেছে । গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেই চলেছে । পর্যবেক্ষণ করেই চলেছে । পর্যবেক্ষণ করেই চলেছে । কাজ করতে পারেনি I কাজ করার হবে নাI নেতা কাজ করতে পারেনি, এমন আভাস দিয়েছেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি

১৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ