Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

রেকর্ড পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ পুুঁজিবাজারে

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কর্পোরেট রিপোর্টার : দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে রেকর্ড বিদেশি বিনিয়োগ পুুঁজিবাজারে। গত মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার লেনদেন করেছে ১ হাজার ৩৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকার। এর আগে কখনও এক মাসে এত টাকার শেয়ার লেনদেন করেনি বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের সদ্য জানুয়ারি মাসে ৬১১ কোটি ২৫ লাখ ২৭ হাজার ১৭২ টাকার শেয়ার কিনেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। অন্যদিকে ৪২৫ কোটি ১১ লাখ ৯৭ হাজার ৯৪০ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন তারা। এক্ষেত্রে শেয়ার বিক্রির চেয়ে কেনার পরিমাণ ১৮৬ কোটি ১৩ লাখ ২৯ হাজার ২৩৩ টাকা বেশি। অর্থাৎ গেল মাসে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিট বিনিয়োগ ১৮৬ কোটি টাকা। এর আগে গত ডিসেম্বর মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার লেনদেন করে ৯৭৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকার। ওই মাসটিতেও বিদেশিদের শেয়ার লেনদেনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এক মাসের ব্যবধানে জানুয়ারিতে এসে লেনদেনের সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল পুঁজিবাজার। সূত্র মতে, আস্থা সঙ্কট ও দরপতনের বৃত্ত থেকে অনেকটাই বেরিয়ে এসেছে দেশের শেয়ারবাজার। বেশ কিছুদিন ধরে অস্বাভাবিক উত্থান বা পতনের ঘটনা না ঘটায় বাজারের ওপর সব শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর আস্থা বেড়েছে। যার ইতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার লেনদেনে। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই শেয়ারবাজারে বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কম থাকায় তারা বেশ ক্রয় করেন। যার ধারাবাহিকতা সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারি মাসেও অব্যাহত ছিল। ফলে টানা ৫ মাস বিদেশিরা বাজার থেকে যে পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করেন বিক্রয় তার থেকে কম। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বছরভিত্তিক শেয়ার লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৬ সালজুড়ে বিদেশিরা ৮ হাজার ৭৭৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে। দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এটিও নতুন রেকর্ড। এর আগে কখনও এক বছরে বিদেশিরা এত টাকার শেয়ার লেনদেন করেনি। শুধু লেনদেন চিত্রে নয় ২০১৬ সালে বিদেশিদের শেয়ার ক্রয় ও বিক্রয়ের পার্থক্যও ছিল বেশ ইতিবাচক। বছরটিতে বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির থেকে ক্রয় বেশি হয়েছে ১ হাজার ৩৪০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। যা ২০১৫ সালে ছিল ১৮৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ২০১৬ সালে বিদেশিদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের (বিক্রয় থেকে ক্রয় বেশি) পার্থক্য বাড়ে ১ হাজার ১৫৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা বা ৭২২ শতাংশ। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ডিসেম্বর মাসে বিদেশিরা শেয়ারবাজার থেকে ৬৮০ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয় করেছেন। এর বিপরীতে বিক্রয় করেছেন ২৯৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাসটিতে বিদেশিরা শেয়ার বিক্রর থেকে ক্রয় বেশি করেছে ৩৮৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যা গত ২৭ মাস বা ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ ছিল। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির থেকে ক্রয় বেশি ছিল ৪২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। পরবর্তী ২৬ মাসে বিদেশিদের শেয়ার ক্রয় ও বিক্রয়ের ব্যবধান ৩০০ কোটি টাকা অতিক্রম করেনি। দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশিদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবধান (বিক্রির থেকে ক্রয় বেশি) সব থেকে বেশি হয় ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে। মাসটিতে বিক্রয় থেকে ক্রয় বেশি ছিল ৫৭২ কোটি ৮ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ৩৮৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। গত ২০১৬ সালে ৯ মাসে বিদেশিরা শেয়ার বিক্রয় থেকে ক্রয় বেশি করে। এরমধ্যে ডিসেম্বরের পরই অক্টোবরে ছিল সর্বোচ্চ ব্যবধান। মাসটিতে বিদেশিরা ৪৭৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয়ের বিপরীতে বিক্রয় করে ২৬১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিক্রয় থেকে ক্রয় বেশি হয় ২১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। এরপর নবেম্বর মাস। মাসটিতে বিদেশিরা ৪০৯ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয়ের বিপরীতে বিক্রয় করে ২৫৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকার। বিক্রয় থেকে ক্রয় বেশি হয় ১৫৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এছাড়া সেপ্টেম্বরে ১৪১ কোটি ৫৪ লাখ, জুলাইতে ৮ কোটি ৩০ লাখ, মে মাসে ১২২ কোটি ৪২ লাখ, এপ্রিলে ১৩৯ কোটি ৭৮ লাখ, মার্চে ১৪২ কোটি ৬৭ লাখ এবং ফেব্রæয়ারিতে ৯৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা শেয়ার বিক্রয় থেকে ক্রয় বেশি করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে নানা ধরনের সংস্কার হয়েছে। কাঠামোগত ও আইনগত উন্নতি হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বিএসইসিরও বাজার তদারকির সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বাজারের দিকে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। এ অবস্থায় বাজারে যেন কেউ কারসাজি করতে না পারে সে ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি বাজারে যেন কোনো শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে যেতে না পারে সেজন্য শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেকর্ড

৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ