Inqilab Logo

শনিবার, ২২ জুন ২০২৪, ০৮ আষাঢ় ১৪৩১, ১৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

হজের খরচ বাড়ল

| প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এ বছর ১,২৭,১৯৮ জন হজ পালন করবেন
বিশেষ সংবাদদাতা : সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার খরচ গতবারের তুলনায় ১৪ থেকে ২১ হাজার টাকা বাড়ছে এবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি-২০১৭’ এবং ‘হজ প্যাকেজ-২০১৭’ এর খসড়ায় অনুমোদন দেয়া হয়। চলতি বছর ১,২৭,১৯৮ জন বাংলাদেশী হজ পালন করবেন। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ১,১৭,১৯৮ জন এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার বাংলাদেশী পবিত্র হজ পালন করবেন। গত বছর সরকারিভাবে ১০ হাজার এবং বেসরকারিভাবে ৯১ হাজার ৭৫৮ জন হজে গিয়েছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের সামনে এবারের হজ প্যাকেজের তথ্য তুলে ধরেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথম প্যাকেজে হজ পালনে আগ্রহী প্রতিজনের খরচ পড়বে ৩,৮১,৫০৮ টাকা এবং দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ পড়বে জন প্রতি ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পবিত্র হজ পালনে প্রতিজনের অপরিহার্য সর্বনিম্ন খরচ ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। গত বছর প্যাকেজ-১ এ ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এ ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা নির্ধারিত ছিল। এই হিসেবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার হজে যাওয়ার মৌলিক খরচ বেড়েছে এক হাজার ৯৬ টাকা। এই ‘মৌলিক’ খরচের সঙ্গে সউদী আরবে বাড়িভাড়া, খাওয়া-দাওয়া, কোরবানিসহ অন্যান্য খরচ হজ এজেন্সিগুলো যোগ করবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সুবিধার ধরন অনুযায়ী সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে টাকার অংকে হেরফের হবে।
খরচ বাড়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে শফিউল আলম বলেন, অনেকগুলো আইটেমের মধ্যে খরচ বেড়ে গেছে। সউদী রিয়ালের দাম বেড়েছে, ডলারের দাম বেড়েছে, বাড়ি ভাড়াও একটু বেড়েছে; সব মিলিয়েই খরচ কিছুটা বেড়েছে। এ বছর নিট বিমান ভাড়া দেড় হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবার সব হজযাত্রীকে বাধ্যতামূলকভাবে এমআরপি পাসপোর্ট নিতে হবে। প্রত্যেক হজ এজেন্সিকে কমপক্ষে ১৫০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজযাত্রী পাঠানো অনুমতি দেয়া হবে। একটি বিমান তিনটি হজ এজেন্সির হাজী এবং তিনজন মোয়াল্লেমকে পাঠাতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলম বলেন, কাউকে সরাসরি কোরবানীর পশু কেনার অনুমতি দেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনার হাজীদেরকে অবশ্যই মক্কা এবং মদিনায় বাড়ি ভাড়া করতে হবে। কোরবানির জন্য ৫০০ সউদী রিয়াল সউদী একটি ব্যাংকে জমা দিতে হবে, তারাই কোরবানি করে দেবে। আর বাড়ি ভাড়া, খাওয়াসহ অন্যান্য খরচ ই-পেমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। তিনি বলেন, হাজীদেরকে সউদী সরকার নিয়োজিত ক্যাটারিং কোম্পানির মাধ্যমে খাদ্য সংগ্রহ করতে হবে। তাদেরকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রান্না করে খাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে না।
যৌতুকের জন্য আত্মহত্যার প্ররোচনায় ১৪ বছর সাজা
যৌতুকের জন্য আত্মহত্যার প্ররোচনায় ১৪ বছরের জেল, আর নির্যাতন করে গুরুতর জখম করলে যাবজ্জীবন সাজার বিধান রেখে নতুন আইন করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকার। গতকাল  মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘যৌতুক নিরোধ আইন-২০১৭’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের সামনে এই খসড়ার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে জানান, ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন পরে তিন দফা সংশোধন করা হয়েছিল। এবার সব মিলিয়ে এই নতুন আইন হচ্ছে, যাতে যৌতুকের সংজ্ঞাও বদলাচ্ছে। কোনো এক পক্ষের (বর বা কনে) পিতা-মাতা বা ব্যক্তি অন্য পক্ষের কাছে কোনো কিছু দাবি করলে এতদিন তা যৌতুক হিসেবে গণ্য হত। সংশোধিত আইনে যৌতুকের সংজ্ঞা বদলে বর বা বরের পিতা-মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিয়েতে জড়িত বরপক্ষের অন্য কোনো ব্যক্তির কোনো কিছু দাবি করাকে বোঝানো হচ্ছে। এর ব্যাখ্যায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বরপক্ষকেই আসামিভুক্ত করা হয়েছে, কারণ বরপক্ষই যৌতুক নেয়। কনেপক্ষ যৌতুক নেয় এমন উদাহরণ নেই।
১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনে যৌতুক দাবি ও লেনদেনের শাস্তি নির্দিষ্ট করা থাকলেও যৌতুক চেয়ে নির্যাতনের শাস্তির বিষয়ে কিছু বলা ছিল না। যৌতুকের জন্য আত্মহত্যার প্ররোচনা বা অঙ্গহানি করলে প্রস্তাবিত আইনে ‘কঠোর শাস্তির বিধান’ যুক্ত করা হয়েছে বলে জানান সচিব।   আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। জরিমানার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। মারাত্মক জখম করার জন্য ১২ বছর সশ্রম কারাদ-, সেই সঙ্গে অর্থদন্ডের বিধান করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ আইনের খসড়া করার সময় যৌতুকের জন্য আত্মহত্যার প্ররোচনার শাস্তি মৃত্যুদন্ড রাখার সুপারিশ করলেও শেষ সময়ে তা কমিয়ে এনে মন্ত্রিসভায় তোলা হয়।  
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, যৌতুকের জন্য সাধারণ জখম করলে এক থেকে তিন বছরের কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে খসড়ায়। ভিকটিমের ক্ষতি বিবেচনায় অর্থদন্ডসহ আমৃত্যু ভরণপোষণ দেয়ার রায়ও আদালত দিতে পারবে।
যৌতুকের লেনদেন বা সহযোগিতার জন্য এক থেকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান থাকছে নতুন আইনে। আগের আইনে এই অপরাধে পাঁচ বছর কারাদান্ডের কথা বলা থাকলেও জরিমানার পরিমাণ নির্দিষ্ট করা ছিল না।
যৌতুক নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ বা মামলা করলে তাও নতুন আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্য এক বছরের কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড দেয়া যাবে বলে শফিউল আলম জানান।
অনুমতি ছাড়া ইয়ার্ড স্থাপন- জাহাজ ভাঙলে জেল-জরিমানা
অনুমতি না নিয়ে ইয়ার্ড স্থাপন, জাহাজ আমদানি ও ভাঙার ক্ষেত্রে জেল-জরিমানার বিধান রেখে একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠকে ‘বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন, ২০১৭’ এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে জাহাজ ভাঙার শিল্প রয়েছে। এটিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাব করা হয়েছে। কোন জায়গায় হবে তার জন্য জোন ঘোষণা করা হবে। সরকারের অনুমতি নিয়ে ইয়ার্ড স্থাপন, ইয়ার্ডের মধ্যেই নির্দিষ্ট জোনের মধ্যে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ অর্থাৎ জাহাজ ভাঙার কাজ করা হবে।
তিনি বলেন, এটার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন এবং কনভেনশন প্রতিপালন করতে হবে।এ বিষয়গুলো দেখাশোনা করার জন্য একটি বোর্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় মনোনীত একজন অতিরিক্ত সচিব বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, চট্টগ্রাম বন্দর, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সরকার মনোনীত জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের মালিক পক্ষের দু’জন প্রতিনিধি এবং বোর্ডের মহাপরিচালকসহ সদস্য হবেন মোট ১১ জন।
আইনে শাস্তির উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া ইয়ার্ড স্থাপন করলে অনধিক দুই বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা বা সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। এছাড়া অনাপত্তি সনদ ব্যতিরেকে জাহাজ আমদানি এবং ছাড়পত্র ছাড়া জাহাজ কূলে নিয়ে এসে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ করলে দুই বছরের কারাদ- বা ১০ লাখ টাকা বা সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। জোনের বাইরে কেউ ইয়ার্ড পরিচালনা করলে দুই বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা বা সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। আর জাল সনদ দিয়ে কোনো সুবিধা আদায় করলে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানা হবে ।
আইনে আটক করার ক্ষমতা রাখা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন অপরাধ সংগঠন বা সংগঠনের উদ্দেশ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ড, জাহাজ ও মালামাল আটক করা যাবে।
পানির পরিমিত ব্যবহারে ক্ষুদ্র সেচ নীতিমালা অনুমোদন
পানি সম্পদের পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে এলাকাভিত্তিক সেচ ব্যবস্থাকে সুপারভিশনের মাধ্যমে সিস্টেমে আনতে একটি নীতিমালার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠকে সমন্বিত ক্ষুদ্রসেচ নীতিমালা-২০১৬ এর খসড়ার অনুমোদর দেয়া হয়।  
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যমান পানি সম্পদের পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত করা, সেচ কাজে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভূ-উপরিস্থ ও ভূ-গর্ভস্থ পানি সম্পদের উন্নয়ন করা, পানি সম্পদদের এফিশিয়েন্ট ব্যবহারের উদ্দেশ্য নিয়ে এই নীতিমালা করা হয়েছে। এলাকাভিত্তিক আলাদা সেচ ব্যবস্থাকে একটু সিস্টেমে আনার জন্য দু’টি কমিটি করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১৬ জন এবং জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মিলে ১৬ জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা সুপারভিশন করবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
নেত্রকোনা ও জামালপুরে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়
নতুন বিভাগ ময়মনসিংহের দুই জেলা নেত্রকোনা ও জামালপুরে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে সরকার। এ আইনের আলোকে প্রধানমন্ত্রীর নামে নেত্রকোনায় হবে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়। আর জামালপুরে প্রধানমন্ত্রীর মায়ের নামে হবে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। নতুন দুটি বিশ্ববিদ্যালয় হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা হবে ৪০টি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৭’ এবং ‘শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৭’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। ভেটিং শেষে আইনগুলো চূড়ান্ত হবে।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় বেসরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজকে পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হবে। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজের ক্যাম্পাসে নয় একর জমি রয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নেত্রকোনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সেখানে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রথমে সেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা ভাবা হলেও পরে ‘জেনারেল’ বিশ্ববিদ্যালয় করার সিদ্ধান্ত হয়।
তাছাড়া মন্ত্রিসভায় ভারতের সঙ্গে ‘ইন্টার এজেন্সি এগ্রিমেন্ট বিটুইন গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিপ (জিসিএনইপি), ডিপার্টমেন্ট অব এটমিক এনার্জি, গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া এন্ড বাংলাদেশ এটমিক এনার্জি কমিশন (বিএইসি), মিনিস্ট্রি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ অন কো-অপারেশন রিগার্ডিং নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্পাদিত হতে যাওয়া চুক্তির খসড়াও অনুমোদন দেয়া হয়।
মন্ত্রিসভায় ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত হতে যাওয়া আরেকটি চুক্তি ‘এ্যারেঞ্জমেন্ট বিটুইন দ্য এটমিক এনার্জি রেগুলেটরি বোর্ড (এইআরবি) অব দ্য গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া এন্ড বাংলাদেশ এটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অথরিটি (বিএইআরএ), দ্য গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ ফর দ্য এক্সেজ অব টেকনিক্যাল ইনফরমেশন এ্যান্ড কো-অপারেশন ইন দ্য রেগুলেশন অব নিউক্লিয়ার সেফটি এ্যান্ড রেডিয়েশন প্রটেকশন’ শীর্ষক চুক্তির খসড়াও অনুমোদন দেয়া হয়।
গত তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০১৬) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে ৬৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
সচিব বলেন, আজকের বৈঠকে সরকারের ২০১৬ এবং ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে মন্ত্রিসভার বৈঠক সম্পর্কিত কার্যক্রমের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়। গত তিনমাসে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক হয়েছে ১০টি। এসব বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ১১৬টি, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে ৮০টি বা ৬৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ, বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন আছে ৩৬টি বা ৩১ দশমিক ০৩ শতাংশ, কর্মকৌশল ও নীতি অনুমোদন হয়েছে ৫টি, সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে ৮টি ও সংসদে আইন পাস হয়েছে ১১টির। এছাড়া গত বছরের একই সময়ে ১১টি বৈঠক হয়। বৈঠকগুলোতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৯৯টি, বাস্তবায়ন হয়েছিল ৬৫টি, বাস্তবায়নাধীন ছিল ৩৪টি, নীতি বা কর্মকৌশল অনুমোদন হয়েছিল ৩টি, সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল ১টি এবং সংসদে আইন পাস হয়েছিল ১০টির।
বৈঠকের শুরুতে ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর মাহফুজুল বারীর মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মাহফুজুল বারী ৭৫ বছর বয়সে গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্মারক ডাকটিকিট ও খাম উন্মোচন ঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আন্তর্জাতিক শুল্ক দিবস-২০১৭ উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড উন্মোচন করেছেন। গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এই ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড উন্মোচন করেন। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ উপলক্ষে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম এবং ৫ টাকা মূল্যমানের ডাটা কার্ড ইস্যু করেছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী ও বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক প্রভাস চন্দ্র সাহা উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল থেকেই ঢাকার জিপিও থেকে স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড বিক্রি শুরু হযেছে, যা দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘরসমূহেও পাওয়া যাবে। দেশের চারটি জিপিওতে বিশেষ সীলমোহরযুক্ত খাম বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা উদ্বোধনী খাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
প্রতি বছর ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস
সোনালি আঁশ পাটের ঐতিহ্য ফেরাতে বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে প্রতি বছর ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস উদযাপনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। ওই দিবসটিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারি হওয়া পরিপত্রের ‘খ’ ক্রমিকে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।



 

Show all comments
  • জে এস মিজানুর রহমান ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১:৪৯ পিএম says : 0
    হযের খরচ বাড়ছে আর ভারতের ভিসার খরচ কমছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হজ

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ