Inqilab Logo

শনিবার, ২৫ মে ২০২৪, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের রায় বাস্তবায়ন সরকারের দায়িত্ব : তেরেসা মে

ব্রেক্সিট বিল নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিতর্ক শুরু

| প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রেক্সিট কার্যকরের আলোচনা শুরু করতে একটি বিল নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিলে লিসবন চুক্তির ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্রেক্সিট কার্যকরের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র প্রতি আহ্বান জানানো হবে। এ ব্যাপারে তেরেসা মে বলেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। আমি মনে করি এখন এর বাস্তবায়ন সরকারের দায়িত্ব। দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (নোটিফিকেশন অব উইদড্রয়াল) নামের বিলটি নিয়ে নিয়ে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে দুই দিন ধরে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। দুই দিনের বিতর্ক শেষে বিলটি নিয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বিলটির পক্ষে থাকায় এটি পাস হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে দলীয় প্রধানের এ সিদ্ধান্তের বাইরে অবস্থান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন দলটির উল্লেখযোগ্যসংখ্যক এমপি। তারা এ বিলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এই বিলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের ছায়া মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন দুজন ছায়ামন্ত্রী। গত সপ্তাহে ছায়ামন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন নর্থ লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড এবং কিলবার্ন এলাকার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। নিজের পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, আমি আর্টিকেল ৫০-এর বাস্তবায়নের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করি। ফ্রন্টবেঞ্চে থেকে এর সঙ্গে খাপ খাওয়ানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
ব্রেক্সিট বিষয়কমন্ত্রী ডেভিস ডেভিস গত মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সে বিলটি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত করেন। এ সময় এমপিদের প্রতি তার স্পষ্ট বার্তা ছিল, যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়া উচিত কিনা কিংবা কিভাবে এটা করা উচিত- এটি সে বিষয়ে কোনও বিল নয়। এটা শুধু ইতোমধ্যে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়। ইতোমধ্যে গৃহীত সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার কোনও সুযোগ এখানে নেই। আমরা যুক্তরাজ্যের মানুষের কাছে জানতে চেয়েছি, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যেতে চান কিনা; তারা ইইউ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা এখন এই গণভোটের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছি। জনগণের ইচ্ছার প্রতি আমরা সম্মান দেখিয়ে যাবো। গত সোমবার আয়াল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। তিনি বলেন, জনগণের প্রতি আমাদের বার্তা অত্যন্ত স্পষ্ট। গত বছরের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যের মানুষ ভোট দিয়েছেন। তারা একটি গণভোটে রায় দিয়েছেন। এই ভোটের মাধ্যমে তারা কথা বলেছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। তেরেসা মে বলেন, আশা করি, আর্টিকেল ৫০ বিলের দিকে তাকালে মানুষ বুঝতে পারবেন এটি খুব সহজ একটা সিদ্ধান্ত। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা ছিল, আর্টিকেল ৫০ অনুযায়ী পার্লামেন্ট সদস্যদের অনুমোদন ছাড়াই তিনি বেক্সিট কার্যকরের আলোচনা শুরু করতে পারবেন। তবে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেটি অসম্ভব হয়ে পড়ে। এতে ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বিষয়টি উপস্থাপন করে পার্লামেন্টের সম্মতি নেওয়ার কথা বলা হয়।
যুক্তরাজ্যের লিবারেল ডেমোক্র্যাটস এবং স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি এই বিলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বিলটির পক্ষ নেওয়ায় সরকার শেষ পর্যন্ত এটি পাস করতে সক্ষম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ঘোষণার পর নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টিতেও বিদ্রোহের মুখে পড়েন। আর লেবার পার্টির অনেক এমপি-ই প্রকাশ্যে দলীয় প্রধানের অবস্থানের বিপরীতে এ বিলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। বিতর্কের পর ভোটাভুটিতে বিলটি যদি সরকারের অনুকূলে যায়, তাহলে আগামী সপ্তাহে এটি হাউস অব কমন্সে ফেরত পাঠানো হবে। সেখানে বিরোধী দলগুলো এতে সংশোধনী আনার চেষ্টা করবে। এরপর বিলটি নিয়ে বিতর্ক এবং এটি অনুমোদনের জন্য হাউস অব লর্ডসে পাঠানো হবে। হাউস অব লর্ডস এটি সংশোধনের পরামর্শ দিতে পারবে। দ্য টাইমস-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য সরকার আগামী মার্চে ইউরোপীয় নেতাদের সম্মেলনে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরুর জন্য আইন পাস করতে আগ্রহী। বিবিসি, রয়টার্স, গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রেক্সিট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ