বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা : কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এখন তিনজন। ‘এক ঘরমে তিন পীর’ হওয়ায় এখন জেলার শিক্ষাকার্যক্রম ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনামুল হক ছুটিতে। ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ কে এম শাহজাহান সিদ্দিকী। অপরদিকে নীলফামারীর সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী গত ২৫ জানুয়ারি কুড়িগ্রামে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে যোগদান করে বসে আছেন। এ অবস্থায় শিক্ষক ও কর্মকর্তারা পড়েছেন বিপাকে। ফলে কার নির্দেশে চলবে অফিস, এ নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। চলছে রশি টানাটানি। শিক্ষক নেতা ও কর্মচারীদের মধ্যে শুরু হয়েছে গ্রæপিং। তিনটি গ্রæপ হয়ে তিনজনের দিকে ইউটার্ন নিচ্ছে সুযোগ-সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে।
অভিযোগ উঠেছে সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে কয়েকজন শিক্ষক এবং নানা অনিয়মের হোতা উচ্চমান সহকারী দবির উদ্দিন মোটা অংকের টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন স্বপন কুমার রায় চৌধুরীকে দায়িত্ব নিয়ে দিতে। তাহলেই দুর্নীতিবাজ শিক্ষক ও কর্মচারীদের হবে পোয়াবারো। কারণ ইতিপূর্বে স্বপন কুমার রায় চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বে থাকাকালীন শিক্ষা প্রশাসন ছিল এই সিন্ডিকেটের দখলে। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে প্রাক- প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কয়েক কোটি টাকা আয় করে এই সিন্ডিকেট। এছাড়া নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা, বদলি, ডিপুটেশন, পিটিআইয়ে মনোনয়নসহ বিভিন্ন কাজে লাখ লাখ টাকা লুটে নেয়। এ সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা দবির উদ্দিন ও শিক্ষক নারায়ণচন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ বিভাগীয় তদন্তে প্রমাণিত হয়। স্বপন কুমার রায় চৌধুরী অত্যন্ত চতুরতার সাথে ২০১৪ সালে তৎকালীন ডিপিইও আব্দুল কাদেরকে বাধ্য করেন ৬ মাসের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে সংযুক্তি নিতে। কারণ এ সময়ে এই সিন্ডিকেট স্বপন কুমার রায় চৌধুরীকে দিয়ে নিয়োগ ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করেন এবং অর্থের বিনিময়ে পদায়ন করেন। একইভাবে সৎ অফিসার হিসেবে পরিচিত আতাউর রহমান ডিপিইও হিসেবে কুড়িগ্রামে যোগদান করলেও চার্জ বুঝে পাননি। তিনি ৬ দিন অবস্থান করে অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। একইভাবে ২০১৫ সালের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আগে তৎকালীন ডিপিইও সাইদুজ্জামানকে বাধ্য করা হয় এক মাসের ছুটিতে যেতে। আর সিন্ডিকেটের পাতানো ছকে প্রতিবারে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব পান স্বপন কুমার রায় চৌধুরী।
ডিপিইও এনামুল হক বলেন, কুড়িগ্রামের হ-য-ব-র-ল শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। ফিরিয়ে আনা হয়েছে শৃঙ্খলা। তথাকথিত সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে ফিরে আসে সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ। এ সময় এই সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় আমার পদ শূন্য না করেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্বপন কুমার রায় চৌধুরীকে কুড়িগ্রামে সংযুক্ত করে শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করানো হয়েছে। এতে করে দুষ্ট লোকেরাই লাভবান হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে কুড়িগ্রাম জেলার প্রাথমিক শিক্ষার মান। শিক্ষক ও প্রশাসন বন্দী হবে চিহ্নিত ঐ সিন্ডিকেটের হাতে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ মেলে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।
স্বপন কুমার রায় চৌধুরী জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও মনগড়া। কারণ সরকার যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে তখন তা পালন করেছি। আমার বর্তমান বদলির আদেশ ভুল হলেও তা মন্ত্রণালয়ের বিষয়। উল্টো তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- ‘যারা অভিযোগ দিচ্ছে, তারা আমাকে অন্যত্র বদলি করে দিক’ আমার কোনো আপত্তি নেই।
অভিযুক্ত দবির উদ্দিনের মোবাইলে অনেকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে সন্ধ্যার দিকে তার ব্যবহৃত মোবাইল-০১৭১৮৭৮৯৯০ নম্বরটি বন্ধ করে রাখে। ফলে তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।