Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরীক্ষার হলে কেন্দ্র সচিব ছাড়া কেউ ফোন নিয়ে ঢুকতে পারবেন না-সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা কেন্দ্রে কেন্দ্র সচিব ছাড়া কেউই ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে কেন্দ্র সচিবের ফোন নিয়ে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও সেটি স্মার্টফোন হতে পারবে না। এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে গতকাল (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যতবড় ক্ষমতাধর ব্যক্তিই হোক না কেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে কেউই মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। কেবল কেন্দ্র সচিব যোগাযোগের জন্য একটি ফিচার ফোন (ছবি তোলা যায় না এমন ফোন) নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি পাবেন। তিনি বলেন, কেন্দ্র সচিবের অনুমতি ছাড়া পরীক্ষার্থীর বাইরে অন্য কেউ কেন্দ্রের সীমানায় প্রবেশ করতে পারবেন না। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আজকাল টেলিফোন নিয়ে গেলে ফটো তুলে সেই ছবি বাইরে পাঠিয়ে দেয়া যায়। সেজন্য আমরা বলেছি শুধু কেন্দ্র সচিব জরুরি যোগাযোগের প্রয়োজনে ফোন নিতে পারবেন। এর বাইরে কেউ ফোন নিতে পারবেন না। যেটা দিয়ে ফটো তোলা যায় না ওই ধরনের ফোন নিয়ে যাবেন। কারণ তার কাজই হলো ইনফরমেশন আদান-প্রদান করা। আমাদের জানানো যে এই হচ্ছে আর এই হচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমরা এটা স্ট্রিকলি বলে দিচ্ছি কোনো শিক্ষক কোনো টেলিফোন পরীক্ষা কেন্দ্রে নিতে পারবেন না। যদি কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী মোবাইল ফোন নিয়ে যান অথবা যেগুলো অ্যালাও করা আছে যেমন কিছু ক্যালকুলেটর ওগুলো ছাড়া অন্য কোনো ডিভাইস নিয়ে যান, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা আবেদন জানাচ্ছি দয়া করে কোনো শিক্ষক পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় মোবাইল ফোন নিয়ে যাবেন না।
এবার পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে নাহিদ বলেন, গত চার বছরে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ন্ত্রণে এনেছি। গোয়েন্দা সংস্থা, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কাজ করা হচ্ছে। বিজি প্রেসে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে জড়িত অনেককে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং গ্রেফতারও করা হয়েছে। ফলে এখন অনেকটাই এই জালিয়াতি কমে গেছে। তিনি বলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা বলেছে, বিভিন্ন শিক্ষকদের মাধ্যমে সাজেশন করে একটি প্রশ্নপত্র বানিয়ে তা বিক্রি করা হয়। পাঁচ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ওই ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি হয়। এর মধ্যে কখনো কখনো পাঁচটি পর্যন্ত প্রশ্নও মিলে যায়। এজন্য তারা বলে তাদের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, যারা বলে প্রশ্ন বিক্রি করছে তারা ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করে, আসল প্রশ্ন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বছরজুড়ে যা পড়াশোনা করেছে তাই দিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ বলেন, পরীক্ষার সময় অহেতুক প্রশ্নপত্রের পেছনে না ছুটে প্রস্তুতি অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা চলবে ২ মার্চ পর্যন্ত। এছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষা ৪ মার্চ থেকে শুরু হয়ে চলবে ১১ মার্চ পর্যন্ত। প্রতি বছর ১ ফেব্রæয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ বছর ওইদিন সরস্বতী পূজার কারণে এবার ২ ফেব্রুয়ারি এ পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সময়সূচি অনুযায়ী, ২রা ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত তত্ত¡ীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৪ মার্চ ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও সকালের পরীক্ষা ১০ থেকে ১টা এবং বিকালের পরীক্ষা ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থীকে খাতা দেয়া হবে পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে। ফলাফল প্রকাশ করা হবে ৬০ দিনের মধ্যে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবারের পরীক্ষায় মোট ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ১০ হাজার ৫০১ জন এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৭৬ হাজার ১১২ জন। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের তুলনায় এ বছর এক লাখ ৩৫ হাজার ৯০ জন শিক্ষার্থী বেশি পরীক্ষা দেবেন। এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা বেড়েছে ৬৭ হাজার ৫৬৮ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা বেড়েছে ৬৭ হাজার ৫২২ জন। মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২২৫টি, কেন্দ্র বেড়েছে ৯৩টি। এবার বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ লাখ ২২ হাজার ২৮৭ জন। গত বছরে তুলনায় এবার বিজ্ঞানে শিক্ষার্থী বেড়েছে ৪৪ হাজার ৩১৭ জন। এ বছর থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা নামে দুটি নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, এবার আটটি সাধারণ বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৯০০ জন। মাদরাসা বোর্ডে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬০১ জন এবং কারিগরি ভোকেশনাল ১ লাখ ৪ হাজার ২১২ জন রয়েছে। এছাড়া বিদেশি আটটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৪৪৬ জন্য পরীক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, অন্যান্য বারের মতো এবারও প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্যরা ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় পাবে। এছাড়াও প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক/অভিভাবক/সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা প্রদানের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে নাহিদ বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবে কান দেবেন না। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে নজরদারি থাকবে মনিটরিং কমিটির। শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষা বোর্ডসমূহের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা সম্ভব হবে।



 

Show all comments
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৮:১৩ এএম says : 0
    আমি আপনার সাথে একমত
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরীক্ষা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ