মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটেন আগামী জুন মাসে ইইউ ইস্যুতে একটি গণভোটের আয়োজন করতে যাচ্ছে, সেহেতু ইউরোপ থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ বাস্তবতায় পরিণত হওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এটাকে বলা হচ্ছে ইইউ থেকে ব্রিটেনের এক্সিট বা সংক্ষেপে ব্রেক্সিট। বিশ্লেষকদের প্রশ্ন ইইউ-যুক্তরাজ্যের এ খেলায় তাহলে কে জিতবে? প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইউরোপের অন্যসব নেতাদের সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, যদি দেশটির স্বার্থ নিশ্চিত না হয় তাহলে তারা ইইউ ত্যাগ করবে। যদিও ক্যামেরন বলেছেন, তিনি ইইউ’র সাথেই থাকতে চান। কিন্তু বর্তমান নিয়ম অনুসারে না। অর্থাৎ ইইউকে যুক্তরাজ্যের শর্ত মেনে চলতে হবে, অন্যথায় না। কয়েকদিন আগে ক্যামেরন ব্রাসেল্স সফর করেছেন ইইউ সম্মেলনে নতুন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে চুক্তির উদ্দেশ্যে। তার দাবিগুলোর মধ্যে বেশ কিছু বিতর্কিত বিষয়ও জড়িত ছিল। তিনি ব্রিটেনের জন্য এমন কিছু বিশেষ সুবিধা দাবি করেন যেটা পূরণ করতে হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে তাদের মূল চুক্তিপত্রের নিয়মনীতি বদলাতে হবে।
ক্যামেরন তার সংস্কার প্রস্তাবে যে দাবি করেন সেগুলো হচ্ছে : আগামী চার বছরের মধ্যে ইউরোপের অন্য কোন দেশ থেকে ব্রিটেনে কোনো শরণার্থী প্রবেশ করতে পারবে না। ইউরোপের সবগুলো দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির জন্য ইইউর প্রচেষ্টা থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতে পারার ক্ষমতা দিতে হবে ব্রিটেনকে। ইউরোপের অন্য দেশগুলোর সাথে যে অর্থনৈতিক আদান-প্রদানের চল রয়েছে সেটা বন্ধ করার ক্ষমতা দিতে হবে। কারণ ব্রিটেনের অনেকে মনে করেন, এই আদান-প্রদানের কারণে তাদের ব্যবসার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু এই সংস্কার প্রস্তাবই সব না। এটা সার্বিক পরিস্থিতির একটা অংশ মাত্র। কারণ শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ইউরোপের সাথে থাকবে কিনা তার আসল ফয়সালা করবে জনগণ ভোট দিয়ে। কিন্তু যদি ভোটের ফলাফলে দেখা যায় ব্রিটেন আলাদা হয়ে যাচ্ছে তাহলে কি হবে? বলাই বাহুল্য যে সবার আগে প্রকট হয়ে পড়বে অর্থনৈতিক সমস্যা। এরপরই রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, অভিবাসন এবং ইউরোপ ও গোটা বিশ্বে ব্রিটেনের অবস্থান। এই বিচ্ছেদের ফলে ব্রিটেন এবং অন্য দেশগুলো সমানভাবে প্রতিকূলতার মুখে পড়বে। ইইউ গোটা ইউরোপে যৌথ নীতিমালা চালু করে যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমন্বয় সাধন করেছে সেই শৃঙ্খলা ব্যাহত হবে। তার সাথে যুক্ত কোটি মানুষের জীবনে এর প্রভাব পড়বে।
ইইউ বর্জনের সাম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে ইতোমধ্যেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীরা এবং বিনিয়োগকারীরা। ফলশ্রুতিতে ২০০৯ সালের পরে এই প্রথম এতোটা পতন ঘটেছে ব্রিটিশ মুদ্রা পাউন্ডের। ব্রিটেনের ন্যাশনাল ইনস্টিউট অব ইকনোমিক এন্ড সোশ্যাল রিসার্চে দেখা গেছে, ইইউ ত্যাগ করলে যুক্তরাজ্যের জিডিপি (বাৎসরিক গড় আয়) স্থায়ীভাবে কমে যাবে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ। কারণ যুক্তরাজ্যে বিদেশিরা আর সরাসরি বিনিয়োগ করবে না। তবে অনেক সমালোচকের মতে, ব্রেক্সিটকে যতটা ভয়াবহ মনে করা হচ্ছে ততটা ভয়াবহ এটা হবে না। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জটিলতায় না থেকে ইইউ ত্যাগ করলেই বরং ব্রিটেনের জন্য আখেরে ভালো হবে। যদিও ব্যাপারটা তত্ত্ব মতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে ততটা হবে না। স্বয়ং ব্রিটেনের ভেতরেই এটা মারাত্মক রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। প্রাথমিক জরিপে দেখা গেছে, ব্রেক্সিট ইস্যুতে ইতোমধ্যেই ব্রিটেন দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। অনেকে আবার ভুগছে সিদ্ধান্তহীনতায়। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিচ্ছেদের ফলে ইউরোপে যুক্তরাজ্যের প্রভাব এবং প্রতিপত্তি যেমন কমে যাবে, তেমনি সারা বিশ্বেও যুক্তরাজ্যের অবস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।