নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : আইএসএসএফ আন্তর্জাতিক সলিডারিটি আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণ জয়ের স্বপ্ন জিইয়ে রাখলেন বাংলাদেশের দুই নারী তীরন্দাজ হীরামনি ও বন্যা আক্তার। ইয়ুথ অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয় করা তামিমুল ইসলাম এবং রিও অলিম্পিকে খেলে আসা শ্যামলী রায় যেখানে ব্যর্থ, সেখানে সফল হিরামনি ও বন্যা। গতকাল মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতায় মহিলাদের রিকার্ভ ইভেন্টের সেমিফাইনালে হীরামনি ৬-২ সেট পয়েন্টে স্বদেশী রাদিয়া আক্তার শাপলাকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেন। অন্যদিকে মহিলাদের কম্পাউন্ড ইভেন্টের সেমিতে স্বদেশী শ্যামলী রায়কে ১৩০-১২৯ পয়েন্টে হারান বন্যা। আজ দু’জনেই নামবেন স্বর্ণ জয়ের লড়াইয়ে। হীরামনির প্রতিপক্ষ আজারবাইজানের রামোজামোভা। এবং বন্যা লড়বেন ইরাকের ফাতিমাহর বিপক্ষে।
খুব অল্প সময়ে তীর ধনুক হাতে নেন বন্যা ও হীরামনি।
এক সময় কাবাডি আর ফুটবলে প্রতি আসক্তি ছিলো ফরিদপুরের মেয়ে বন্যা আক্তারের। এ দুই ডিসিপ্লিনে খেলেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফরিদপুরের এক কোচের উৎসাহে শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালে তীর ধনুক হাতে আনসারে আসেন ট্রায়াল দিতে। বন্যা বলেন, ‘ওই স্যার আমাকে বলেছিলেন, আনসারে চলো কপালে থাকলে তীর ধনুক হাতেই ক্যারিয়ার গড়তে পারবে। আমি বুঝেই ওঠতে পারছিলাম না, কিভাবে আরচ্যারি খেলবো। নাম শুনলেও আগে কখনোই তীর ধনুক হাতে নেওয়া হয়নি। অবাক হলেও সত্যি, ট্রায়ালে আমি টিকে গেলাম। আর এখন আমি স্বর্ণপদকের জন্য লড়বো।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটাই আমার ক্যারিয়ারের প্রথম কোন আন্তর্জাতিক আসর। এবং প্রথম আন্তর্জাতিক ফাইনাল। আমার সৌভাগ্য এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি বলে। কোচ থেকে শুরু করে সবাই আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তারাই আমাকে আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছেন। ভাবতেই পরিনি এতটা আসতে পারবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’ ফাইনাল নিয়ে বন্যা বলেন, ‘অনুশীলনও খুব একটা ভালো হয়নি। তাই আশাবাদি ছিলাম না। র্যাংকিংয়ে তিন নম্বরে ছিলাম। তবুও সকাল থেকে শেষ তীর পর্যন্তও এতটা প্রত্যাশা ছিল না। সেমিফাইনাল ম্যাচে স্বদেশী শ্যামলী রায়কে হারিয়ে আতœবিশ্বাসী হয়ে উঠি। আশাকরি ফাইনালেও সাফল্য পাবো।’
অন্যদিকে হীরামনি ২০১০ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হয়ে জুনিয়র পর্যায়ে খেলা শুরু করা সময়েই ডাক পান জাতীয় দলে। সাফ গেমসেও খেলেছেন। কিন্তু সেরা সাফল্য বলতে অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে ব্রোঞ্জপদক জয়েই আটকে ছিল তার সাফল্য। মিশ্র দ্বৈতে তিনি ওই পদক জিতেছিলেন। তবে এবার আর ব্রোঞ্জ নয়, আজ স্বর্ণপদক লড়াইয়ে নামবেন হীরামনি। তাই রীতিমতো উচ্ছ¡সিত তিনি। সেমিতে সাফল্য পেয়ে হীরামনি বলেন, ‘এটাই প্রথম কোন আন্তর্জাতিক আসরের ফাইনালে খেলা আমার। আসলে রিকার্ভ এককের কোয়ার্টার ফাইনালে ভুটানের অলিম্পিয়ানের সঙ্গে সমান তালে লড়েছি আমি। সেখানে জিতেই সেমিফাইনালে ওঠেছি। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আমার প্রতিপক্ষ ছিল রাদিয়া আক্তার শাপলা। তাকে হারিয়েই ফাইনালে জায়গা পেয়েছি।’ তবে স্বদেশী শাপলার বিপক্ষে খেলার সময় বেশ চাপেই নাকি ছিলেন ঠাকুরগাঁও হরিপুরের মেয়ে হীরামনি। শেষে ওই চাপকে সামলেই জয় করেন সেট। ফাইনাল নিয়ে হীরামনি বলেন, ‘নিজের সর্বোচ্চটা দিইে চেষ্টা করবো দেশকে স্বর্ণপদক এনে দিতে। আশাকরি সবার দোয়া ও নিজের সেরা পারফরমেন্সে সাফল্য তুলে আনবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।